ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

জার্মানিতে যেন এক টুকরো বাংলাদেশ 

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪
জার্মানিতে যেন এক টুকরো বাংলাদেশ 

দেশ থেকে প্রায় আট হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থান করেও জার্মান প্রবাসীরা শীতের পিঠার স্বাদ পেতে, একুশে ফেব্রুয়ারিকে স্মরণ করতে এতটুকু কার্পণ্য করেনি। জার্মানির বন্দরনগরী হামবুর্গে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শীতকালীন পিঠা উৎসব।

আয়োজনের মূল আকর্ষণ ছিল বর্ণমালা-প্রবাসে বাংলা শেখার স্কুলের প্রথম সমাবর্তন।

জার্মানিতে ১৯৭২ সালে নিবন্ধিত সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাংলাদেশ সমিতি এ. ফাও–এর উদ্যোগে হামবুর্গ শহরের হরনার ফ্রাইহাইট মিলনায়তনে গত রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জমজমাট এই উৎসবের আয়োজন করা হয়।  

মিলনায়তনে সাজানো ছিল হরেক স্বাদের পিঠা-পায়েসের পসরা। সবাই স্বাদ নিচ্ছেন পছন্দের পিঠার এদিকে মঞ্চে তখন শিল্পীকণ্ঠে গাইছেন একুশের চিরায়ত গান, আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি....অতিথিরাও সেই সুরে কণ্ঠ মিলিয়ে গাইছেন, ‘আমি কি ভুলিতে পারি...’

পিঠা উৎসবে বাহারি স্টলগুলোর মধ্যে ছিল বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত জার্মান সন্তানদের প্রজন্ম চত্বর, বর্ণমালা স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বর্ণমালার টং, হাসিনা মাহবুবের মেজবান, রহিমা আক্তারের শখের রান্না, তানিয়া আহমেদের সাথী'জ ডিলাইটস, লিপি হোসেনের রান্নাঘরের চা বিলাস এবং বাংলাদেশ সমিতির লাল-লাল-সবুজের আড্ডা।

চিতই পিঠা, নকশি পিঠা, ভাপা পিঠা, পাটি সাপটা, মালপোয়া কিছুই বাদ যায়নি এই আয়োজনে।  

এ ছাড়া শাড়ি-গহনা নিয়ে ফারজানা শওকত শাহ রীনের শাড়ি কথন বাই নিনিয়া স্টলেও মেলায় আগত অতিথিদের কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে।

দিন-রাতের এই আয়োজনটি সাজানো হয়েছিল তিনটি ভিন্ন ভিন্ন ভাগে। প্রথম ভাগে একুশের গান, ছড়া, কবিতা, চিঠিপত্র আর কথা মালা। সুমাইয়া ও শ্রাবণের যৌথ উপস্থাপনায় এতে স্থানীয় শিল্পীরা অংশ নেন।  

দ্বিতীয় পর্বে বাংলাদেশ সমিতি এ. ফাও–এর সভাপতি মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সহসভাপতি জাহিদ আল আমীন। সাধারণ সম্পাদক ইসমে আজম সমিতির নব নির্বাচিত কার্যকরী পরিষদের অভিষেক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।  

তৃতীয় তথা সমাপনীতে বর্ণমালা-প্রবাসে বাংলা শেখার স্কুলে দুই বছর বাংলা শেখার কোর্স সম্পন্ন করা প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়।  

বর্ণমালার পরিচালক রবিউল এইচ চৌধুরী ও সৈয়দ মারজান উল হাসানের উপস্থাপনায় সমাবর্তন বক্তারা জার্মানির বিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যসূচিতে বাংলা ভাষার অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান। পাশাপাশি জার্মানিতে একটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরেন। প্রবাসী ও অভিবাসী প্রজন্মকে বাংলা শেখানোর তাগিদে ২০২২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সমিতি এ. ফাও এর উদ্যোগে বর্ণমালা স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়।

বাংলা ভাষায় গল্প-আড্ডার সঙ্গে মজাদার রসনা বিলাসে পরিপূর্ণ ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। জার্মানিতে এমন ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন সবার কাছে  অনেক দিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানান প্রবাসী বাঙালিরা।

লেখক: জাহিদ আল আমীন, হামবুর্গ, জার্মানি

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।