ঢাকা, বুধবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ মে ২০২৪, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

তিনটি ধর্ষণ মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০২২
তিনটি ধর্ষণ মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন 

সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জে পৃথক তিনটি ধর্ষণ মামলার পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও দু’জনকে দুই মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) সকালে সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ রায় দেন।

এর মধ্যে তাহিরপুরে এনজিও কর্মীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের পর ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তারা হলেন তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের শাহ আরেফিন এলাকায় গত ২০১২ সালে কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ মামলায় জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের আলী নুরের ছেলে আনোয়ার হোসেন (২৭),শাহিদাবাদ গ্রামের সয়ফুল্লাহ শফিউল্লাহ (২৪),জাবেদ মিয়ার ছেলে ছাইদুর রহমান (২০) ও আব্দুল মজিদের ছেলে সফিকুল (২০)। তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। জরিমানার টাকা ভিকটিম ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাবেন।

এ মামলায় আবদুল আওয়ালের ছেলে সেলিমকে (১৮) খালাস দেন আদালত।  

ছাতক উপজেলার মোহনপুর গ্রামে ২০১২ সালের ১৭ মার্চ এক তরুণীকে অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করার মামলার আসামি ইকবাল হোসেনকে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা ভিকটিম ক্ষতিপূরণ হিনেবে পাবেন। ওই মামলায় আসামি ইকবাল হোসেন ও জয়নাল আবেদীনকে অপহরণের দায়ে ১৪ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া জয়নাল আবেদীনকে (৪০) ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।  

এছাড়া দিরাইয়ে চলন্ত বাসে তরুণীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় বাসচালক শহীদ মিয়াকে (২৫) পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। শহীদ সিলেট জেলার জালালাবাদ থানার মোল্লার গাঁও গ্রামের মৃত তৌফিক মিয়া ওরফে মইন্নার ছেলে।  

এ মামলায় ছাতক থানার কামরাঙ্গী গ্রামের হাবিব আহমেদের ছেলে রশিদ আহমেদের (৩২) বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাকে খালাস দেন আদালত। তিনি বাসটির হেলপার।

এ রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নান্টু রায়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ৩১ আগস্ট বিশ্বম্ভরপুরের এক এনজিও কর্মীকে মোটরসাইকেলে তুলে তাহিরপুর উপজেলার লাউড়েরগড় সীমান্তের শাহ আরেফিনের মাজার এলাকায় নিয়ে যান আনোয়ার হোসেন নামে এক যুবক। পরে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করলে সেই দৃশ্যটি স্থানীয় কয়েকজন দেখে ফেলেন। তারা আনোয়ার হোসেনকে বেঁধে রেখে ওই তরুণীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করেন। ধারণ করা ভিডিও পরে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।  

ভিকটিমের দায়ের করার মামলায় আসামি আনোয়ার হোসেন খোকন, শফি উল্লাহ, ছাইদুর রহমান ও শফিকুলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।

২০১০ সালের ২৬ ডিসেম্বর দুপুরে বাসে করে সিলেটের লামাকাজী থেকে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার যাচ্ছিলেন এক কলেজছাত্রী। পথে দিরাই পৌরসভার সুজানগর এলাকায় চালক ও হেলপার ওই কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ওই সময় মেয়েটি চলন্ত বাস থেকে লাফিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। এ ঘটনায় রোববার রাতেই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে বাসের চালক শহীদ মিয়া ও হেলপার রশিদ আহমদকে আসামি করে দিরাই থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। রায়ের সময় মামলার দুই আসামি বাসের চালক শহীদ মিয়া ও হেলপার রশিদ মিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।