ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

চেক ডিজঅনার মামলার সেই রায় স্থগিত চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২
চেক ডিজঅনার মামলার সেই রায় স্থগিত চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ

ঢাকা: চেক ডিজঅনার মামলায় কাউকে কারাগারে পাঠানো সংবিধান পরিপন্থি- হাইকোর্টের এমন অভিমত দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

আগামী মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের আদালতে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।



এ সংক্রান্ত কয়েকটি মামলা নিষ্পত্তির রায়ে ২৮ আগস্ট ওই অভিমত দিয়েছিলেন বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ।

পরে ওই রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করার কথা জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, কোনো ব্যক্তিকে তার ব্যক্তি স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন। আর নেগোসিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট (এনআই) অ্যাক্ট, ১৯৮১ এর ১৩৮ ধারায় চেক ডিজঅনার মামলায় ব্যক্তিকে কারাগারে বন্দী রাখা ব্যক্তির স্বাধীনতা হরণের শামিল।

আদালতে বাদীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আশরাফুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আশেক মমিন।

পরে আশেক মমিন জানান, এনআই অ্যাক্টের ১৩৮ ধারা সংশোধনের জন্য জাতীয় সংসদকে পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি অভিমত দিয়েছেন আদালত। সেখানে বলেছেন, এনআই অ্যাক্টের মামলায় বিশেষ করে চেক ডিজঅনারের মামলায় কাউকে জেলে পাঠানো সংবিধান পরিপন্থি।

আদালত ধারাটি সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত এসব মামলা নিষ্পত্তিতে একটি নীতিমালা করে দিয়েছেন। পূর্ণাঙ্গ রায়ে সেটি থাকবে বলেও জানিয়েছেন আদালত।

আদালত রায়ে বলেছেন, চেক ডিজঅনার মামলায় ব্যক্তিকে জেলে পাঠানো ইন্টারন্যাশনাল কভিনেন্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস চুক্তির ১১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি। বাংলাদেশ এ চুক্তিতে সইকারী দেশ।
সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশের চেক ডিজঅনার মামলার উদাহরণ দিয়ে আদালত বলেন, এসব দেশে এ মামলায় ব্যক্তিকে জেলে পাঠানোর বিধান নেই। এসব দেশে চেক ডিজঅনার মামলাকে দেওয়ানি প্রকৃতির মামলা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৮১ সালের এ আইনটি (বাংলাদেশ নেগোসিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট অ্যাক্ট)  ১৯৯৪ সালে দণ্ডবিধিতে সংযোজনের মাধ্যমে আধা-ফৌজদারি হিসেবে পরিণত করা হয়েছে।

আদালত পর্যবেক্ষণে আরও বলেন, চুক্তি শর্ত পূরণে ব্যর্থতার জন্য কোনো ব্যক্তিকে কারাগারে বন্দী রাখা যাবে না। চুক্তির শর্ত পূরণে ব্যর্থতার জন্য যদি ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানো হয় তাহলে অচিরেই বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ কারাগারে চলে যাবে। নিশ্চয়ই এমনটা কারো কাম্য নয়। তাই আদালত মনে করেন, আইনটির ১৩৮ ধারা দ্রুত সংশোধন করে কারাগারে পাঠানোর বিধান বাতিল করা দরকার।  
জাতীয় সংসদ দ্রুত এ ধারা সংশোধন করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন আদালত।

আরও পড়নু>>>চেক ডিজঅনার মামলায় জেলে পাঠানো সংবিধান পরিপন্থি

বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২২
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।