ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

আইন ও আদালত

বিদেশে খালেদার চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে রিট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২১
বিদেশে খালেদার চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে রিট

ঢাকা: সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে তথা বিদেশে নেওয়ার অনুমতির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ সোমবার (২০ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করেন।

মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) এ আবেদন শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।

জাতিসংঘের সার্বজনীন ঘোষণার আর্টিকেল ৩, ৫, ১১ ও ১৩(২), সংবিধানের ১১, ৩২ ও ৪৯ অনুচ্ছেদসহ ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) ধারা অনুসারে উন্নত চিকিৎসায় দণ্ডিত খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে নেওয়ার অনুমতির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।  
 
রিটে আইন সচিব, মন্ত্রী পরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্যসচিব, রাষ্ট্রপতির সচিবালয়ের সচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।

রোববারের (১৯ ডিসেম্বর) খবর অনুযায়ী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের মতোই আছে। তার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি বা অবনতি হয়নি।

তবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তার রক্তক্ষরণ থামানোর জন্য ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। ওষুধ বন্ধ করলেই রক্তক্ষরণ হচ্ছে।

সূত্র জানায়, শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) খালেদা জিয়ার শরীরের অনেকগুলো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নতুন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেবেন মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা।

এখন প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় দুবার মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা বৈঠকে বসছেন। স্বাস্থ্য পর্যালোচনা করে প্রতিদিনই ওষুধ দিচ্ছেন তারা।

বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের শরীরের বিভিন্ন প্যারামিটার নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। সেগুলো ওপরে উঠানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। কয়েক দিন ধরেই কমে যাচ্ছে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা। রক্ত কিংবা ওষুধ দিয়ে তার মাত্রা বাড়ানো হচ্ছে। অতিরিক্ত রক্তও আর দেওয়া যাচ্ছে না। এতে পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ বেড়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, বর্তমান চিকিৎসায় খালেদা জিয়ার সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কম। বরং তার শারীরিক অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে তার স্বাস্থ্যঝুঁকি ততই বেড়ে যাচ্ছে। এখন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু সরকার তাকে বিদেশে যেতে অনুমতি দিচ্ছে না। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।

গত ১৩ নভেম্বর খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তিনি লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান। এ হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন আহমেদ তালুকদারের নেতৃত্বে গঠিত ১০ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড তার চিকিৎসায় নিয়োজিত রয়েছেন।

গত ২৮ নভেম্বর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে মেডিক্যাল বোর্ডের অন্যতম চিকিৎসক ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী বলেন, খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। তার পরিপাকতন্ত্রে তিনবার রক্তক্ষরণ হয়েছে।

মেডিক্যাল বোর্ড দ্রুত খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর সুপারিশ করে বলেন, তার এ চিকিৎসা শুধু বিশ্বের তিনটি দেশেই সম্ভব। এখনই চিকিৎসা দিতে না পারলে খালেদা জিয়ার মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যাবে।

আরও পড়ুন...
** খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি নেই

বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২১
ইএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।