ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

নথি জালিয়াতি: অবসরপ্রাপ্ত কমোডর সালামকে গ্রেফতারের নির্দেশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১
নথি জালিয়াতি: অবসরপ্রাপ্ত কমোডর সালামকে গ্রেফতারের নির্দেশ

ঢাকা: একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ নিয়োগকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নথি জালিয়াতির ঘটনায় বরখাস্তকৃত কর্মচারী মো. রুবেলের জামিন প্রশ্নে রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে ছয় মাসের মধ্যে মামলার তদন্ত শেষ করতে দুদককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া মামলার আসামি অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদকে গ্রেফতারে পদক্ষেপ নিতে আইজিপিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশনা দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. কামরুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ভূঁইয়া।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, গত ১৭ জুন রুবেলকে কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) এ রুল শুনানি শেষ হয়। আজ রায়ে রুল খারিজ করে দিয়েছেন। অর্থাৎ তার জামিন আবেদন খারিজ। এছাড়া অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদকে দ্রূত গ্রেফতারে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। যদি তিনি দেশের বাইরে থাকেন তাহলে তার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ছয় মাসের মধ্যে মামলার তদন্ত শেষ করতে দুদককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মামলার বিবরণীতে জানা যায়, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদের জন্য ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এনামুল হক, বুয়েটের পুরঃকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফ ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নাম প্রস্তাব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নথি পাঠানো হয়। সেই নথি প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করা হলে তিনি অধ্যাপক ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন।

পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর প্রস্তুতি পর্বে নথিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমার কাছে গেলে তিনি ফোনে ছাত্রলীগের নেতা তরিকুলকে জানান যে, এম আবদুস সালাম আজাদ কোষাধ্যক্ষ হিসেবে অনুমোদন পাননি।  

এরপর ছাত্রলীগ নেতা তরিকুলের পরিকল্পনা অনুযায়ী কৌশলে নথিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বের করে ফরহাদ নামে একজনের হাতে তুলে দেন ফাতেমা। সেই নথিতে ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া টিক চিহ্নটি ‘টেম্পারিং’ করে সেখানে ক্রস চিহ্ন দেন তরিকুল। একইভাবে অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফের নামের পাশে ক্রস চিহ্ন দিয়ে এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন তিনি। পরে নথিটি রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে পাঠানো হয়।

ওই নথি হস্তান্তরের আগে ফাতেমা বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন এবং হস্তান্তরের পর আরেক দফায় তার ছেলের বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা নেন বলে মামলায় বলা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মোহাম্মদ রফিকুল আলম বাদী হয়ে গত বছরের ৫ মে এ বিষয়ে মামলা করেন। এ মামলায় ওই ছাত্রলীগ নেতাসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।

চার্জশিটভুক্ত আসামি মো. রুবেল প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ডেসপাস রাইটার। তার বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গায়। তাকে গত বছরের ১৯ মে গ্রেফতার করা হয়। পরে নিম্ন আদালতে জামিন খারিজের পর তিনি হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। হাইকোর্ট ১৭ জুন তার জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেন।

** প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নথি জালিয়াতির ঘটনা দুদককে তদন্তের নির্দেশ
** প্রধানমন্ত্রীর ন‌থি জা‌লিয়া‌তি, ত‌রিকু‌লের স্বীকা‌রো‌ক্তি


বাংলাদেশ সময়: ১৩১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১
ইএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।