ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

বাল্যবিয়ে: নেত্রকোনার দণ্ডিত ২ শিশুর মুক্তি চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০২১
বাল্যবিয়ে: নেত্রকোনার দণ্ডিত ২ শিশুর মুক্তি চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন

ঢাকা: নেত্রকোনায় বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ডিত দুই শিশুকে তাৎক্ষণিক মুক্তি দিতে স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ চেয়ে হাইকোর্টে লিখিত আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।
বুধবার (৪ আগস্ট) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে ই-মেইলযোগে এ আবেদন করেন আইনজীবী শিশির মনির।



বুধবার একটি জাতীয় দৈনিকে ‘বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনে দুই শিশুকে দণ্ড’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে এ আবেদন করেন আইনজীবী।

আবেদনে বলা হয়, এই রিপোর্ট পড়ে আমার কাছে মনে হয়েছে বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। The State vs. Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs, Government of Bangladesh and Ors, reported in 72 DLR 700 মামলায় সিদ্ধান্ত হয় যে, শিশু আইনের অধীন মোবাইল কোর্টের কোনো এখতিয়ার নেই। ফলে, অত্র সাজা এখতিয়ার বহির্ভূত।

আবেদনে আরও বলা হয়, ১৯৭২ সালের সুপ্রিম কোর্ট (হাইকোর্ট বিভাগ) রুলসের (সংশোধিত-২০১২ পর্যন্ত) ১১ ক অধ্যায়ের ১০ বিধি মোতাবেক এই চিঠি সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী আবেদন হিসেবে বিবেচনা করে পত্রিকার প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে উল্লেখিত শিশুদের তাৎক্ষণিক মুক্তির আদেশ দিতে বা ক্ষেত্রমতে উপযুক্ত আদেশ প্রদানে আদালতের একান্ত মর্জি হয়।  

পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনে দুই শিশুকে এক মাসের দণ্ডাদেশ দিয়েছেন নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুলতানা রাজিয়া।  
গত রোববার রাতে আটপাড়ায় সুলতানা রাজিয়া তার নিজ কার্যালয়ে ওই দণ্ডাদেশ দেন। একই সঙ্গে শিশু দুটিকে গাজীপুরে অবস্থিত শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে (বালক–বালিকা) পাঠানোর নির্দেশ দেন। শিশু দুটি গত মঙ্গলবার পর্যন্ত নেত্রকোনা জেলা কারাগারে ছিল।  

শিশু দুটির বাড়ি আটপাড়া উপজেলার দুওজ ইউনিয়নে। তাদের মধ্যে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েটির বয়স ১৫ বছর (জেএসসির নিবন্ধন কার্ড অনুযায়ী)। ছেলেটিও সমবয়সী।  

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার কারণে প্রায় দুই বছর ধরে তারা দুজন লেখাপড়ার পাশাপাশি ঢাকায় তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি নেয়। এ সময় উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্প্রতি মেয়েটি ছেলেটিকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু ছেলেটি তা প্রত্যাখ্যান করে। গত ঈদুল আজহায় তারা গ্রামের বাড়িতে আসে। এরপর বিয়ের দাবিতে মেয়েটি গত সপ্তাহে বুধবার রাত থেকে ছেলের বাড়িতে অবস্থান নেয়। নিরূপায় হয়ে গত রোববার সন্ধ্যায় উভয় পরিবার তাদের বিয়ের আয়োজন করে। বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা রাজিয়া সেখানে পুলিশ পাঠান। এরপর দুই জনকে তাঁর কার্যালয়ে এনে রাত আটটার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসান। বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন-২০১৭ অনুযায়ী, দুইজনকেই এক মাসের জন্য আটকাদেশ দিয়ে শিশু উন্নয়নকেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২১ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০২১
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।