ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

মধ্যরাতে পরীমনি ক্লাবে কেন, শুনানিতে আইনজীবীর প্রশ্ন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৫ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২১
মধ্যরাতে পরীমনি ক্লাবে কেন, শুনানিতে আইনজীবীর প্রশ্ন পরীমনি

ঢাকা: অভিনেত্রী পরীমনির রাত ১২টার পর ক্লাবে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আইনজীবী। ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাভার থানায় দায়ের করা মামলায় নাসির উদ্দিন মাহমুদ (৬৫) এবং তুহিন সিদ্দিকী অমির (৩৩) পক্ষে রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করতে গিয়ে এই প্রশ্ন তোলেন তাদের আইনজীবী।

বুধবার (২৩ জুন) শুনানি শেষে তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হাসান।  

পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা সাভার থানার ইন্সপেক্টর মো. কামাল হোসেন তাদের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়।

ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর শেখ হেমায়েত হোসেন রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন।  

তিনি বলেন, এজাহারে এই দুইজনের নাম আছে। ঘটনার সঙ্গে আরও অজ্ঞাতনামারা জড়িত আছেন। তাদের গ্রেফতারের লক্ষে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। আর আসামিরা এ অপরাধ থেকে মুক্তি পেলে সমাজে এ ধরনের অপরাধ আরও বেড়ে যাবে। সমাজকে এ ধরনের অপরাধ থেকে মুক্ত করতে তাদের বিচার হওয়া জরুরি।

এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আরেক আইনজীবী বলেন, পরীমনি স্বনামধন্য সেলিব্রেটি। আক্রমণ করার মূল উদ্দেশ্য ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে ধ্বংস করা। ইন্ডাস্ট্রিতে পরীমনির ভবিষ্যৎ ধূলিস্মাৎ করে দিছে।

এরপর নাসির উদ্দিন ও অমির পক্ষে ঢাকা বারের সভাপতি আব্দুল বাতেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মামুনসহ কয়েকজন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন শুনানি করেন।

শুনানিতে মিজানুর রহমান মামুন বলেন, বিষয়টা হলো ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কথা খাই না এমন। সেলিব্রেটি হলেই আমাকে রাত ১২টার পর ক্লাবে যেতে হবে কেন? এরকম হলে তো আরো অনেক কিছুই হতে পারে। ধর্ষণ বা হত্যাচেষ্টার মামলা হলে তো ডিএনএ, ফরেনসিক টেস্ট করা দরকার। তাছাড়া আজ যারা আসামি তারা কি কম সেলিব্রেটি। পরীমনি সেলিব্রেটি ভালো কথা, উনার জায়গায় উনি থাকুক। আমাদের বিরুদ্ধে যা হচ্ছে তা পুরোপুরি মিডিয়া ট্রায়াল। এর রেজাল্ট কি হবে আমরা জানি। ’

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে বনানীর একটি ক্লাবে গিয়ে ভাঙচুর করেছেন পরীমনি। সেলিব্রেটি হয়ে অন্যদের ভিকটিমাইজড করছেন তিনি। নাসির উদ্দিন এবং অমিও ভিকটিমাইজড।

আবদুল বাতেন বলেন, পরীমনি বাসা থেকে রওনা দিয়েছেন স্বেচ্ছায়। ১২টার পর তো ক্লাব বন্ধ হয়ে যায়। আর নাসির কেন তাকে রেপ করতে যাবেন। এজাহারে অমির বিরুদ্ধে কোনো বক্তব্য নাই। কেন তাকে রিমান্ডে পাঠাবেন।

তিনি বলেন, শাবানা, ববিতা, রোজিনাও নায়িকা ছিলেন। তাদের আমরা শ্রদ্ধা করি। তারা কোনো ক্লাবে যাননি। তিনি কেন রাত ১২টার পর ক্লাবে যাবেন। আসামিরা ভালো মানুষ। বিপদে পড়ে গেছেন। হয়রানি করতে মামলা দেওয়া হয়েছে। রিমান্ড বাতিল চেয়ে তাদের জামিন চাচ্ছি।

দুপক্ষের শুনানি শেষে নাসির উদ্দিন বলেন, আমার বয়স ৬৫। এজমাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছি। গত ৯ দিন ডিবির রিমান্ডে ছিলাম। এখন আবার আমাকে রিমান্ডে পাঠানো হলে মনে হয় না আর বাঁচবো।

তিনি বলেন, ছাত্র থেকে রাজনীতি করে আসছি। আমি একজন সমাজসেবক। তাছাড়া আমি উত্তরা ক্লাবের সভাপতি ছিলাম। সাভার বোট ক্লাবের সদস্য। বোট ক্লাব ভবন নির্মাণে আমিসহ কয়েকজন অবদান রেখেছি। এর আগে আমার বিরুদ্ধে আর কোনো অভিযোগ নাই। আমি কোনো ঝামেলায় ছিলাম না। দয়া করে রিমান্ড না দিয়ে আমাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।

এরপর আদালত প্রত্যেকের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।  

এর আগে ১৫ জুন বিমানবন্দর থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় নাসির উদ্দিন মাহমুদ এবং তুহিন সিদ্দিকী অমির সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ১৪ জুন দুপুরে সাভার থানায় পরীমনি ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর অভিযানে নামে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। ওইদিনই নাসির ইউ আহমেদসহ পাঁচজনকে উত্তরার একটি বাসা থেকে আটক করে ডিবি পুলিশ।  

বাংলাদেশ সময়: ০২০২ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২১
কেআই/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad