ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

ঐশীর সাজা বাড়াতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২১
ঐশীর সাজা বাড়াতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ

ঢাকা: বাবা-মাকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে ঐশী রহমানকে হাইকোর্টের দেওয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন (লিভ টু আপিল) খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

তবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে ঐশী রহমানকে আপিলের অনুমতি (লিভ টু আপিল মঞ্জুর) দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৫ মার্চ) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। ঐশীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফয়সল এইচ খান।

পরে বিশ্বজিৎ দেবনাথ বলেন, তাকে বিচারিক আদালত মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। আপিলের পর হাইকোর্ট বিভাগ তাকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেন। এ দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে ঐশী আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে। আবার রাষ্ট্রপক্ষ তার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে আপিল বিভাগে আরেকটি লিভ টু আপিল করে।

আজকে উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন। আর ঐশীর লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেছেন। অর্থাৎ এখন তার যাবজ্জীবন দণ্ড বহাল থাকবে কী থাকবে না সেটির ওপর আপিল শুনানি হবে।

২০১৭ সালের ৫ জুন ঐশীর ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া সর্বোচ্চ সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জরিমানা ২০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৫ হাজার টাকা করা হয়।

২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজ বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরদিন ঐশী গৃহকর্মী সুমীকে নিয়ে রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করেন।

২০১৪ সালের ৯ মার্চ গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ইন্সপেক্টর আবুয়াল খায়ের মাতুব্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে ঐশী রহমান এবং তার দুই বন্ধু মিজানুর রহমান রনি ও আসাদুজ্জামান জনিসহ চারজনকে আসামি করে পৃথক দু’টি চার্জশিট দাখিল করেন।

অন্য আসামি গৃহকর্মী খাদিজা আক্তার সুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার মামলাটির বিচার সম্পন্ন হয় শিশু আদালতে। সেখানে সুমি খালাস পান।  

এ হত্যা মামলার বিচার শেষে ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর নিহতদের একমাত্র মেয়ে ঐশীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেন ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদের আদালত। পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

মামলার অন্য আসামি ঐশীর বন্ধু মিজানুর রহমান রনিকে খুনের ঘটনার পর ঐশীদের আশ্রয় দেওয়ার অপরাধে দু’বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ঐশীর অন্য বন্ধু আসাদুজ্জামান জনি খালাস পান।

দু’টি খুনের জন্য পৃথক দু’টি অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। দু’টি অপরাধের জন্য আলাদা করে ঐশীকে দু’বার ফাঁসি ও দু’বারে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

রায়ের সাতদিন পর ২০১৬ সালের ১৯ নভেম্বর ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে এসে পৌঁছে। পরে এ মামলায় শুনানির জন্য রায়ের বিরুদ্ধে ঐশী রহমানের করা আপিল গ্রহণ করেন হাইকোর্ট।

ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট। পরে রাষ্ট্রপক্ষ ও ঐশী আলাদাভাবে আপিল বিভাগে আবেদন করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২১
ইএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।