ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

নগরবাসীর ক্ষুদ্র বিরোধ আদালতের বাইরে নিষ্পত্তির জন্য আইন প্রয়োজন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২০
নগরবাসীর ক্ষুদ্র বিরোধ আদালতের বাইরে নিষ্পত্তির জন্য আইন প্রয়োজন ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিশিষ্টজনরা

ঢাকা: আদালতে মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রিতা, হয়রানি ও অর্থ ব্যয়ের কারণে মানুষ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিরোধ স্থানীয় পর্যায়ে সমাধানে আগ্রহী। ইউনিয়ন পর্যায়ে এ ধরনের বিরোধ মীমাংসার জন্য গ্রাম আদালত রয়েছে।

কিন্ত দেশের ১২টি সিটি করপোরেশেনে বসবাসরত প্রায় দুই কোটি মানুষের জন্য এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। নেই এ সংক্রান্ত আইনও। ফলে তাদেরকে ক্ষুদ্র বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিদ্যমান আদালতেই যেতে হচ্ছে।

শনিবার (১০ অক্টোবর) ‘নগর আদালত আইন: প্রস্তাবিত রূপরেখা এবং বাস্তবায়নের সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিশিষ্টজনরা এসব কথা বলেন। মাদারীপুর লিগ্যাল এইড অ্যাসোসিয়েশন (এমএলএএ), এসডিজি বাস্তবায়ন নাগরিক প্ল্যাটর্ফম ও বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) যৌথভাবে এই সভার আয়োজন করে। সংগঠনগুলো পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। আরও বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, আইন ও শালিস কেন্দ্রের (আসক) চেয়ারপার্সন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না, নগর পরিকল্পাবিদ ইকবাল হাবিব, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, সংগঠনের সম্পাদক ফজলুল হক, প্রধান সমন্বয়ক খান মো. শহীদসহ মানবাধিকারকর্মী, শিক্ষাবিদ, এনজিও কর্মকতাবৃন্দ।

সভায় খান মো. শহীদ প্রস্তাবিত নগর আদালত আইনের একটি রূপরেখা উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, অধস্তন আদালতে বর্তমানে প্রায় ৩৭ লাখ মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে মেট্টোপলিটন এলাকায় মামলার জট আরও বেশি। দেশে একজন বিচারকের বিপরীতে মামলার সংখ্যা প্রায় এক হাজার ৮৮৩টি। প্রতি এক লাখ মানুষের জন্য বিচাকের সংখ্যা শুন্য দশমিক ৭৩ শতাংশ। ফলে আদালতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিরোধ নিষ্পত্তিতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হওয়ায় নগরের বাসিন্দারা আর্থিক ক্ষতি, হয়রানি ও বিভিন্ন প্রতিকূলতার সন্মুখীন হচ্ছেন।

রূপরেখায় আরও বলা, দেশের প্রতিটি সিটি কর্পোরেশনের এখতিয়ারাধীন এলাকায় কতিপয় সুনির্দিষ্ট বিরোধের সহজ ও দ্রুত নিষ্পত্তি প্রয়োজন আছে। সিটি কর্পোরেশনের নাগরিকদের মধ্যে সংঘটিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিরোধ স্থানীয় পর্যায়ে মীমাংসার জন্য কোন আইন প্রনয়ন করা হয়নি। ফলে যে কোনও ধরণের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য তাদের ছুটে যেতে হয় আদালতের কাছে। আদালতে এ সকল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মামলার জন্যও কমপক্ষে দুই বছর অপেক্ষা করতে হয়। আবার এ ক্ষুদ্র মামলা থেকেই জন্ম নেয় বৃহত্তর বিরোধ, সৃষ্টি হয় আরও মামলা। অনেক ক্ষেত্রে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। এভাবে আদালতের মামলার স্তুপ জমতে থাকে।

জেড আই খান পান্না বলেন, ‘আদালত’ শব্দ ব্যবহার করলে বিচারক ও আইনজীবী নিয়োগসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া যুক্ত হয়ে যায়।

নগর পরিচালনা ব্যবস্থাপনায় আইনটি স্থানীয় পর্যায়ের বিরোধ নিষ্পত্তি একটি বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন স্থপতি ইকবাল হাবিব। তার মতে, অন্তভুক্তিমূলক নগর সুবিধা নিশ্চিতে, নগর আদালত একটা ন্যায়ভিত্তিক ও সামাজিক পরিষেবার সুযোগ সৃষ্টি করবে।

সিটি কর্পোরেশন এলাকায় আইনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে ফজলুল হক বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করা গেলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে। জাকির হোসেন, বিচার ব্যবস্থার প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করতে সার্বিকভাবে স্থানীয় পর্যায়ের শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২০
এমআইএস/ওএফবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।