ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

৫ বছরেও শেষ হয়নি ইতালীয় নাগরিক তাভেলা হত্যার বিচার

খাদেমুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০
৫ বছরেও শেষ হয়নি ইতালীয় নাগরিক তাভেলা হত্যার বিচার তাভেলা সিজার

ঢাকা: ইতালীয় নাগরিক তাভেলা সিজার ২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশান এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন। হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনার পর পেরিয়ে গেছে পাঁচটি বছর।

এখনো সম্পন্ন হয়নি এই হত্যার বিচার।

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ আশা করছেন, দ্রুতই এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হবে এবং চলতি বছরেই রায় ঘোষণা হবে।

২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গুলশান ৯০ নম্বর সড়কের পশ্চিম প্রান্তে গুলশান এভিনিউ সংলগ্ন গভর্নর হাউজের দক্ষিণের দেওয়াল ঘেঁষা ফুটপাতে দুর্বৃত্তরা তাভেলা সিজারকে গুলি করে। ওই সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

এরপর ইসলামিক স্টেট (আইএস) এই ঘটনায় দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় বলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েবসাইট আমাকে দাবি করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আইসিসিও কো-অপারেশনের বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি হেলেন দার বিক বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় তিনজনকে আসামি করা হয়।

২০১৬ সালের ২৮ জুন আদালতে বিএনপি নেতা ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার এম এ কাইয়ুমসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক গোলাম রাব্বানী।

অভিযোগপত্রে থাকা অন্য আসামিরা হলেন- কাইয়ুমের ভাই আবদুল মতিন, তামজীদ আহমেদ ওরফে রুবেল, রাসেল চৌধুরী, মিনহাজুল আরেফিন ওরফে ভাগনে রাসেল, শাখাওয়াত হোসেন ও সোহেল।

আসামিদের মধ্যে কারাগারে থাকা তামজীদ আহমেদ, রাসেল চৌধুরী, মিনহাজুল, মতিন ও শাখাওয়াত বিভিন্ন সময়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অন্যদিকে কাইয়ুম ও সোহেল পলাতক। আর মতিন জামিনে রয়েছেন।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, হামলাকারীদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল একজন শ্বেতাঙ্গকে হত্যা করে দেশ-বিদেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে এই পরিকল্পনা করা হয়।

এতে আরও বলা হয়, আসামি সোহেলের কাছ থেকে পিস্তল ভাড়া নিয়ে খুনিরা তাভেলা সিজারকে হত্যা করে। একই বছরে ২৫ আগস্ট মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা এই মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। এই মামলায় এখন সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৭১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

গত ২২ সেপ্টেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার তৎকালীন পরিদর্শক জিয়াদ সাক্ষ্য দিয়েছেন। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৪ অক্টোবর দিন ধার্য রয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা ও বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে এই মামলার সাক্ষ্য সম্পন্ন হবে।  

এরপর ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন এবং রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে বিচার সম্পন্ন হবে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের প্রত্যাশা বিচার শেষে এ বছরের মধ্যেই মামলার রায় হবে।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বাংলানিউজকে বলেন, তাভেলা সিজার হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ প্রায় শেষের দিকে। করোনার কারণে অনেকদিন বিচার বন্ধ থাকায় একটু সময় লাগছে। আশা করছি, চলতি বছরেই এই মামলার বিচার সম্পন্ন হবে।

আসামিরা সর্বোচ্চ শাস্তি পাবে ও এর মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে বলে তিনি আশাবাদী।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০
কেআই/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad