ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

সিনহা হত্যা: টেকনাফ থানায় সাক্ষীর মায়ের অপহরণ মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২০
সিনহা হত্যা: টেকনাফ থানায় সাক্ষীর মায়ের অপহরণ মামলা

কক্সবাজার: অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানকে হত্যার ঘটনায় পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীকে মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) দুপুরে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। অন্যদিকে একই ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একজন নুরুল আমিনের মা খালেদা বেগম বাদী হয়ে একইদিন সকালে টেকনাফ থানায় অপহরণের মামলা করেন।

 

এদিকে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। তবে, টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নতুন (ওসি) আবুল ফয়সাল বলছেন, এ তিন ব্যক্তিকে র‌্যাব আটক করেছে বিষয়টি পুলিশের জানা ছিলো না। পুলিশ এ বিষয়ে অবগত থাকলে মামলা রেকর্ড করা হতো না।

বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ থানার  ‍নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল ফয়সাল  বাংলানিউজকে জানান, পুলিশের মামলায় যে তিনজনকে সাক্ষী করা হয়েছে। তাদের মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে জবানবন্দি দেওয়ার কথা ছিলো।   ‘কিন্তু এর মধ্যে পুলিশের কাছে খবর আসে, এই তিন সাক্ষীকে সাদা পোশাকের একদল লোক গিয়ে তুলে নিয়ে গেছেন। তখন আমি ওই এলাকার মেম্বারকে ফোন দেই। কিন্তু মেম্বারও একই কথা জানালেন। পরে সোমবার (১১ আগস্ট) রাতে আমরা ওই গ্রামে যাই তখন মুষলধারে বৃষ্টি নামছিলো। আমরা গিয়ে দেখি, তিন সাক্ষীসহ তাদের স্বজনেরাও ঘরে নেই। তখন আমাদের সন্দেহ হয়েছে যোগ করেন ওসি।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ওই এলাকার আশপাশের পাহাড়ে যেহেতু অনেক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী অবস্থানের কথা আমরা শুনে আসছি তাই এলাকাবাসীর ভাষ্য শুনে আমাদের মনে হয়েছে হয়তো তারা অপহরণের শিকার হয়েছেন। কিন্তু এ সময় এদের পরিবারের কোনো পুরুষ সদস্যকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। একমাত্র ঘরে পাওয়া গেলো নুরুল আমিনের মা খালেদা বেগমকে। তাই তাকে আমরা মামলা করার পরামর্শ দিই এবং পরদিন মঙ্গলবার সকালেই মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এরপর দুপুর দুইটার দিকে জানতে পারি, এ তিন সাক্ষীকে র‌্যাব আটক করে আদালতে সোপর্দ করেছে।  

ওসি আরও বলেন, এ খবরটি আগে জানলে এ মামলা রেকর্ড করা হতো না। বিষয়টি এরকমই অন্যকিছু নয়।

এর আগে গত ৩১ জুলাই (শুক্রবার) রাত সাড়ে ৯টার দিকে টেকনাফ বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ সিনহার তথ্যচিত্র নির্মাণের সহযোগী সিফাতকে অভিযুক্ত করে টেকনাফ থানায় অস্ত্র ও সরকারি কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে দু’টি পৃথক মামলা করে। পুলিশের দায়ের করা এ মামলায় স্থানীয় নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও মো. আয়াছকে সাক্ষী করা হয়।  

আরও পড়ুন>>>সিনহা হত্যায় গ্রেফতার তিন সাক্ষীর সংশ্লিষ্টতা মিলেছে

অন্যদিকে গত ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের আইসি ইন্সপেক্টর মো. লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ পুলিশের ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

আদালত এ মামলাটি তদন্তভার র‌্যাবকে দেন। পরবর্তীতে সিফাতের আইনজীবী মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করে র‌্যাবকে দেওয়ার আবেদন জানালে আদালত তা মঞ্জুর করেন। ফলে এখন এ সংক্রান্ত তিনটি মামলাই র‌্যাব তদন্ত করছে। এ অবস্থায় মঙ্গলবার র‌্যাব পুলিশের মামলার তিন সাক্ষীকে গ্রেফতার করে আদালতে সোর্পদ এবং ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে বুধবার (১২ আগস্ট) কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে পুলিশের চার সদস্যকেও সাতদিনের রিমান্ড আদেশ দেন আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২০
এসবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।