ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

আইন ও আদালত

দুদকের মামলায় আত্মসমর্পণের সুযোগ নেই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৭ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০২০
দুদকের মামলায় আত্মসমর্পণের সুযোগ নেই ফাইল ছবি

ঢাকা: ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে পারবেন বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

তবে ২০১৯ সালে আইন সংশোধনের পর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এখতিয়ারভুক্ত মামলা সমূহে এসব আসামিদের ক্ষেত্রে এখনও আত্মসমর্পণের সুযোগ তৈরি হয়নি।

শনিবার (০৪ জুলাই) সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে পলাতক ও পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের আদালতে আত্মসমর্পণের মাধ্যমে জামিন আবেদনের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

তবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর এখতিয়ারভুক্ত মামলা সমূহে এসব আসামিদের ক্ষেত্রে এখনও আত্মসমর্পণের সুযোগ তৈরি হয়নি। কারণ, দুদকের মামলায় সিনিয়র স্পেশাল জজ হিসেবে প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন শুনানির এখতিয়ার মহানগর এলাকায় মহানগর দায়রা জজ ও অন্য ক্ষেত্রে জেলা ও দায়রা জজের।

কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে শুধু চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদালতে আত্মসমর্পণের সুযোগ রাখা হয়েছে।

ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজের দায়িত্বপ্রাপ্ত মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে রোববার (০৫ জুলাই) আত্মসমর্পণের মাধ্যমে জামিন শুনানি হয়নি।

ওই আদালতে দায়িত্ব পালনকারী দুদকের পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আত্মসমর্পণের মাধ্যমে জামিন শুনানি হবে কি না, বিষয়টি জানতে আদালতে গিয়েছিলাম। তবে আদালত থেকে বলা হয়েছে অপেক্ষা করতে। কারণ, সিএমএম ও সিজেএম আদালতে আত্মসমর্পণের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণের কথা উল্লেখ নেই। তাই এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে।

এছাড়া আত্মসমর্পণের মাধ্যমে জামিন শুনানির সুযোগ থাকছে না দায়রা আদালতের বিচারিক মামলায়। এসব মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের বিষয়েও সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে কিছু বলা হয়নি।

এ বিষয়ে ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর গোলাম ছারোয়ার খান জাকির বাংলানিউজকে বলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে যেহেতু সিএমএম ও সিজেএম আদালতের কথা উল্লেখ আছে, তাই থানায় বা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়েরের পর পরোয়ানাবিহীন বা পরোয়ানাভুক্ত আসামিরাই কেবল আত্মসমর্পণ করতে পারবেন। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর দায়রা জজ আদালতে বদলি হয়ে আসা বিচারিক মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের আত্মসমর্পণের সুযোগ থাকছে না। এখন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন যদি নতুন করে নিম্ন আদালত বা অধস্তন আদালতে আত্মসমর্পণের কথা উল্লেখ করে কোনো বিজ্ঞপ্তি জারি করেন, তখন বিচারিক মামলায়ও পরোয়ানাভুক্ত আসামিরা আত্মসমর্পণ করতে পারতেন। এ বিষয়ে আমাদের আপাতত অপেক্ষা ছাড়া কিছু করার নেই।   

এর আগে শনিবার সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে এই মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত স্বাস্থ্যবিধি এবং শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব কঠোরভাবে অনুসরণ করে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি/ব্যক্তিরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে পারবেন।

এ বিষয়ে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট এজলাস কক্ষে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনসহ শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করবেন।

মহামারি করোনাকালে সাধারণ ছুটির মধ্যে গত ৭ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভপতিত্বে গণভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

২ দিন পর ৯ মে ভার্চ্যুয়াল কোর্ট সম্পর্কিত অধ্যাদেশ জারি করা হয়। অধ্যাদেশে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বা ক্ষেত্রমত হাইকোর্ট বিভাগ, সময় সময়, প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) জারি করতে পারবে।

১০ মে সুপ্রিম কোর্ট প্র্যাকটিস ডাইরেকশন জারি করে আদালতে ভার্চ্যুয়াল শুনানির নির্দেশ দেন। সে অনুসারে এতদিন ভার্চ্যুয়ালি শুনানি হয়ে আসছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০২০
কেআই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।