ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

আইন ও আদালত

পিকে হালদারসহ ২০ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ বহাল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২০
পিকে হালদারসহ ২০ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ বহাল পিকে হালদার

ঢাকা: ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের অর্থ পাচারের ঘটনায় এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার হালদারসহ ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের আবেদন খারিজ করে আদেশ দেন।  

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তানজিব উল আলম। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আহসানুল করিম।

আহসানুল করিম বলেন, কোম্পানিটির পরিচালকদের ব্যাংক হিসাব-পাসপোর্ট জব্দ, খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদকে নিয়োগসহ এ বিষয়ে দেওয়া হাইকোর্টের অন্তবর্তীকালীন আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়েছিল। সেটার শুনানি হয়েছে এবং আপিল বিভাগ এটা ডিসমিসড করেছেন। ফলে হাইকোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ বহাল রইলো।

ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম বলেন, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং যে আপিল করেছে সে আপিলটা খারিজ করে দিয়েছে। ফলে হাইকোর্টের আদেশ বলবৎ রয়েছে। আদেশ মতো খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ দুইটা বোর্ড মিটিং করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকও অনুমতি দিয়েছেন। এখন খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ভর করবে বাংলাদেশ ব্যাংক কি করবে।  

বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছ, প্রতিষ্ঠানটা দেউলিয়া হোক সেটা তারা চায় না।

এর আগে দুই বিনিয়োগকারীর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ ১৯ জানুয়ারি আদেশ দেন।

আদেশে একই সঙ্গে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেড পরিচালনার জন্য স্বাধীন পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গর্ভনর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদকে নিয়োগ দেন হাইকোর্ট।

এরপর ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেড হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে। এরপর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের আর্থিক অবস্থার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে কোম্পানিটির স্বাধীন চেয়ারম্যান (হাইকোর্টের নির্দেশে নিয়োগপ্রাপ্ত) খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকের নিচে নয় এমন একজন কর্মকর্তাকে ডেকেছিলেন আপিল বিভাগ।

সে অনুযায়ী তারা দুইজন মঙ্গলবার আপিল বিভাগে উপস্থিত হয়ে মতামত দেন। এরপর আদালত আদেশের জন্য বুধবার দিন রাখেন। সে অনুসারে বুধবার ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের আবেদন খারিজ করে দেন।

হাইকোর্ট পিকে হালদার ছাড়াও যাদের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম নুরুল আলম, পরিচালক জহিরুল আলম, এমএ হাশেম, নাসিম আনোয়ার, বাসুদেব ব্যানার্জী, পাপিয়া ব্যানার্জী, মোমতাজ বেগম, নওশেরুল ইসলাম, আনোয়ারুল কবির, প্রকৌশলী নরুজ্জামান, আবুল হাশেম, মো. রাশেদুল হক, পি কে হালদারের মা লীলাবতী হালদার, স্ত্রী সুস্মিতা সাহা, ভাই প্রিতুষ কুমার হালদার, চাচাতো ভাই অমিতাভ অধিকারী, অভিজিৎ অধিকারী, ব্যাংক এশিয়ার সাবেক পরিচালক ইরফান উদ্দিন আহমেদ, পিকে হালদারের বন্ধু উজ্জ্বল কুমার নন্দী।

প্রশান্ত কুমার হালদার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থেকে অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২০
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।