ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

সন্তুষ্টি যে বিচার শেষ হয়েছে: আইনমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২০
সন্তুষ্টি যে বিচার শেষ হয়েছে: আইনমন্ত্রী

ঢাকা: তিন দশক আগে চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার ওপর হামলা ও দুই দশক আগে সিপিবির সমাবেশে হামলার রায়ের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সন্তুষ্টি যে অন্ততপক্ষে বিচারটি শেষ হয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে পাবনা আইনজীবী সমিতিকে বই কিনতে ৩০ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

ওই দুটি চাঞ্চল্যকর মামলার রায়ের একদিন পর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, দুটি রায়ের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে- চট্টগ্রামের ঘৃণিত অপরাধটা ১৯৮৮ সালে হয়েছে, ৩১ বছর পর এই বিচার সমাপ্ত হল।

সিপিবির বোমা হামলা ২০০১ সালে হয়েছে। এর মানে ১৮ বছর পর আমরা এর বিচার শেষ করতে পেরেছি।

‘সন্তুষ্টি যে অন্ততপক্ষে বিচারটি শেষ হয়েছে,’ বলেন তিনি।

পড়ুন>>সিপিবির সমাবেশে হামলা: ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আমরা এইটুকু বলতে পারি যে, এই দুটো বিচারের মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো অপরাধীরা কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, যার যতই ক্ষমতা থাকুক না কেন? হয়তো সাময়িকভাবে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কিছুদিনের জন্য আইনের ঊর্ধ্বে আছেন বলে একটা ইল্যুশনের মধ্যে থাকতে পারেন অপরাধীরা। শেষ পর্যন্ত তাদের আইনের আওতায় আসতেই হবে।

দুটি মামলার বিচার হতে দীর্ঘ সময় ক্ষেপণের বিষয়ে তিনি বলেন, এই মামলাগুলো যাতে বিচারের মুখ না দেখে সেই ব্যবস্থা করেছিল বিএনপি সরকার। শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে সরকার গঠন করলেন তখন থেকে আবার তদন্ত শুরু হয়। তখন কতগুলো মামলা পুলিশের হাতে ছিল, সবগুলো তদন্ত করে শেষ পর্যন্ত পৌঁছেছে, সেজন্য আমি তাদের সাধুবাদ জানাই। তখন আবার নতুন করে সাক্ষী-সাবুদ দেওয়ার ব্যবস্থা ও তদন্ত করে এইসব মামলা চালানো, সেজন্য একটু দেরি হয়েছে।

‘বাংলাদেশে এখন বিচারহীনতার সংস্কৃতি গত। কেউ-ই আইনের ঊর্ধ্বে নয়, আইনের মাধ্যমে সব অপরাধের বিচার হবে। ’

দেশে সবার জন্য সমান আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, হ্যাঁ, সবার জন্যই আছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, আপনাদের এটাও মানতে হবে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি যথেষ্ট বছর ছিল। সেটার মূলোৎপাটন এত তাড়াতাড়ি করা যায় না।

পড়ুন>>লালদীঘিতে ২৪ আ’লীগকর্মী হত্যা মামলায় ৫ পুলিশের মৃত্যুদণ্ড

‘আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শেখ হাসিনার সরকারের মাধ্যমে। ’

তেজগাঁও রেজিস্ট্রি অফিসে বারবার দুর্ঘটনার বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, এ রকমভাবে যাতে আর না ঘটে। এই ঘটনা কেন ঘটছে বারবার, এটার মূলটা বের বরার জন্য আমরা তদন্ত করছি।

খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে সরকার কিছু ভাবছে না

খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে একটি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারের বিষয়ে জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আমরা খালেদা জিয়ার মামলা ও জামিন নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছি কিনা?

‘আমরা কেন চিন্তা-ভাবনা করবো? আমি চিন্তা-ভাবনার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। ’

আইনমন্ত্রী বলেন, বিচারিক আদালত এতিমের টাকা চুরি করার জন্য খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের জেল দিয়েছিল। আপিল করার পর হাইকোর্ট ডিভিশন আপিল আদালত হিসেবে সেটাকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেছে। তিনি সাজা ভোগ করছেন।

‘বিচারিক আদালত এতিমখানার টাকা আত্মসাৎ করার জন্য তাকে ৭ বছর সাজা দিয়েছে। এখন তিনি সাজা ভোগ করছেন। আপিল বিভাগ তার জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন। সবই আদালতের ব্যাপার। আমাদের কেন ভাবতে হবে যে, আমরা খালেদা জিয়াকে নিয়ে কী করবো?’

তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে এ রকম প্রশ্ন ওঠেনি, আমরা অন্ততপক্ষে এটা নিয়ে এখন ভাবছি না। ’

সরকারের ইচ্ছায় খালেদা জিয়া কারাবন্দী- বিএনপির এ অভিযোগের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, কোনটা রাজনৈতিক মামলা আর কোনটা রাজনৈতিক মামলা নয়, এটা ভাববার সময় এসেছে। এই মামলা ২০০৭-০৮ সালে করা হয়েছে। তখন শেখ হাসিনার সরকার ছিল না, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল। চার্জশিট দিয়েছে স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন। ’

তিনি বলেন, এরপর অন্ততপক্ষে তারা ২০ বার আপিল বিভাগে গেছে, প্রত্যকবার পরাজিত হয়েছে। এই মামলা চলতে পারে বলে আপিল বিভাগের রায় আছে। বিচারিক আদালতে এই মামলা চলেছে। শেষ যখন হওয়ার কথা তারা আদালতের বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়েছে।

‘হাইকোর্ট ডিভিশন আবারও আদালত বদলে দিয়েছে। তারপরও এটাকে যদি কেউ রাজনৈতিক মামলা বলতে চায় তাহলে মুখে তারা বলতে পারেন তা কাগজে তারা প্রমাণ করতে পারবেন না,’ যোগ করেন আইনমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২০
এমআইএইচ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।