ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

ভিড়ের মধ্যে রিগ্যানকে আইএসের টু‌পি দেন একজন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১৯
ভিড়ের মধ্যে রিগ্যানকে আইএসের টু‌পি দেন একজন

ঢাকা: হ‌লি আ‌র্টিজান মামলার রা‌য়ের দিন ২৭ ন‌ভেম্বর (বুধবার) কেউ একজন রা‌কিবুল হাসান রিগ্যান‌কে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) টু‌পি দেন। কল্যাণপু‌রে জাহাজ বা‌ড়ি‌তে জ‌ঙ্গি আস্তানায় হামলা মামলার শুনা‌নিকা‌লে রিগ্যান একথা ব‌লেন।

মঙ্গলবার (৩ ডি‌সেম্বর) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালতে এ মামলার শুনানি হয়। শুনানির একপর্যায়ে আইএসের টুপ কোথা থেকে পরেছেন, রিগ্যানের কাছে জানতে চান বিচারক।

জবাবে রিগ্যান বলেন, ভিড়ের মধ্যে একজন টুপিটি দিয়েছে। কে দিয়েছে তার পরিচয় বিচারক জানতে চাইলে রিগ্যান বলে, আমি তাকে চিনি না।

তখন বিচারক রিগ্যানকে জিজ্ঞাসা করেন টুপিটি নিলেন কেন? জবাবে রিগ্যান বলেন, কালেমায় শাহাদাত লেখা ছিল ওটাতে, তাই ভালো লাগায় টুপিটি নিয়েছি। আর কাউকে টুপি দিয়েছিল কি-না জানতে চাইলে রিগ্যান বলেন, আর কাউকে দেয়নি, তবে প্রিজন ভ্যানে ওঠার পর রাজীব গান্ধী আমার কাছ থেকে ওই টুপিটি নিয়ে পরেছেন।

আদাল‌তের রাষ্ট্রপ‌ক্ষের আইনজীবী গোলাম ছা‌রোয়ার খান জা‌কির বাংলা‌নিউজ‌কে ব‌লেন, টু‌পি নি‌য়ে বিত‌র্কের পরিপ্রে‌ক্ষি‌তে বিচারক এ  টু‌পি  কোথায় পে‌য়ে‌ছিলেন রিগ্যানের কাছে তা জানতে চান। জবাবে রিগ্যান আদালতকে জানান, ওই‌দিন আদাল‌তের বাই‌রে ভি‌ড়ের ম‌ধ্যে একজন তা‌কে টু‌পি‌টি দেন। ত‌বে তা‌কে চিন‌তে পা‌রেন‌নি তিনি।
আদালত থেকে বের হচ্ছেন জঙ্গি রা‌কিবুল হাসান রিগ্যান‌, ছবি: বাংলানিউজমামলার ১০ আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা সাতজনকে আদালতে হাজির করা হয়। তাদের মাথায় হেলমেট ও গায়ে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরানো হয়। নেওয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা। আইনজীবীদেরও তল্লাশি করে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। মামলার শুনানির সময় অন্য কাউকে সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

এ মামলার আসামিরা হলেন- রাকিকুল হাসান রিগ্যান (২১), সালাহ উদ্দিন কামরান (৩০), আব্দুর রউফ প্রধান (৬৩), আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র‌্যাশ (২০), শরীফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ওরফে সোলায়মান (২৫), মামুনুর রশিদ রিপন ওরফে মামুন (৩০), আজাদুল কবিরাজ ওরফে হার্টবিট (২৮), মুফতি মাওলানা আবুল কাশেম ওরফে বড় হুজুর (৬০), আব্দুস সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ ওরফে নাসরুল্লা হক ওরফে মুসাফির ওরফে জয় ওরফে কুলমেন (৩৩), হাদিসুর রহমান সাগর (৪০) ও আজাদুল কবিরাজ।

এর মধ্যে আবুল কাশেম ওরফে বড় হুজুর এবং আব্দুর রউফ প্রধান জামিনে আছেন। আর আজাদুল কবির পলাতক রয়েছেন। পলাতক একজন ছাড়া বাকিরা এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ মামলায় রিগ্যানসহ ছয়জন হলি আর্টিজান মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।

২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ১০ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেন। জাহাজ বাড়িতে অভিযানে নিহত ৯ জন এবং নারায়ণগঞ্জে নিহত তামিম চৌধুরী ও আশুলিয়ায় নিহত সরোয়ার জাহানকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। চলতি বছর ৯ মে মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বদলির আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস।

২০১৬ সালের ২৫ জুলাই কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কে জাহাজবাড়িতে রাতভর অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সকালে এক ঘণ্টার মূল অভিযানে নয় জঙ্গি নিহত হন। আহত হন রিগ্যান নামে আরও একজন। অভিযানের দু’দিন পর মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. শাহ জালাল আলম সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৯/আপডেট: ১৬১০ ঘণ্টা
কেআই/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।