ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

মোয়া‌জ্জে‌মের মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৯
মোয়া‌জ্জে‌মের মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য সা‌বেক ওসি মোয়া‌জ্জেম হো‌সে‌ন, ফাইল ফটো

ঢাকা: ফেনীর সোনাগাজী থানার সা‌বেক ওসি মোয়া‌জ্জেম হো‌সে‌নের বিরু‌দ্ধে ডি‌জিটাল নিরাপত্তা আই‌নের মামলায় সাক্ষ্য দি‌য়ে‌ছেন এর তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পি‌বিআই) তৎকালীন সি‌নিয়র সহকারী পু‌লিশ সুপার রীমা সুলতানা।

সোনাগাজীর মাদ্রাসা অধ্য‌ক্ষের বিরু‌দ্ধে শ্লীলতাহানির বিষয়ে নুসরাত জাহান রা‌ফির বক্তব্য ভি‌ডিও ক‌রে, তা ছ‌ড়ি‌য়ে দেওয়ার অ‌ভি‌যো‌গে মোয়া‌জ্জে‌মের বিরু‌দ্ধে এ মামলাটি করা হয়।

সোমবার (১১ ন‌ভেম্বর) তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল প‌রিদর্শন, আলামত জব্দ করাসহ তদন্ত সংক্রান্ত বিস্তা‌রিত বিবরণ আদাল‌তে তু‌লে ধ‌রেন।

এরপর আসামিপ‌ক্ষের আইনজীবী ফারুক আহ‌মেদ তা‌কে জেরা শুরু ক‌রেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ‌জেরার পর সন্ধ্যায় সাইবার ট্রাইব্যুনা‌লের বিচারক আসসামছ জগলুল হো‌সেন অসমাপ্ত জেরার জন্য মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) পরবর্তী দিন ধার্য ক‌রেন।

মামলাটিতে নুসরা‌তের মা, ভাই এবং দুই বান্ধবীসহ ১১ জন এ পর্যন্ত সাক্ষ্য দি‌য়ে‌ছেন।

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে ‘অসম্মানজনক’ কথা বলা ও তার জবানবন্দি ভিডিও ক‌রে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় চল‌তি বছর ১৫ এপ্রিল সাইবার ট্রাইব্যুনালে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। ওইদিনই আদালত মামলার তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।

গত ২৭ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রীমা সুলতানার পক্ষে মামলার প্রতিবেদন জমা দেয় পিবিআই। আবার এ দিনই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক।

গত ১৬ জুন রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে।

গত ১৭ জুলাই আদালত আসামি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে অ‌ভি‌যোগ গঠ‌নের মাধ্য‌মে বিচার শুরুর আ‌দেশ দেন।

চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন নুসরাতের মা। এ পরিপ্রেক্ষিতে সিরাজ-উদ দৌলাকে পরে গ্রেফতার করা হয়। তবে অভিযোগ উপস্থাপনকালে নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্নের পাশাপাশি তার বক্তব্য ভিডিও করেন মোয়াজ্জেম। পরে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়। মৌখিক অভিযোগ নেওয়ার সময় ভি‌ডিও‌তে দু’জন পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না।

গত ৬ এপ্রিল আলিম পরীক্ষার আগ মুহূর্তে বান্ধবীকে মারধরের কথা বলে নুসরাতকে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে সেই মামলা তুলে নিতে চাপ দেওয়া হয়। এ‌তে নুসরাত রাজি না হলে তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় সিরাজ-উদ দৌলার লোকজন।

পরে নুসরাতকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গত ১০ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হয়।

এই হত্যা মামলায় এরইম‌ধ্যে অধ্যক্ষ সিরাজসহ ১৬ জন‌কে মৃত্যুদণ্ড দি‌য়ে‌ছেন আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, ন‌ভেম্বর ১১, ২০১৯
‌কেআই/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।