ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

তিতাসের মৃত্যু: প্রতিবেদন নিয়ে শুনানি ১৪ নভেম্বর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০১৯
তিতাসের মৃত্যু: প্রতিবেদন নিয়ে শুনানি ১৪ নভেম্বর স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষ

ঢাকা: কাঁঠালবাড়ী ঘাটে ফেরিতে অ্যাম্বুলেন্সে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনগুলোর ওপর শুনানির জন্য ১৪ নভেম্বর দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট।

এ ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চে বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) এ দিন ঠিক করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

দুই বিবাদীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও এএম আমিন উদ্দিন।

এর আগে বুধবার নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অ্যাটর্নি জেনারেল কার‌্যালয়ে জমা দেওয়া হয়।

ওই প্রতিবেদনে সরাসরি যুগ্ম-সচিবকে দায়ী না করা হলেও ফেরি অপেক্ষমাণ রাখায় এক্ষেত্রে তারও দায়বদ্ধতা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত ২৩ অক্টোবর তিতাসের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে দাখিল করে। ওই প্রতিবেদনে দেরিতে ফেরি ছাড়ার জন্য দায়িত্বরত ফেরিঘাটের তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়ী করেছে কমিটি। তদন্ত কমিটি যুগ্ম-সচিবের কোনো দোষ খুঁজে পায়নি।

পরে রিটকারী আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৭ নভেম্বরের মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। সে অনুসারে বুধবার (৬ নভেম্বর) এ প্রতিবেদন আসে।

প্রতিবেদনে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে ৭ দফা সুপারিশ করা হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও তদন্ত কমিটির সভাপতি সঞ্জয় কুমার বণিকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি এ প্রতিবেদন তৈরি করে।

এর আগে ৩১ জুলাই প্রতিবেদন দাখিলে জনপ্রশাসন সচিবকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
 
অতিরিক্ত সচিবের নিচে নয়- এমন পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে এ তদন্ত করাবেন জনপ্রশাসন সচিব। একই সঙ্গে তিতাসের পরিবারকে কেন তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

পরে এই কমিটির ৩৫ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করার জন্য গত ৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়। ওই প্রতিবেদনে দেরিতে ফেরি ছাড়ার জন্য দায়িত্বরত ফেরি ঘাটের তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়ী করেছে কমিটি। তদন্ত কমিটি যুগ্ম-সচিবের কোনো দোষ খুঁজে পায়নি।

মানবাধিকার সংগঠন লিগ্যাল সাপোর্ট অ্যান্ড পিপলস রাইটসের চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জহির উদ্দিন লিমন জনস্বার্থে এ রিট করেন।

রিটের বিবাদীরা হচ্ছেন নৌপরিবহন সচিব, সড়ক পরিবহন ও সেতু সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান, যুগ্ম-সচিব আবদুস সবুর মণ্ডল, মাদারীপুরের ডিসি, পুলিশ সুপার, কাঠালবাড়ী ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক সালাম হোসাইন মিয়া ও কাঠালবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়েছে।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নড়াইল কালিয়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তিতাস ঘোষ (১১) গুরুতর আহত হয়। ওইসময় তাকে খুলনার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তার পরিবার আইসিইউ সুবিধা আছে এমন একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে ২৫ জুলাই তাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হন।

পরে রাত ৮টার দিকে কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌ-রুটের শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ১ নম্বর ভিআইপি ফেরিঘাটে পৌঁছায় অ্যাম্বুলেন্সটি। তখন কুমিল্লা নামে ফেরিটি ঘাটে যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় ছিল। সরকারের এটুআই প্রকল্পের যুগ্ম সচিব আবদুল সবুর মণ্ডল পিরোজপুর থেকে ঢাকা যাবেন তাই ওই ফেরিকে অপেক্ষা করার জন্য জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ঘাট কর্তৃপক্ষকে বার্তা পাঠানো হয়।

তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর ফেরিতে ওঠে অ্যাম্বুলেন্সটি। কিন্তু এর মধ্যে মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে মাঝপদ্মায় অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যায় স্কুলছাত্র তিতাস।

পরিবারের অভিযোগ, তিতাসকে বাঁচাতে তারা ফোন করেন জরুরি নম্বর ৯৯৯-এ। সাহায্য চান ঘাটে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদেরও। কিন্তু কারও অনুরোধই রাখেননি ঘাট কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৯
ইএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।