ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আইন ও আদালত

তদন্ত পর্যায়ের বক্তব্য প্রচারে নীতিমালা তৈরির নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৯
তদন্ত পর্যায়ের বক্তব্য প্রচারে নীতিমালা তৈরির নির্দেশ হাইকোর্ট/ফাইল ফটো

ঢাকা: মামলার তদন্ত পর্যায়ে তদন্তের অগ্রগতি বা গ্রেফতারদের বিষয়ে গণমাধ্যমে কতটুকু বিষয় প্রচার বা প্রকাশ করা যাবে সে বিষয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রচারের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পুলিশের মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মিন্নিকে গ্রেফতারের পর গণমাধ্যমে তার স্বীকারোক্তি নিয়ে বরগুনার পুলিশ সুপারের গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্য নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) পর্যবেক্ষণে এমন মন্তব্য করেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ।
 
এসপির বক্তব্য নিরপেক্ষ তদন্তের পরিপন্থি
আদালত তার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, আসামি মিন্নি রিমান্ডে থাকা অবস্থায় বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন গণমাধ্যমের সম্মুখীন হন।

মিন্নি দোষ স্বীকার করেছেন মর্মে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা শুধু অযাচিত, অনাকাঙ্ক্ষিত নয় বরং ন্যায়-নীতি, সুষ্ঠ এবং নিরপেক্ষ তদন্তের পরিপন্থি।
 
‘পুলিশ সুপারের মতো দায়িত্বশীল পদে থেকে এ ধরনের বক্তব্য জনমনে নানান প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে। একদিকে যেমন জনমনে নানান প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে তেমনি তিনি তার দায়িত্বশীলতা ও পেশাদারিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন, যা দুঃখজনক ও হতাশার। ’
 
সময়মতো আইজিপি এসপির বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন
আদালতের মতে, উচ্চ পর্যায়ের একজন পুলিশ কর্মকর্তার কাছ থেকে এ ধরনের কাজ প্রত্যাশিত ও কাম্য নয়। ভবিষ্যতে দায়িত্ব পালনে আরও সতর্কতা ও পেশাদারিত্বের পরিচায় দেবেন আদালতের এটাই কাম্য। মামলাটির তদন্তকাজ এখনও চলমান, তাই এ মুহূর্তে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় থেকে আদালত বিরত থাকছে। তবে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক সময়মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
 
গণমাধ্যমে বক্তব্য নিয়ে নীতিমালা
বিভিন্ন আসামির বিষয়ে প্রেসব্রিফিং নিয়ে আদালত বলেন, ইদানীং লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, সংগঠিত আলোচিত ঘটনা তদন্তকালীন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার অভিযুক্তদের বিষয়ে এবং তদন্ত সম্পর্কে প্রেসব্রিফিং করা হয়। কোনো নিয়ম-নীতি ছাড়াই গণমাধ্যমে সামনে সন্দেহভাজন আসামিদের হাজির করা হয়, যা অনেক প্রশ্নের উদ্রেক করে। এ বিষয়ে এই আদালতে একটি রায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
 
আদালতের মতে, যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণের মাধ্যমে অভিযোগ প্রমাণিত না হচ্ছে, ততক্ষণ বলা যাবে না সে অপরাধী বা অপরাধ করেছে। তদন্ত বা বিচার পর্যায়ে এমনভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করা উচিত নয় যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি অপরাধী।
 
মামলার অগ্রগতি বা আসামিদের গণমাধ্যমে প্রচারের বিষয়ে আদালত বলেন, মামলার তদন্ত পর্যায়ে তদন্তের অগ্রগতি বা গ্রেফতারদের বিষয়ে গণমাধ্যমে কতটুকু বিষয় প্রচার বা প্রকাশ করা যাবে সে বিষয়ে একটি নীতিমালা করা বাঞ্ছনীয়। এই নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রচারের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দেওয়া হলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৯
ইএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।