ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

গন্ধ নয়, দুদক সুগন্ধ ছড়াক: হাইকোর্ট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২০ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৯
গন্ধ নয়, দুদক সুগন্ধ ছড়াক: হাইকোর্ট

ঢাকা: গন্ধ নয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সুগন্ধ ছড়াক। স্বাধীনভাবে কাজ করুক। ঋণ জালিয়াতির ২৬ মামলায় পাটকল শ্রমিক ‘জাহালমকে আবু সালেক রূপে চিহ্নিত করার যে ভুলটি হয়েছে তা দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কারণেই ঘটেছে’- এমন প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) এ মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চে এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন দুদক আইনজীবী।
 
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান, সোনালী ব্যাংকের পক্ষে ব্যারিস্টার শেখ মো. জাকির হোসেন।
 
প্রতিবেদন উপস্থাপনে আদালত বলেন, দুদকের এ প্রতিবেদনের জন্য আমরা অ্যাপ্রিশিয়েট করছি। যদিও ২/১ টা বিষয়ে কথা আছে। তারপরও অ্যাপ্রিশিয়েট করছি।
 
এ সময় দুদকের আইনজীবী বলেন, খুবই ভালো লাগলো। যাক অনেকদিন পর ভালো কথা শুনে ভালো লাগলো। আমাদের নিয়ে চারদিকে কথা হয়। অনেকেই মনে করে দুদক মানে গন্ধ।
   
তখন আদালত বলেন, গন্ধ না আমরা চাই দুদক সুগন্ধ ছড়াক। আমরা চাই দুদক স্বাধীনভাবে কাজ করুক।
 
এক পর্যায়ে এই ঘটনায় দুই ব্যাংকের আইনজীবীদের উদ্দেশ্য করে আদালত বলেন, আমরা যখন অ্যাকাউন্ট করতে যাই, তখন তো আমাদের ১০টা বিষয়ও যাচাই করা হয়। কিন্তু একজন মানুষ এতোগুলো অ্যাকাউন্ট খুলে ফেললেন আপনারা কোনো যাচাই করলেন না, এটা তো ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশ ছাড়া সম্ভব না, আমরা বিষয়টা দেখবো। দু’টি ছবি এনে আমাদের দেবেন। একটা জাহালমের আরেকটা আবু সালেকের।
 
আদালত আরো বলেন, জাহালমকে আসামি করার পেছনে দুদক ও বিভিন্ন ব্যাংকের যেসব কর্মকর্তা জড়িত তারা যেন চাকরির টাকা-পয়সা নিয়ে পালাতে না পারে সেজন্য তাদের ওপর নজরদারি রাখবেন। বিশেষ করে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা যেন না তুলতে পারে। আর তাদের বিষয়ে কি পদক্ষেপ নিয়েছেন সেটাও জানাবেন।
 
এদিকে, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, গণমাধ্যমে যদি জাহালমের বিষয়টি না আসতো তাহলে হয়তো তাকে এখনো কারাগারেই থাকতে হতো।
 
তখন আদালত বলেন, গণমাধ্যমে জাহালমের বিষয়টি না এলে তাকে তো মিথ্যা মামলায় সাজা মাথায় নিয়ে কারাগারেই থাকতে হতো। আরেকটি জজ মিয়া নাটক বানানোর চেষ্টা। দুদক যথাযথভাবে তদন্ত করেনি। টাকা কোথায় গেলো তা খুঁজে বের করেনি। বের করার চেষ্টাও করেনি। আমরা জানতে চাই, এই টাকা কোথা থেকে কোথায় গেছে।
  
এরপর আদালত আগামী ২১ আগস্ট মামলাটি ফের কার্যতালিকায় রাখার আদেশ দেন।
 
পরে খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, জাহালম সংক্রান্ত দুদকের অভ্যন্তরীণ একটি তদন্ত হয়েছিল। দুদকের পরিচালক আবুল হাসনাত মো. আব্দুল ওয়াদুদ তদন্ত করে একটা প্রতিবেদন দিয়েছেন। গত ১১ জুলাই প্রতিবেদনটি আমরা আদালতে দাখিল করেছি। মঙ্গলবার এর ওপর শুনানি হয়েছে।
 
তিনি আরো বলেন, এখন এ প্রতিবেদনটি কমিশনের কাছে উপস্থাপন করা হবে। যেহেতু কমিশনের কাছে প্রতিবেদন উপস্থাপন হচ্ছে, তাই আদালত দেখতে চাইছে, কমিশন কী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। কমিশনের সিদ্ধান্ত দেখার জন্য আগামী ২১ আগস্ট এ মামলার পবরর্তী তারিখ ধার্য করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৯
ইএস/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।