ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

নুসরাত হত্যা মামলা: সাক্ষ্য দিলেন মাদ্রাসার পিয়ন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪০ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০১৯
নুসরাত হত্যা মামলা: সাক্ষ্য দিলেন মাদ্রাসার পিয়ন আদালতে সিরাজ উদ দৌলা (ইনসেটে নুসরাত জাহান রাফি)। ছবি: বাংলানিউজ

ফেনী: মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় বুধবার (০৩ জুলাই) পঞ্চমদিনে সাক্ষ্য দিয়েছেন সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার পিয়ন নুরুল আমিন। 

ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে তার সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার (০২ জুলাই) নুসরাতের সহপাঠী নাসরিন সুলতানা ফূর্তির জেরা শেষে হলে নতুন সাক্ষী নূরুল আমিন আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

 

পরে বুধবার সোনাগাজী ফাজিল মাদ্রাসার পিয়ন নূরুল আমিনের জেরা শেষ হয়েছে। গত ২৭ মার্চ নুসরাতকে শ্লীতাহানির দিন তাকে দিয়েই ডাকা হয়েছিলো নুসরাতকে।

সকাল ১১টায় কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মামলার সব আসামিকে ফেনীর নারী ও শিশুনির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের আদালতে উপস্থাপন করা হয়।

বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শুরু হয় নূরুল আমিনের জেরা।  
এর আগে গত ২৭ জুন মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী নুসরাতের বড়ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।  

এরপর তাকে জেরা শুরু করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। যা শেষ হয় রোববার (৩০ জুন)। পরে গত ১ ও ২ জুলাই নুসরাত জাহান রাফির বান্ধবী নিশাত সুলতানা ও সহপাঠী নাসরিন সুলতানা ফূর্তির সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়।

গত ২৭ জুন অভিযোগ গঠনের ছয়দিনের মাথায় ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে বাদীপক্ষের তিনজনকে আদালতে তাদের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য উপস্থাপন করা হয়। ২০ জুন সাক্ষ্যগ্রহণের এই আদেশ দেন আদালত।  

এ মামলার চার্জশিট জমা দেওয়ার আগে সাতজন সাক্ষী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। গত ৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতহানির মামলা তুলে না নেওয়ায় তাকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে; যা মৃত্যুশয্যায়ও বলে গেছেন নুসরাত। ১০ এপ্রিল ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নুসরাতের মৃত্যু হয়।

পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ফেনীর পরিদর্শক মো. শাহ আলম আদালতে মোট ১৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযোগপত্রের ১৬ আসামি হলেন- মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজীর পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান, মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সহ সভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিল।

এ মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তদন্তে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় অন্য পাঁচজনকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে পিবিআই। আদালত তা অনুমোদন করেন।

এছাড়া যৌন হয়রানির মামলার পর নুসরাতের জবানবন্দি গ্রহণের সময় তার ভিডিও ধারণ করে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে এক মামলায় সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাইবার আইনের ওই মামলায় বর্তমানে তিনি কারাগারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০১৯
এসএইচডি/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।