ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

আইন ও আদালত

তিন অঙ্গের সমন্বয়ের চেষ্টা করবেন প্রধান বিচারপতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৮
তিন অঙ্গের সমন্বয়ের চেষ্টা করবেন প্রধান বিচারপতি

ঢাকা: ‘দেশে দৃঢ়ভাবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং প্রতিটি মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য যা কিছু আমারপক্ষে করা সম্ভব, তার সবটুকু আমি করবো।’

অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতির অভিনন্দনের জবাবে এমন বক্তব্য দেন নতুন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

রোববার (০৪ ফেব্রুয়ারি) তাকে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি জয়নুল আবেদীন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আমি এ কথা নিশ্চিত করে বলতে পারি যে দেশে দৃঢ়ভাবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং প্রতিটি মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য যা কিছু আমারপক্ষে করা সম্ভব, তার সবটুকু আমি করবো।
 
আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে নতুন এ প্রধান বিচারপতি বলেন, আমি আশা করবো হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের মতো যেভাবে আমাকে সহযোগিতা করেছেন ঠিক একইভাবে প্রধান বিচারপতির দায়িত্বপালন করতে গিয়েও তারা তাদের সহযোগিতার হাত আমার দিকে প্রসারিত করবেন। বার (আইনজীবী সমিতি) ও বেঞ্চের পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস এবং সহযোগিতা একটি সমৃদ্ধ বিচার বিভাগের ভিত্তি গড়ে তুলবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
 
রাষ্ট্রের তিন অঙ্গের সমন্বয় নিয়ে বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, আইন, নির্বাহী ও বিচার বিভাগ রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমেই কেবলমাত্র একটি দেশ উন্নয়নের পথে অগ্রসর হতে পারে। যেখানে এই তিনটি অঙ্গের কাজের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব থাকে, সেখানে উন্নয়ন ব্যাহত হয়। এই তিনটি অঙ্গের কাজের মধ্যে যেন সমন্বয় রক্ষা করা যায়, সেজন্য আমি সবসময় চেষ্টা করবো। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট যেন সংবিধানের কাঠামোর মধ্যে থেকে সংবিধান অনুসারে তার নিজ দায়িত্ব পালন করে সেটিও আমি নিশ্চিত করতে চেষ্টা করবো।

আদালতের ভাবমূর্তির বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের এমনভাবে আদালতের ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে হবে যেন আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে শক্তিমান ও দুর্বল, ধনী-গরিব সবার মধ্যে এই বিশ্বাস জন্মে যে, তারা সবাই সমান এবং আদালতের কাছ থেকে শুধুমাত্র আইন অনুযায়ী তারা ন্যায়বিচার পাবেন। এতে করে আদালতের প্রতি মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা দৃঢ় হবে।

‘মামলা জট আজকে আমাদের বড় সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। প্রয়োজন হবে বারের সক্রিয় সহযোগিতা। ’

তিনি বলেন, মামলা জট আজ শুধু আদালতের একার সমস্যা নয়। এটি বারের জন্যও অস্বস্তির কারণ। মামলার পাহাড় যত জমতে থাকবে, আদালতের সঙ্গে সঙ্গে বারের প্রতিও তেমনি বিচার প্রার্থী মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা কমতে থাকবে। এই সমস্যা সমাধানে বারকেও এগিয়ে আসতে হবে।
 
বিচারে ডিজিটাল প্রক্রিয়া নিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার প্রক্রিয়ায় তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু এবং ধীরে ধীরে তা বৃদ্ধি করে সম্পূর্ণ ডিজিটাইজেশনের পথে অগ্রসর হতে হবে। ডিজিটাইজেশনের জন্য যে পরিবর্তন হবে বারকেও সেটা স্বাগত জানাতে হবে এবং তার বিরোধিতা না করে তার সঙ্গে অভ্যস্থ হতে হবে। এ প্রক্রিয়ায় সরকারের নিরন্তর সহযোগিতাও একান্তভাবে কাম্য।
 
‘বিচার বিভাগের অগ্রসরতার জন্য যা কিছু করার প্রয়োজন আমি তার সবকিছু করার চেষ্টা করবো। বিচার বিভাগের জন্য বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি, বিচারকদের জন্য দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, দেশে একটি ন্যাশনাল জুডিশিয়াল একাডেমি প্রতিষ্ঠা, মামলা অনুপাতে বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বিচার প্রক্রিয়ার গতি ত্বরান্বিত করতে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালানো ও কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা আমার প্রাথমিক লক্ষ্য। ’
 
বিচারপতি নিয়োগের আইনের বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সংবিধানের ৯৫(২)(গ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচারপতি নিয়োগের আইন প্রণয়ন অপরিহার্য।   

সংবর্ধনায় আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, জ্যেষ্ঠ আইনজীবীসহ আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৮
ইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।