ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

তিন বছরের সময় চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে বিজিএমইএ’র আবেদন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪০ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৭
তিন বছরের সময় চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে বিজিএমইএ’র আবেদন

ঢাকা:  বিজিএমইএ’র বহুতল ভবন ভাঙতে তিন বছর সময় চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়েছে। বুধবার (০৮ মার্চ) বাংলানিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন আইনজীবী ব্যরিস্টার ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম। 

তিনি বলেছেন, আদালতের আদেশ অনুযায়ী তিন বছর সময় চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।

এর আগে ৫ মার্চ বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে কতো সময় লাগবে তা ৯ মার্চের মধ্যে আদালতে আবেদন করতে বলেছিলেন আপিল বিভাগ।

ওইদিন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ রিভিউ আবেদন খারিজ করে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার রায় বহাল রাখেন।  

আদালতে বিজিএমইএ’র পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। সঙ্গে ছিলেন ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম। আর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

ওইদিন আদালতের আনুষ্ঠানিকতা শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে তিন বছরের সময় আবেদন করা হয়েছিলো। আমরাও গুরুত্ব বিবেচনায় এক বছরের সময় চেয়েছিলাম। এখন বিজিএমইএ বৃহস্পতিবারের মধ্যে সময়ের আবেদন জমা দিলে আদালত ওই বিষয়ে আদেশ দেবেন। ’
   
গত ৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৩৫ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশিত হওয়ার পর রিভিউ আবেদন করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ ২ মার্চ এ মামলার শুনানির দিন ধার্য করেন। কিন্তু ২ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ ‘নট টুডে’ (আজকে নয়) আদেশ দেন। ফলে রোববার বিষয়টি শুনানির জন্য আসে। শুনানি শেষে গত বছরের ২ জুন হাইকোর্টের দেওয়া বিজিএমইএ ভবন ভাঙার রায়ই বহাল রাখেন প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।

১৯৯৮ সালের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজিএমইএ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ভবন নির্মাণ শেষ হলে ২০০৬ সালের ৮ অক্টোবর বিজিএমইএ ভবন উদ্বোধন করেন সে সময়কার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এরপর থেকে ভবনটি বিজিএমইএ'র প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

কিন্তু রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই কারওয়ান বাজার সংলগ্ন বেগুনবাড়ি খালে বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে উল্লেখ করে ২০১০ সালের ২ অক্টোবর একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই দিনই প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ডি এইচ এম মনির উদ্দিন।

পরদিন ৩ অক্টোবর বিজিএমইএ ভবন কেন ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হবে না, তার কারণ জানতে চেয়ে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে (সুয়োমোটো) রুল জারি করেন। এ রুলের ওপর শুনানিতে আদালতকে আইনি সহায়তা দিতে ২০১১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের সাতজন আইনজীবীকে 'আদালতের বন্ধু'  (অামিকাস কিউরি) নিয়োগ দেওয়া হয়।

ওই সাত আইনজীবী হলেন- বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ফিদা এম কামাল, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, আখতার ইমাম, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, মনজিল মোরসেদ ও পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ তার রায়ে বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ভবনটি নির্মাণের আগে ওই স্থানের ভূমি যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থায় ফিরিয়ে আনতেও নির্দেশ দেন বিজিএমইএকে।

একই বছরের ৫ এপ্রিল বিজিএমইএ’র আবেদনে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। পরবর্তী সময়ে আপিল বিভাগ স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরো বাড়ান।

এর দুই বছর পর ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ হাইকোর্টের ৬৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে ভবনটি ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলে ওই জমি জনকল্যাণে ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, হাতিরঝিল প্রকল্প একটি জনকল্যাণমূলক প্রকল্প।

আদালত বিজিএমইএ যাদের কাছে ওই ভবনের ফ্ল্যাট বা অংশ বিক্রি করেছে তাদের টাকা তাদের দাবি পাওয়ার এক বছরের মধ্যে ফেরত দিতেও বলেন।

হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপির পর লিভ টু আপিল করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের ২ জুন তা খারিজ হয়ে যায়। পরে বিজিএমই আবার এ রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৭
ইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।