ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

আদালত ভাংচুরে ব্যবস্থা নিতে সুপ্রিম কোর্টের চিঠি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৭
আদালত ভাংচুরে ব্যবস্থা নিতে সুপ্রিম কোর্টের চিঠি

ঢাকা: চট্টগ্রামে আদালতের এজলাস কক্ষ ভাংচুরের ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলকে চিঠি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।

চিঠিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে নেওয়া ব্যবস্থা সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টকে অবহিত করতেও বলা হয়।
 
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যানকে এ চিঠি দেন।

 
 
চিঠিতে বলা হয়, ‘গত ১৮ জানুয়ারি মানবপাচার আইনের এক মামলায় গ্রেফতারকৃত আইনজীবী ফজলুল কাদের ও তার স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তারের জামিন ও রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর করেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম শাহাদাৎ হোসেন ভূঁইয়ার আদালত’।
 
‘এ সময় কোনো কারণ ছাড়াই চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির কিছু আইনজীবী নজিরবিহীনভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত পেশাগত অসদাচরণ করেন। তাদের মধ্যে আইনজীবী জান্নাতুল ফেরদৌস মুক্তা আদালতের নথি ছুড়ে মারেন। আইনজীবী চন্দন বিশ্বাস, সাকিল, আউয়াল খান, টিআর খান, প্রদীপ দাশ, শিবলী, মাসুদ পারভেজ, মুস্তাফিজসহ আরও কয়েকজন আদালত প্রাঙ্গনে স্লোগান দিয়ে ও বিচারকদের নাম উল্লেখ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ আদালত কক্ষ ও বিচারকের খাস কামরা ভাংচুর করেন। এবং আদালতের মূল্যবান নথি তছনছ করাসহ বিচারককে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন বলে জানা যায়’।
 
‘এ সময় সংবাদ কর্মীরা ঘটনার ছবি তুলতে গেলে আইনজীবীরা তাদের বাধা দেন। অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজের ফটো সাংবাদিক উজ্জ্বল কান্তি ধরের ক্যামেরা কেড়ে নেন এবং তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন’।
 
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘২০০০ সালে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আইনজীবীদের অনুরুপ ভাংচুরের ঘটনায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয় এবং মামলায় সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা গ্রেফতার হন’।
 
‘প্রধান বিচারপতির নির্দেশে বর্তমান ঘটনায় অদ্যাবধি কোনো মামলা দায়ের হয় নাই। আদালতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের দায়িত্ব।
 
চিঠিতে বলা হয়, ‘প্রধান বিচারপতি মনে করেন, আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ বার কাউন্সিল এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ঘটনাটির সুষ্ঠু সমাধান করবে’।
 
‘না হলে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুণরাবৃত্তি এড়ানো যাবে না। আইনের শাসন ভেঙে পড়বে এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট হবে’।
 
‘আইনজীবীরা স্বাধীন আইন পেশায় নিয়োজিত থাকলেও তাদের কাছ থেকে কখনোই উপরোল্লিখিত আচরণ কাম্য নয়। নিঃসন্দেহে এহেন কর্মকাণ্ড নিন্দনীয় এবং গুরুতর পেশাগত অসদাচরণের সামিল। এ ধরনের আচরণকারীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই’।
 
চিঠিতে বলা হয়, ‘আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলকে বর্ণিত ঘটনায় জড়িত আইনজীবীদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে অত্র কোর্টকে অবহিত করতে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে অনুরোধ করছি’।
 
এদিকে ওই ঘটনার দিনই প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ভাংচুরের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দেন। তদন্ত কমিটি সেদিন থেকেই তদন্ত শুরু করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।