ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আইন ও আদালত

সভাপতি পদে এমপি

৩০ দিনের মধ্যে অ্যাডহক কমিটি করে নির্বাচন দিতে হবে

ইলিয়াস সরকার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৩ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৬
৩০ দিনের মধ্যে অ্যাডহক কমিটি করে নির্বাচন দিতে হবে

ঢাকা: যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডিতে সংসদ সদস্যরা (এমপি) সভাপতি পদে আছেন, যেসব প্রতিষ্ঠানে ৩০ দিনের মধ্যে অ্যাডহক কমিটি করে নির্বাচন দিতে হবে। এছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠানে বিশেষ কমিটি আছে সেখানেও ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে।

ইচ্ছা পোষণ করে সভাপতি হওয়ার বিধান বাতিল করে সংসদ সদস্যরা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি থাকতে পারবেন না বলে দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপিতে এমন নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রোববার (৩১ জুলাই) এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি হাতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারী আইনজীবী ড. ইউনুচ আলী আকন্দ।

তিনি বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায়ে ১২ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নির্দেশনাগুলো হলো- আইন থেকে সংসদ সদস্যদের অধিকারের ধারা ৫(১)(২) এবং বিশেষ কমিটি গঠনের ধারা ৫০ বাতিল করে ৬০ দিনের মধ্যে আইন সংশোধনের জন্য আইন সচিব ও শিক্ষা সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

যেসব প্রতিষ্ঠানে সংসদ সদস্যরা সভাপতি পদে আছেন যেসব প্রতিষ্ঠানে ৩০ দিনের মধ্যে অ্যাডহক কমিটি করে নির্বাচন দিতে হবে। পাশাপাশি নির্বাচনের মাধ্যমে সভাপতি বাছাই করতে একটি বিধান অবশ্য তৈরি করতে হবে।
এছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠানে বিশেষ কমিটি আছে সেখানেও ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দিতে বলা হয়েছে।

একটি রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ০১ জুন বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা ২০০৯ এর ৫ (২) এবং ৫০ ধারাকে বাতিল করে বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় দেন। এর মধ্যে ৫ ধারা হচ্ছে এমপিদের সভাপতি পদ ও ৫০ ধারা হচ্ছে বিশেষ কমিটি গঠন নিয়ে। আদালত দু’টি ধারাই বাতিল ও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করেছেন।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের প্রবিধানমালা ২০০৯-এর ৫  ও ৫০ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদনটি করেন আইনজীবী ড. ইউনুচ আলী আকন্দ ।

রায়ে বলা হয়েছে, ইচ্ছা পোষণ করে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব পালন এবং গভর্নিং বডির বিশেষ কমিটির বিধান অবৈধ। এর ফলে সংসদ সদস্যরা স্কুল-কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি থাকতে বা হতে পারবেন না।

এর আগে গত ১৩ এপ্রিল ওই রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব পালন এবং নির্বাচন ছাড়া কমিটি গঠন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধ্যাদেশের (১৯৬১) আওতায় ‘মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা-২০০৯ এর ৫ ধারা (গভর্নিং বডির সভাপতি মনোনয়ন) এর (১) উপ-বিধিতে বলা হয়েছে, ‘কোনো স্থানীয় নির্বাচিত সংসদ সদস্য তার নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এমন সংখ্যক উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতির দ্বায়িত্ব গ্রহণ করতে পারবেন’।

‘(২) উপ-বিধান ১ এর অধীন সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের জন্য স্থানীয় নির্বাচিত সংসদ সদস্য, তার নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত যেসব উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব গ্রহণ করতে ইচ্ছুক তার উল্লেখসহ লিখিতভাবে এ প্রবিধানমালার অধীন বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে তার অভিপ্রায় ব্যক্ত করবেন এবং এ অভিপ্রায়পত্র সংশ্লিষ্ট বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানগুলোর সভাপতি হিসেবে তার মনোনয়ন হিসেবে গণ্য হবে’।  

৫০ ধারায় বলা হয়েছে, ‘বিশেষ ধরনের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটি- বিশেষ পরিস্থিতিতে বোর্ড এবং সরকারের পূর্বানুমোদক্রমে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের কোনো বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ ধরনের গভর্নিং বডি বা ক্ষেত্রমতে ম্যানেজিং কমিটি করা যাবে’।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৯ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৬
ইএস/এএসআর

** এমপিরা সভাপতি হতে পারবেন না- হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।