ঢাকা, শনিবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সড়ক দুর্ঘটনা

সাংবাদিক মন্টুর পরিবারকে দিতে হবে ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৬
সাংবাদিক মন্টুর পরিবারকে দিতে হবে ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা

ঢাকা: প্রায় ২৬ বছর আগে পেপসি কোলার গাড়ি চাপায় নিহত দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন মন্টুর পরিবারকে এক কোটি ৬৯ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

সাংবাদিক মন্টুর স্ত্রী অধ্যাপক রওশন আখতার শুক্রবার (১৫ এপ্রিল ) বিকেলে বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ২০ জুলাই আপিল বিভাগ ক্ষতিপূরণের রায় বহাল রেখেছিলেন। কিন্তু এর মধ্যে রায়ের অনুলিপি প্রকাশ না হওয়ায় চলতি মাসে এটি আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আসে।

‘পুনরায় শুনানি শেষে বুধবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন। যাতে এক কোটি ৬৯ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। ’
 
আদালতে সাংবাদিক মন্টুর স্ত্রী রওশন আখতারের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খলিলুর রহমান। পেপসি কোলার (বাংলাদেশ বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড) পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
 
আইনজীবী খলিলুর রহমান বলেন, বিষয়টি পুন‍ঃশুনানি শেষে আপিল বিভাগ ক্ষতিপূরণের অর্থ নির্ধারণ করে মামলাটি নিস্পত্তি (ডিসপোজড অফ) করে গত বুধবার রায় দেন।
সাংবাদিন মন্টুর স্ত্রী রওশন আখতার বলেন, নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় এ মামলা পরিচালনা করে আসছি। এই দীর্ঘ সময়ের ধৈর্যের ফসল এ রায়।

‘যানবাহন আইন ভঙ্গ করে বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে আমার স্বামীর জীবনহানির ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে দায়ী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছিলাম। এ জাতীয় ঘটনায় দেশের নাগরিকরা এ রায়ে উপকৃত হবেন বলে আশা করছি। ’

১৯৮৯ সালের ৩ ডিসেম্বর পেপসি কোলার একটি ট্রাক কাকরাইলের আনন্দ ভবনের সামনে মোজাম্মেল হোসেন মন্টুকে চাপা দেয়।
 
পরে ১৬ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
 
১৯৯১ সালের ১ জানুয়ারি মোজাম্মেল হোসেন মন্টুর স্ত্রী রওশন আখতার ক্ষতিপূরণ চেয়ে ঢাকা তৃতীয় সাব জজ আদালতে মামলা করেন।
 
২০০৫ সালের ২০ মার্চ বিচারিক আদালত ৩ কোটি ৫২ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে দেন।
 
এর বিরুদ্ধে পেপসি কোলা হাইকোর্টে আবেদন করে। ২০১০ সালে ক্ষতিপূরণের টাকা কমিয়ে ২ কোটি ১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা নির্ধারণ করে রায় দেন হাইকোর্ট।
 
হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধেও পেপসি কোলা আপিল করে। ২০১৪ সালের ২০ জুলাই আপিল নিষ্পত্তি করে রায় দেন আপিল বিভাগ।

তবে মন্টুর পরিবারকে কী পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিবে তা পূর্ণাঙ্গ রায়ে পুননির্ধারণ করে দিবেন আপিল বিভাগ।

অদ্যবধি পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়নি। কিন্তু গত ১০ এপ্রিল ও ১৩ এপ্রিল আপিল আবেদনটি আবার কার্যতালিকায় পুনরায় শুনানির জন্য আসে বলে জানান রওশন আখতার।

তিনি বলেন, বুধবার আপিল বিভাগ আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দিয়ে আমাদের এক কোটি ৬৯ লাখ  টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন।
 
মোজাম্মেল হোসেন মন্টু ১৯৪৫ সালের ১৫ জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। কবি, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক হিসেবে সফল জীবনের অধিকারী মরহুম মন্টু ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর সাংবাদিকতা পেশাকে ব্রত হিসেবে নেন।

১৯৬৮ সালে তিনি দৈনিক সংবাদে সহ-সম্পাদক হিসেবে যোগ দিয়ে সাংবাদিকতা জীবন শুরু করেন। ১৯৮৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর মৃত্যুকালীন পর্যন্ত সংবাদের বার্তা সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৩ ঘণ্টা, এপিল ১৫, ২০১৪, আপডেট: ২১৩৫ ঘণ্টা
ইএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।