চাঁদাবাজির মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
রিমান্ডে যাওয়া অপর তিন আসামি হলেন—আবু সুফিয়ান, আব্দুর রহমান ওরফে মানিক এবং হাবিবুর রহমান ফরহাদ। এ ছাড়া শাহিন হোসেন নামে এক আসামিকে একদিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে রোববার রাতে তাদের আটক করে সেনাবাহিনী।
এরপর ক্লিনিকের মালিক আফরুজা শিল্পী বাদী হয়ে সোমবার সকালে মোহাম্মদপুর থানায় চাঁদাবাজির মামলা করেন। পরে সেই মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাত দিন করে রিমান্ডে চেয়ে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার এসআই নাজমুল ইসলাম।
সোমবার আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়ে মঙ্গলবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে। মঙ্গলবার শুনানির জন্য তাদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
মানিক এবং শাহিনের পক্ষে তাদের আইনজীবী মাসুদ পারভেজ এবং অন্য আসামিদের পক্ষে মাসুদ রানা রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিনের আবেদন করেন।
শুনানি শেষে আদালত চার আসামিকে দুই দিন রিমান্ডে নিয়ে এবং এক আসামিকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০ সেপ্টেম্বর রাতে শাহিন সন্তান প্রসব করাতে তার স্ত্রীকে সেইফ হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যান। নবজাতকের অবস্থা খারাপ দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। তবে শাহিন অনুরোধ করে বলেন, যেভাবে হোক তার স্ত্রীর সন্তান প্রসবের ব্যবস্থা করতে। পরে তার স্ত্রী মৃত সন্তান প্রসব করেন।
এজাহারে বলা হয়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি শাহিনকে জানায়। তিনি অর্থ দিতে চাইলেও মানবিক দিক বিবেচনা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো অর্থ না নিয়েই ছাড়পত্র দিয়ে দেয়।
বাদীর অভিযোগ, ২২ সেপ্টেম্বর দুপুরে আসামিরা হাসপাতালে এসে বাচ্চা মারা যাওয়ার ঘটনায় মামলা না করার বিনিময়ে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে আসামিরা হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে আসামিরা হাসপাতাল থেকে একজনকে তুলে নিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। তখন এক লাখ ২০ হাজার টাকা দিলে তারা চলে যায় এবং বাকি টাকা দ্রুত সময়ের মধ্যে দিতে বলে। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে আসামিরা মোবাইলে ফোন করে বাকি টাকা দাবি করতে থাকে এবং নানা ধরনের হুমকি দেয়।
এরপর রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আসামিরা তাদের ফোন করে হাজারীবাগের পশ্চিম ধানমন্ডি ৫ নম্বর রোডে ডেকে নিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা নেয় এবং অবশিষ্ট টাকা দ্রুত সময়ের মধ্যে না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আফরুজা শিল্পী বিষয়টি মৌখিকভাবে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে জানালে তারা গিয়ে আসামিদের আটক করে।
এর আগে গত মে মোসে হাক্কানী পাবলিশার্সের মালিকের বাসায় মধ্যরাতে ঢোকার চেষ্টা করে আটক হয়েছিলেন রাব্বিসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন নেতা। পরে মুচলেকা নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা আবদুল হান্নান মাসউদের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ।
কেআই/এমজেএফ