ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২, ২৭ জুন ২০২৫, ০১ মহররম ১৪৪৭

আইন ও আদালত

মাসদার হোসেন মামলায় রিভিউ নিয়ে আদেশ রোববার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:২১, জুন ২৬, ২০২৫
মাসদার হোসেন মামলায় রিভিউ নিয়ে আদেশ রোববার

বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ সংক্রান্ত মাসদার হোসেন মামলায় নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাবিধি পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদনের ওপর আগামী রোববার আদেশের জন্য দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ আদেশের জন্য দিন ঠিক করেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেনের মামলায় (বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ) ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেওয়া হয়। ওই রায়ের ভিত্তিতে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল।

পরে ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত গেজেট জারি করা হয়। ৩ জানুয়ারি সে গেজেট গ্রহণ করে আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট।

আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৮ সালে এমন একটি কাজ করেছে, যেখানে নিম্ন আদালতের স্বাধীনতাকে সম্পূর্ণভাবে কার্টেল করে দেওয়া হয়েছে। একটি শৃঙ্খলাবিধি করা হয়েছে, যেটা ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারি আপিল বিভাগ গ্রহণ করে একটি আদেশ দিয়েছিলেন। এই শৃঙ্খলাবিধির মাধ্যমে আমাদের নিম্ন আদালতের জুডিসিয়াল অফিসারদের আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যাস্ত করা হয়েছে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বলে। ওই আদেশকে পুনর্বিবেচনা চেয়ে আমরা আবেদন করেছিলাম। আজকে সেই আবেদনের শুনানি হয়েছে।

তিনি বলেন, শুনানিতে আমরা বলেছি, যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তখনকার দিনের বিচার বিভাগকে অ্যাসল্ট করে তৎকালীন প্রধান বিচারপতিকে বিদেশে পাঠিয়ে এই শৃঙ্খলাবিধিকে গ্রহণ করা হয়েছিল ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে। যেখানে আগে নয়জন বিচারপতি ভিন্ন আদেশ দিয়েছিলেন। পরে প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগ এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করে পাঁচজন বিচারপতির মাধ্যমে সেই শৃঙ্খলাবিধি গ্রহণ করা হয়েছিল। অথচ সেটি ছিল অধস্তন বিচারকদের জন্য সবচাইতে বেশি অন্যায় ও অমর্যাদাকর এবং স্বাধীনতার পথে বড় বাধা।

আমরা বলেছি, এটি বিচার বিভাগের ইতিহাসে নজিরবিহীন। বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে তৎকালীন সরকার বাধ্য করেছিল এ আদেশ দিতে। এটি অনিবার্যভাবে দ্রুত রিভিউ করা প্রয়োজন। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, আমাদের বক্তব্য আদালত মনযোগ দিয়ে শুনেছেন। অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যও শুনেছেন। আমাদের আরও কিছু গ্রাউন্ড (যুক্তি) দিতে বলেছেন। আগামী রোববার আদেশের জন্য আসবে বিশেষ বেঞ্চ আকারে।

সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার ব্যাপারে শিশির মনির বলেন, তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা তার ‘ব্রোকেন ড্রিম’ বইয়ে এ বিষয়ে ঘটনা লিখেছেন। একদিন দেখা গেল তিনি আদালতে ওঠেননি। বলা হয়েছিল তিনি অসুস্থ, বাড়িতে আছেন। জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা আদালতকে প্রশ্ন করেছিলেন প্রধান বিচারপতি কোথায়, তখন সরকারের পক্ষে বলা হয়েছিল তিনি অসুস্থ। অথচ খবর নিয়ে জানা গেল তিনি অসুস্থ নন। তিনি নিজেও বলেছিলেন, তিনি অসুস্থ নন। তারপরেও তাকে এজলাসে আসতে দেওয়া হয়নি। তিনি বিদেশে গিয়েছেন। বিদেশ থেকে আর ফেরত আসতে পারেননি। সেখান থেকে পদত্যাগপত্র দিতে বাধ্য করেছেন। তার বিদায়ের পর বিধিটি গ্রহণ করা হয়েছে। একজনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বানিয়ে তাদের বাধ্য করে এই আদেশকে গ্রহণ করা হয়েছে।

ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।