ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সালাম মুর্শেদীর সেই বাড়ি গণপূর্তের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২০ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৪
সালাম মুর্শেদীর সেই বাড়ি গণপূর্তের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ

ঢাকা: রাজধানীর গুলশানে সাবেক ফুটবলার ও সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদীর সেই বাড়ি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে তিন মাসের মধ্যে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে সালাম মুর্শেদীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অনীক আর হক।  

রায়ের পর অনীক আর হক বলেন, সালাম মুর্শেদীর গুলশানের যে বাড়িটি সেটি আসলে পরিত্যক্ত সম্পত্তি। এটি নিয়ে দীর্ঘ শুনানির পর আজ রায় দিয়েছেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন- এটা পরিত্যক্ত সম্পত্তি। সরকারের লিস্টে রয়েছে। তাই এটি হস্তান্তর (সালাম মুর্শেদীর কাছে) সম্পূর্ণ অবৈধ।

এছাড়া আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে রায় পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এটি বুঝে পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার বরাবরে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।  

২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

রিট আবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর গুলশান-২ এর ১০৪ নম্বর সড়কে সি ই এন (ডি)-২৭ এর ২৯ নম্বর বাড়িটি ১৯৮৬ সালের অতিরিক্ত গেজেটে ‘খ’ তালিকায় পরিত্যক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত। কিন্তু আব্দুস সালাম মুর্শেদী সেটি দখল করে বসবাস করছেন।

রিটে ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল, ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি ও ২০২২ সালের ৪ জুলাই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানকে দেওয়া গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিনটি চিঠি যুক্ত করা হয়েছে।

২০১৫ ও ২০১৬ সালে দেওয়া চিঠিতে পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে বাড়িটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও আব্দুস সালাম মুর্শেদী কীভাবে বাড়িটি দখল করে আছেন রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে এ ব্যাখ্যা চেয়েছিল পূর্ত মন্ত্রণালয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে চিঠি আমলে না নেওয়ায় ফের ২০২২ সালের ৪ জুলাই চিঠি দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে ভবনটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও কীভাবে রাজউক চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে সেটির নামজারি ও দলিল করার অনুমতি দেওয়া হলো সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে ব্যাখ্যা দিতে অনীহা দেখিয়েছেন।

রিটের পর ২০২২ সালের ১ নভেম্বর আদালত রুল জারি করে আদেশ দেন। রুলে বাড়িটি বেআইনিভাবে দখলে রাখার অভিযোগে আবদুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। আর বাড়ি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র হলফনামা আকারে দাখিল করতে নির্দেশ দেন।

পরে পাশাপাশি আদেশ ও কোর্টের কার্যক্রম ছাড়া এ মামলার বিষয়বস্তু নিয়ে কোনো প্রকার প্রচার-প্রচারণা না করতে উভয়পক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি শুনানিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী আদালতকে জানান, আদালতের নির্দেশের পর বাড়িটি নিয়ে দুদক অনুসন্ধান করে। অনুসন্ধানে বাড়িটির বিষয়ে জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। মৌখিক ও দালিলিক সাক্ষীর ভিত্তিতে দুদক সর্বসম্মতিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে যাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ পেয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ৫ ফেব্রুয়ারি মামলা করেছে। এখন মামলাটি তদন্তনাধীন।

পরে এ সংক্রান্ত রুলের ওপর ৩ মার্চ শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৪, আপডেট: ১৪০১ ঘণ্টা
ইএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।