ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

সংবাদে শিশুদের ছবি-পরিচয় প্রকাশ নয়: বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৪
সংবাদে শিশুদের ছবি-পরিচয় প্রকাশ নয়: বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম

ঢাকা: শিশুদের সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। যাতে পরিচয় প্রকাশ না করা হয়।

সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সাইবার নিরাপত্তা আইন ও আদালত সাংবাদিকতা শীর্ষক এক আলোচনায় আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ মন্তব্য করেন।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম।

ফোরামের সভাপতি শামীমা আক্তারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের পরিচালানায় আলোচনায় অংশ নেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

কিশোর গ্যাংকে একটি সামাজিক সমস্যা উল্লেখ করে ‘সুপ্রিম কোর্ট স্পেশাল কমিটি ফর চাইল্ড রাইটস’ এর সভাপতি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, সাম্প্রতিককালে কিশোর গ্যাং গ্রেপ্তার হচ্ছে, আমাদের সমাজে কিশোর গ্যাং আসলেই একটা সমস্যা। কিশোর গ্যাং কেন হয়, কী কারণে হয়, সমাজ বিজ্ঞানীরা আছেন তারা ভালোভাবে দেখতে পারবেন কীভাবে প্রিভেন্ট করা যায়। কিন্তু আইন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টিকোণ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মনে করছে এ ধরনের কিশোর গ্যাংদের গ্রেপ্তার করা প্রয়োজন। মানুষ কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় ভীষণ অতিষ্ঠ। আমি যখন বিভিন্ন জায়গায় যাই আমাদের বলে এ কিশোর গ্যাং আসলে কেউ কিশোর না। হতে পারে সবাই কিশোর না, ১৫ থেকে ১৬ বছর বয়স। আমাদের শিশু আইনে ১৮ বছর।

তিনি আরও বলেন, শিশু আইন ও হাইকোর্টের রায়ে বলা আছে, শিশুদের সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। পরিচয় যাতে প্রকাশ না করা হয়। কিন্তু আমি কয়েকদিন ধরে দেখছি আইন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে প্রবণতা আছে কে কতটুকু কাজ করছে তা তুলে ধরার। তারা হয়তো ডাকলো, ডেকে মিডিয়ায় ব্রিফ করলো। প্রাথমিকভাবে ধরে নিতে হবে এরা কিশোর। কারো যদি বয়স কম বেশি হয় সে বিষয়ে প্রশ্ন এলে সেটা আদালত নির্ধারণ করবে।

বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের গ্রেপ্তার হওয়া বা ধরা আইনগত বাধা নেই। এটা করতেই পারে। কিন্তু এদের ছবি দেওয়া মিডিয়ায়, পত্রিকায় সেভাবে পরিচয় প্রকাশ করা, এটা কিন্তু আইনে বারিত করছে। এখন আপনাকে (সাংবাদিকদের) ডেকে ব্রিফ করলো। করলেই কী আপনি ছবিসহ নাম প্রকাশ করে দেবেন? সেক্ষেত্রে আপনাকে সংযত হয়ে আইনটা মেনে সংবাদ পরিবেশন করবেন ছবি যাতে প্রকাশিত না হয়।  

আদালত সাংবাদিকতার বিষয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, যতটুকু সত্য ততটুকু আপনি (সাংবাদিক) করবেন। ধরেন, কোনো বিচারকের চারটি ফ্ল্যাট আছে। আপনি লিখে দিলেন চারটি ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে কিছু কিছু সূত্র জানিয়েছে, তার আরও ৩ থেকে ৪টি ফ্ল্যাট আছে। ততটুকু দেবেন যতটুকু আপনি প্রমাণ করতে পারবেন। যদি আপনার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়, অবশ্যই ডিপেন্ড করবেন। আমি মনে করি এ ধরনের সাহসী সাংবাদিকতা অবশ্যই থাকা দরকার। কারণ আমরা কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। বিচারক হই, যেই হই। আমাদের জবাবদিহিতা আছে জনগণের কাছে, আইনের কাছে, সংবিধানের কাছে। তবে সাবধানতার সঙ্গে করতে হবে, যাতে বিচারকের মানহানি না হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৪
ইএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।