ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

আইন ও আদালত

সুপ্রিম কোর্টের আদেশে যে ৩ আসনে ফিরল নৌকা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২৩
সুপ্রিম কোর্টের আদেশে যে ৩ আসনে ফিরল নৌকা

ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া নৌকা প্রতীকের ৫ প্রার্থীর প্রার্থিতা বিভিন্ন অভিযোগে বাতিল করেছিলেন নির্বাচন কমিশন। এই ৫ জনই সুপ্রিম কোর্টের  দ্বারস্থ হয়েছেন।

এর মধ্যে তিন জন প্রার্থিতা ফেরত পেলেও দুই জন ব্যর্থ হয়েছেন।

যারা ফেরত পেয়েছেন তারা হলেন, ফরিদপুর-৩ আসনের প্রার্থী শামীম হক, ময়মনসিংহ-৯ আসনের প্রার্থী মেজর জেনারেল (অব.) এম এ সালাম ও যশোর-৪ আসনের প্রার্থী এনামুল হক বাবুল।

যারা ফেরত পাননি তারা হলেন, কক্সবাজার-১ আসনের প্রার্থী সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও বরিশাল-৪ আসনের শাম্মী আহমেদ। ফলে এই দুই জন এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না।

মেজর জেনারেল (অব.) এম এ সালাম

মনোনয়নপত্র যাচাই–বাছাইয়ে ময়মনসিংহ-৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম এ সালামের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেছিলেন সেখানকার রিটার্নিং কর্মকর্তা। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন একই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান। ১৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে (ইসি) অনুষ্ঠিত শুনানিতে রিটার্নিং কর্মকর্তার দেওয়া সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছে কমিশন। এর ফলে এম এ সালামের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। ঋণখেলাপি হওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।

আবদুস সালামের বিরুদ্ধে ইসিতে আবেদনটি করেছিলেন আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান। তিনি এবার দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

পরে এম এ সালাম হাইকোর্টে রিট করেন। ১৮ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ময়মনসিংহ-৯ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মেজর জেনারেল (অব.) এম এ সালামের প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশনের আদেশ স্থগিত করেন হাইকোর্ট।

এরপর ওই আসনের স্বতন্ত্রপ্রার্থী  আনোয়ারুল আবেদীন খান হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন।

বুধবার এ আবেদনে সাড়া দেননি চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। ফলে তিনি নির্বাচন করতে আর কোনো আইনি বাধা নেই।

এনামুল হক বাবুল

এনামুল হক বাবুলের বিরুদ্ধে ঋণখেলাপির অভিযোগ এনে আপিল করেছিলেন একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সুকৃতি কুমার মণ্ডল।  এছাড়া এনামুল হক বাবুলের মনোনয়নপত্রের বৈধতার বিরুদ্ধে ওই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী রনজিত কুমার রায় আপিল করেছিলেন।

শুনানি শেষে ১৩ ডিসেম্বর প্রার্থীতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

পরে এনামুল হক বাবুল হাইকোর্টে রিট করেন।  ১৮ ডিসেম্বর বিচারপতি মো.ইকবাল কবির ও বিচারপতি এস এম  মনিরুজ্জামানের বেঞ্চ তার রিট সরাসরি খারিজ করে  আদেশ দেন।

এরপর তিনি আপিল বিভাগে আবেদন করেন। ১৯ ডিসেম্বর এনামুল হক বাবুলকে নির্বাচনে অংশ নিতে সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।

শামীম হক

দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগ এনে শামীম হকের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আপিল করেছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যবসায়ী এ কে আজাদ। শামীম হক নেদারল্যান্ডসের নাগরিক বলে অভিযোগ আনেন তিনি। এরপর শুনানি শেষে ১৫ ডিসেম্বর আপিল মঞ্জুর করে শামীম হকের মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেয় ইসি। তার বিরুদ্ধে রিট করেন শামীম হক।  

১৮ ডিসেম্বর সোমবার বিচারপতি মো. ইকবাল কবির ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের বেঞ্চ তার রিট সরাসরি খারিজ করে দেন।

পরে ১৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার আপিল বিভাগে প্রার্থিতা ফেরত চেয়ে শামীম হক আবেদন করেন। শুনানি শেষে শামীম হককে নির্বাচনে অংশ নিতে সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন আপিল বিভাগের  অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।

শাম্মী আহমেদ 

শাম্মী আহমেদ ও একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথ পরস্পরের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেছিলেন। শাম্মী আহমেদ অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক হলেও তা গোপন করেছেন বলে অভিযোগ ছিল পঙ্কজের।  

নির্বাচন কমিশন বর্ণিত আপিলকারীর দ্বৈত নাগরিকত্ব সম্পর্কে তথ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঢাকার অস্ট্রেলিয়া দূতাবাসের সহায়তায় সংগ্রহের জন্য নির্দেশনা দেয়।  

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকার অস্ট্রেলিয়া দূতাবাসের সহায়তায় শাম্মী আহমেদের অস্ট্রেলিয়ার দ্বৈত নাগরিকত্ব সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে জরুরি ভিত্তিতে ১৪ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠানোর পর ১৫ ডিসেম্বর শাম্মী আহমেদের মনোনয়ন বাতিল করে দেন। আর একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথের প্রার্থিতা বহাল রাখেন।

পরে শাম্মী আহমেদ হাইকোর্টে রিট করেন। যেটি ১৮ ডিসেম্বর সোমবার খারিজ হয়ে যায়।

পরে তিনি ১৯ মঙ্গলবার আপিল বিভাগে আবেদন করেন।  শুনানি শেষে চেম্বার আদালত‘নো অর্ডার’র আদেশ দেন। ফলে হাইকোর্টের আদেশবহাল থাকলো। এ কারণে তিনি আর নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না।

সালাহ উদ্দিন

ঋণখেলাপির দায়ে সালাহ উদ্দিনের প্রার্থিতা বাতিল করেছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেছিলেন সালাহ উদ্দিন। ১৫ ডিসেম্বর সে আপিল নামঞ্জুর করে দেয় কমিশন। এরপর তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। ২০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের প্রার্থী সালাহ উদ্দিন আহমদের রিট সরাসরি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২৩
ইএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।