ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

আলো পড়ল আড়ালে থাকা লিটল ম্যাগাজিনের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২০
আলো পড়ল আড়ালে থাকা লিটল ম্যাগাজিনের

কলকাতা: কলকাতাবাসীর কাছে লিটল ম্যাগাজিন মানেই ছিল প্রতিষ্ঠান বনাম বিরোধী। এই বৈরিতা ঘুচিয়ে এবারের ৪৪তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা বিশেষ মর্যাদা পেল লিটল ম্যাগাজিন। পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড আয়োজিত কলকাতা সাহিত্য উৎসব, যার পোশাকি নাম ‘কলকাতা লিটারেরি ফেস্ট’-এ বৃহস্পতিবার(৬ ফেব্রুয়ারী) উদ্বোধনী ভাষণ সেই লিটল ম্যাগাজিনকেই ঘিরে।

প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখলেন একদা 'এক্ষণ' নামে লিটল ম্যাগাজিনের সম্পাদক, অভিনেতা, নাট্যকার সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।

বড় পুঁজি নির্ভর প্রতিষ্ঠানিকতার বাইরেই লিটল ম্যাগাজিনের জগৎ।

তাই এ ধরনের ম্যাগাজিনগুলি ভাবনা, বৈচিত্র্য, বিতর্কে যতই বাড়ুক না কেন, প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি অনেকটা অধরা থাকে। এবার তাকে স্বীকৃতি দিল পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড। একদা কলকাতা বইমেলায় লিটল ম্যাগাজিনকে ঘিরে ছিল নানা বিরোধ। ক্রমে সেই জায়গা নিয়েছে পারস্পরিক মর্যাদার সম্পর্ক। এদিন গিল্ডের তরফে সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়ের কথায় তা আরও স্পষ্ট হল। অবশ্য তিনি নিজেও একজন প্রখ্যাত প্রকাশক।

ত্রিদিববাবুরা মনে করেন, বড় বড় ভাবনার সূতিকাগার এইসব ছোট পত্রিকা ও তার প্রকাশনা। তাদের প্যাভেলিয়ন কলকাতা বইমেলাকে অন্যান্য শহরের বইমেলার থেকে আলাদা করে তুলেছে। পাশাপাশি ‘কলকাতা লিটারেরি ফেস্ট’-এর ডিরেক্টর সুজাতা সেনের দাবি, দেশে এবং এ রাজ্যে নানা সাহিত্য উৎসব আয়োজিত হয়। কিন্তু অবাধ লিটল ম্যাগাজিনে অংশগ্রহণে ‘লিট ফেস্ট’ এককথায় অনন্য।  

উদ্বোধনী ভাষণ দেন অধুনালুপ্ত ‘এক্ষণ’ লিটল ম্যাগাজিনের সম্পাদক সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, তার বক্তব্যের বিষয় ‘লিটল ম্যাগাজিন, বড় ভাবনা’। স্মৃতিচারন করেন ৮০ দশক সত্যজিৎ রায়ের প্রচ্ছদে কিভাবে লড়াই করে প্রতিষ্ঠিত করে এক্ষনকে। এরসাথে দুঃখ প্রকাশ করে বলেল, অনেক সাহিত্য সমৃদ্ধ লিটল ম্যাগাজিন হারিয়ে যাচ্ছে বা প্রতিষ্ঠিত করতে পারছে না। তবে নিজে যেহেতু অভিনয় জগতে ছিলেন, তাই কর্পোরেট থেকে স্পন্সর তুলতে অসুবিধা হয়নি। তবে অাজ তা সবই ইতিহাস। সেই ইতিহাসে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনল দর্শকরা।

তিনদিনের এই সাহিত্য উৎসবে ২৫টি অধিবেশন থাকবে। এবারের মেলার ‘থিম দেশ’রাশিয়া ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, বাংলাদেশ ও ভারতের বহু রাজ্যের প্রতিনিধি, সাহিত্যিক-শিল্পী-বুদ্ধিজীবীরা তাতে অংশ নেবেন। সাহিত্যের সঙ্গে সঙ্গীতের আসরও থাকবে প্রতিদিন। এছাড়া সদ্য প্রয়াত ‘নবনীতা দেব সেন স্মারক বক্তৃতা’ প্রতিদিন হবে ‘লিট ফেস্ট’এ।

এছাড়া এবারে থিমকান্ট্রি রাশিয়া থেকে প্রকাশ পেলো সঙ্গীত শিল্পীর উষাউত্থুপে বায়োগ্রাফি। যেখানে জানা যাবে তার জীবনের নানা বিষয়। যা নিয়ে অালোচনা সভা ছিল রাশিয়ান প্যাভেলিয়নে। উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং সঙ্গীত কন্যা।

এদিন সন্ধ্যায় নবনীতা কন্যা নন্দনা দেব সেন তার মায়ের স্মৃতি-বক্তৃতা দেন। লেখিকার শিশু সাহিত্যই ছিল তার আলোচ্য।

এছাড়া প্রখ্যাত কংগ্রেসের সাংসদ শশী থারু, তার অর্ন্যতম পরিচিতি লেখক হিসেবে। যা আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত। আগামী শনিবার বিকেল সাহিত্য উৎসবে শশী বলবেন, ‘বিশৃঙ্খলা ও অন্ধকারাচ্ছন্নতা’ নিয়ে।

তবে এদিনও দেখা গেল সিএএ এনআরসি বিষয়ক বইয়ের রমরমা। রাজনৈতিক দলগুলির স্টলে তো আছেই, তারই সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত প্রকাশনা কিংবা লিটল ম্যাগাজিন বা সামাজিক সংগঠনের স্টল, সর্বত্রই পোস্টার ‘নো এনআরসি’, ‘নো সিএএ’, ‘নো এনপিআর’। ‘এখন বিসম্বাদ’ পত্রিকার ২৫ বছরের সংখ্যাটি এদিন প্রকাশিত হল—‘নাগরিকত্ব সংখ্যা’। পাশাপাশি মেলা প্রাঙ্গনে বামছাত্র সংগঠনগুলো প্রচার করলেন নো সিএএ, নো এনআরসি। সব মিলিয়ে মেলার বৃহস্পতিবার নবমদিনে জমজমাট ছিল অান্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২০
ভিএস/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ভারত এর সর্বশেষ