ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

‘বাংলার স্বার্থই আগে’ দেখিয়ে দিলেন মমতা

রক্তিম দাশ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১১
‘বাংলার স্বার্থই আগে’ দেখিয়ে দিলেন মমতা

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমুল কংগ্রেসের দলীয় পত্রিকা সাপ্তাহিক ‘জাগো বাংলা’য় মমতা বন্দোপাধ্যায় বাংলাদেশের সফরে না যাওয়ার কারণ হিসেবে রাজ্যের স্বার্থকেই তুলে ধরে ব্যাখা করা হয়েছে।

পত্রিকাটির বর্ষ-৭, ৩৪৬ সংখ্যা, যা প্রকাশিত হয়েছে ৯ সেপ্টেম্বর।

প্রথম পাতায় ব্যানার হেড লাইন করে বলা হয়েছে, ‘বাংলার স্বার্থ আগেই দেখিয়ে দিলেন মমতা’। তিন কলাম জুড়ে প্রতিবেদনটি লিখেছেন অভিবাদন বসু।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, সবার আগে বাংলার স্বার্থ তা আবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। জলচুক্তির প্রয়োজন রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছেন, তিস্তার জলবন্টন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি হোক। কিন্তু এমন কোন চুক্তি নয়, যাতে বাংলার ক্ষতি হয়। উত্তরবঙ্গের কৃষি সংঙ্কটের মুখে পড়ে।

সাবেক বামফ্রন্ট সরকার ও সিপিএমের সমলোচনা করে বলা হয়েছে, বাম জমানায় ফারাক্কা ব্যারেজের জল বন্টন চুক্তি করে হলদিয়া আর কলকাতা বন্দরকে শুকিয়ে দিয়েছিল সিপিএম। তখন আন্তর্জাতিক নেতা সাজার ইচ্ছায় মশগুল জ্যোতিবাবু একবারও ভাবেন নি ফারাক্কা থেকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত জল পদ্মায় পাঠালে আদতে দক্ষিণবঙ্গের কৃষি মার খাবে, শুকিয়ে যাবে নদী বন্দরগুলি। হয়েছেও তাই।

এরপরই মমতার প্রশংসা করে বলা হয়েছে, মমতা বন্দোপাধ্যায় অন্য মানুষ। তার কাছে সবার আগে বাংলার স্বার্থ। কৃষকের স্বার্থ। সাধারণ মানুষের স্বার্থ। সেই জন্যই তিস্তার জল বন্টন নিয়ে দিল্লি যে খসড়া করেছিল তা তিনি মেনে নিতে পারেন নি।

কেন মমতা এই চুক্তি মানেন নি তার যুক্তিও দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। বলা হয়েছে, ২৫ হাজার কিউসেক জল সুখা মশুমে রাজ্য দিতে পারে বাংলাদেশকে। এতে সে দেশের যেমন লাভ হবে, তেমনই উত্তরবঙ্গের কৃষি মার খাবে না। এমন ফর্মুলাতেই রাজি ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

মনমোহন সিং সরকারের প্রতি অভিযোগ করে প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, কেন্দ্রের একটি মহল এই বিষয়টি নিয়ে অহেতুক রাজনৈতিক জটিলতার সৃষ্টি করে। ফলে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পক্ষে সম্ভব হয়নি বাংলার স্বার্থ বিকিয়ে দেওয়া। তিনি জলচুক্তিতে রাজি হননি।

কেন্দ্রে সরকার মমতার অবস্থান দেরিতে হলেও সেটা বুঝতে পেরেছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর যুক্তি মেনে আপাতত জলচুক্তি স্থগিত থেকেছে। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ঢাকায় গিয়েছিলেন। অন্যান্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। যেহেতু জল বন্টনে যথাযথ ফর্মুলা বের হয়নি, সেজন্যই বাংলাদেশ সফর বাতিল করেন মুখ্যমন্ত্রী।

কেন প্রকাশ্যে জলচুক্তির বিরোধীতা করলেন না মমতা তাও বলা হয়েছে দলীয় পত্রিকা জাগো বাংলায়। বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকা যাওয়ার কথা ছিল জননেত্রীরও। কিন্তু যে চুক্তিতে বাংলার স্বার্থকে নষ্ট করা হবে, তা তিনি মানবেন না। রাজ্য যখন ২৫ হাজার কিউসেক পর্যন্ত জল ছাড়তে রাজি ছিল, তখন ৫০ হাজার কিউসেক জল দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। জননেত্রী প্রতিবাদ করেছিলেন। শেষমেশ ৩৩ হাজার কিউসেকের একটি ফর্মুলা সামনে আনা হয়। যেহেতু এটি আন্তর্জাতিক বিষয়, সেইজন্য সৌজন্য দেখিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেন নি।

প্রতিবেদনের একদম শেষ প্যারায় এসে আবারও তার প্রশংসা করে বলা হয়েছে, মমতা বন্দোপাধ্যায় দেখিয়ে দিলেন বাংলার স্বার্থ রক্ষা করতে তিনি কতটা সাহসী, কতটা আন্তরিক। স্বভাবতই রাজ্যের মানুষ খুশি। খুশি উত্তরবঙ্গের জনতা। গোটা দেশের মানুষও মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বাংলার প্রতি ভালবাসা দেখে মুগ্ধ। এমন মুখ্যমন্ত্রী জন্য আমরাও গর্বিত।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৩২ ঘণ্টা,সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা এর সর্বশেষ