ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৪ জুন ২০২৪, ২৬ জিলকদ ১৪৪৫

ইসলাম

যে সময়গুলোতে মানুষের দোয়া কবুল হয়

মাহমুদা নওরিন, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৫
যে সময়গুলোতে মানুষের দোয়া কবুল হয়

আল্লাহতায়ালা পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু। মানুষের ওপর তার দয়ার কোনো শেষ নেই।

আল্লাহতায়ালার অসংখ্য নিয়ামত ও দয়ার অন্যতম একটি দয়া হলো- মানুষের পাপমুক্তির জন্য দোয়া কবুল করা। আল্লাহ বান্দার দোয়া কবুল করার জন্য নানা উসিলা খুঁজেন। তাই তিনি দোয়া কবুলের জন্য দিনরাতের মাঝে এমন অনেক সময় ও মুহূর্ত রেখেছেন, যে সময় দোয়া করলে তা কবুল হয় বলে হাদিসে বিভিন্নভাবে বলা হয়েছে। দোয়া কবুলের সেই মুহূর্তগুলো হলো-

রাতের শেষ তৃতীয়াংশের দোয়া
প্রতিটি রাতের শেষ তৃতীয়াংশেই দোয়া কবুল করা হয়। শুধু শবেবরাত ও শবেকদরে নয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক দিন রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহতায়ালা সবচেয়ে নিচের আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আমাকে ডাকছো, আমি তোমার ডাকে সাড়া দেবো। কে আমার কাছে চাইছো, আমি তাকে তা দেবো। কে আছো আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকারী, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেবো। – সহিহ মুসলিম : ১২৬৩

শেষ রাতের যে কোনো সময়ের দোয়া
সাহাবি হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘রাতে এমন একটি সময় আছে, যে সময়টাতে কোনো মুসলিমের এমনটা হয় না যে, সে এ পৃথিবী কিংবা পরকালের জীবনের জন্য আল্লাহর কাছে কিছু চাইল, আর তাকে তা দেওয়া হলো না। আর এটা প্রতিটি রাতেই ঘটে। ’ -মুসলিম : ১২৫৯

আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া
হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। ’ -তিরমিজি : ১৯৬

জুমার দিনের দোয়া
জুমার দিন এমন অসাধারণ একটি নেয়ামতের সময় আছে, যে সময়টাতে দোয়া কবুল হওয়ার বিশুদ্ধ বর্ণনা রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে এসেছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের একদিন শুক্রবার নিয়ে আলোচনা করলেন এবং বললেন, 'জুমার দিনে একটি সময় আছে, যে সময়টা কোনো মুসলিম নামাজ আদায়রত অবস্থায় পায় এবং আল্লাহর কাছে কিছু চায়, আল্লাহ অবশ্যই তার সে চাহিদা মেটাবেন এবং তিনি (রাসূল সা.) তার হাত দিয়ে ইশারা করে সে সময়টা সংক্ষিপ্ততার ইঙ্গিত দেন। ' –সহিহ বোখারি : ৫৯২১

[প্রিয় পাঠক বাংলানিউজের আয়োজনে গ্রামীণ ফোন থেকে আপনি পেতে পারেন বিভিন্ন ধরনের ইসলামী তথ্যসেবা। আজ রয়েছে জান্নাত প্রসঙ্গ। আপনি চাইলেই তা শুনে নিতে পারেন। এ জন্য গ্রামীণ ফোনের যেকোনো নম্বর থেকে ডায়াল করতে হবে ৮৮৭৭ নম্বরটি। আপনি সাবস্ক্রাইব করে দিনভর শুনতে পারেন এই আয়োজন। সঙ্গে রয়েছে সবশেষ নিউজ আপডেট, রাশিফল, ট্রাফিক আপডেটও। আর সারাদিনের সব তথ্যের জন্য খরচ মাত্র ১ টাকা। এখনই সাবস্ক্রাইব করতে ডায়াল করুন ৮৮৭৭। ] 

জমজমের পানি পান করার সময়ের দোয়া
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, 'জমজম পানি যে নিয়তে পান করা হবে, তা কবুল হবে। ' -ইবনে মাজা : ৩০৫৩

সেজদার সময়ের দোয়া
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, 'যে সময়টাতে বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে নিকটতম অবস্থায় থাকে তা হলো সেজদার সময়। সুতরাং তোমরা সে সময় আল্লাহর কাছে বেশি বেশি চাও। ' –সহিহ মুসলিম : ৭৪৪

রাতের বেলা ঘুম থেকে জাগার পরের দোয়া
সাহাবি হজরত উবাদা বিন সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে কেউ রাতের বেলা ঘুম থেকে জাগে আর বলে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির, আলহামদুলিল্লাহি ওয়া সুবহানাল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ এবং এরপর বলে, 'আল্লাহুম মাগফিরলি (আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন) অথবা আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করে, তাহলে তার দোয়া কবুল করা হবে এবং সে যদি অজু করে নামাজ আদায় করে, তাহলে তার নামাজ কবুল করা হবে। ’ –সহিহ বোখারি : ১০৮৬

ফরজ নামাজের পরের দোয়া
সাহাবি হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ! কোন সময়ের দোয়া দ্রুত কবুল হয়? তিনি বললেন, রাতের শেষ সময়ে এবং ফরজ নামাজের পরে। ' –তিরমিজি : ৩৪২১

বৃষ্টি ও আজানের সময়কার দোয়া
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, 'দুই সময়ের দোয়া ফেরানো হয় না। আজানের সময়ের দোয়া আর বৃষ্টি পড়ার সময়কার দোয়া। ' -আবু দাউদ : ২১৭৮

এছাড়াও কদরের রাতের দোয়া, নির্যাতিত ব্যক্তির দোয়া, মুসাফিরের দোয়া, সন্তানের জন্য মা-বাবার দোয়া, রোজাদার ব্যক্তির দোয়া, বিশেষ করে ইফতারের সময়কার দোয়া, অনুপস্থিত মুসলিম ভাই বা বোনের জন্য অন্তর থেকে উৎসারিত দোয়া, জিহাদের মাঠে শত্রুর মুখোমুখি দোয়া, আরাফার (হজের দিন) দিনের দোয়া, অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়ার পর সেই ব্যক্তির দোয়া কবুল হয়ে থাকে বলে বিভিন্ন হাদিসে বিভিন্ন সূত্রে বর্ণনা করা হয়েছে।


 
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৫
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।