ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ইসলাম

রাশিয়ার গ্র্যান্ড মুফতিকে সেবা পদক প্রদান করল প্রেসিডেন্ট পুতিন

মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় সম্পাদক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৫
রাশিয়ার গ্র্যান্ড মুফতিকে সেবা পদক প্রদান করল প্রেসিডেন্ট পুতিন রাশিয়ার গ্র্যাণ্ড মুফতি রাভিল জায়নুদ্দীন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সেদেশের মুফতি কাউন্সিল এবং মুসলিম বিষয়ক কার্যালয়ের প্রধান ও রাশিয়ার গ্র্যান্ড মুফতি রাভিল জায়নুদ্দীনকে সেবা পদক প্রদান করেছে। Russia mufties Council এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এ জন্য মুফতি রাভিলকে অভিনন্দনও জানানো হয়েছে।

প্রেসিডেন্টের অফিস থেকে ঘোষিত এই পদক অত্যন্ত সম্মানীয় পদক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার এ পদকপ্রাপ্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন রাশিয়ার মুফতি পরিষদের উপ-সভাপতি রুশান আব্বাসভ, কালিমুল্লাহ সাজিভ ও রাশিয়ার বিশিষ্ট ইসলামী বিশেষজ্ঞ রোমান সিলতিফ।

প্রেসিডেন্ট পুতিন সেদেশের জনগণের মধ্যে নৈতিক শিক্ষার প্রচার, আধ্যাত্মিকতার বিস্তার এবং বিভিন্ন সেবামূলক চিন্তা বাস্তবায়নের জন্য তাকে এই পদক প্রদান করা হয়। পদক প্রদানকালে বলা হয়, মুফতি রাভিল জনগণের মধ্যে সামঞ্জস্যবিধান এবং শান্তি বিস্তারসহ অন্যান্য সেবামূলক কাজে বেশ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। এই কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ মুফতি রাভিলকে এই সেবা পদক প্রদান করা হচ্ছে।

এর আগে রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্র মেদভেদেভ ২০০৯ সালে মুফতি রাভিলকে স্বদেশ পরিসেবার জন্য বিশেষ পদক প্রদান করেছিলেন।

১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে বলশেভিক বিপ্লবের পর রাশিয়ায় সব ধর্ম ও ধর্মীয় কাজ নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। পরে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ধর্মীয় স্বাধীনতা আইন পাশ হলে ইসলাম তার অন্তর্নিহিত সব শক্তি নিয়ে আবার জেগে ওঠে। হাল সময়ে শত শত মুসলিম সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও ধর্মীয় বিদ্যালয় সরকারের সংশিষ্ট বিভাগে নিবন্ধিত হয়েছে এবং ইতোমধ্যে বিপুল পরিমানে নতুন মসজিদ নির্মিত হয়েছে। এর মধ্যে কাজান ক্রেমলিনে নির্মিত কুল শরীফ মসজিদ অন্যতম। এটা রাশিয়ার বুকে মুসলিম রেনেসাঁর প্রতীক হিসেবে সগর্বে দাঁড়িয়ে।

গর্বাচেভের ধর্মীয় স্বাধীনতা নীতির ফলে তাতারিস্তান, উত্তর ককেশাস ও মস্কোতে নতুন স্বাধীন মুফতির আবির্ভাব ঘটে। পরবর্তীতে শায়খ রাভিল যায়নুদ্দীনের নেতৃত্বে রাশিয়ায় মুফতিদের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল গঠিত হয়। কাউন্সিল সরকারী প্রতিষ্ঠান, কেন্দ্রীয় গণমাধ্যম, দেশ-বিদেশের ইসলামী সংগঠন ও সংস্থার সাথে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ বজায় রেখে চলেন। এবার সেই কাজের স্বীকৃতি মিলল প্রেসিডেন্ট পদক পাওয়ার মধ্য দিয়ে।

বর্তমানে রাশিয়ায় গড়ে ওঠা গুরুত্বপূর্ণ ধমীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে রয়েছে— মস্কো মুসলিম কলেজ, রাশিয়ান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কাজান মুহাম্মদীয়া মাদ্রাসা ও বুগুরুসলান মাদ্রাসা। এছাড়া দাগেস্তান ও ইঙ্গুশেটিয়ায় অনেক ছোট ছোট মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্থায়িত্ব ও সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য মুসলিম উম্মাহর সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।

ধর্মীয় অনুশাসন ও নৈতিক মূল্যবোধ মেনে চলার ফলে রাশিয়ার মুসলমানদের জীবনধারা সুশৃংখল ও সুনিয়ন্ত্রিত। ফলে অনেক নৃতাত্বিকগোষ্ঠী সুস্থ জীবনধারার সন্ধানে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিচ্ছেন। এটা সন্দেহাতীতভাবে ইসলামের ক্রমবিকাশ ধারায় ইতিবাচক অগ্রগতি। এরই প্রেক্ষিতে সমাজতত্ত্ববিদগণ পূর্বাভাস দিয়েছেন যে, জনসংখ্যা বিষয়ক এ প্রবণতা যদি আগামী দিনগুলোতে অব্যাহত থাকে তাহলে ২০৫০ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়ায় মুসলিম জনসংখ্যার হার ১৫% থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫১% এ উন্নীত হবে। বর্তমানে রাশিয়ান ফেডারেশনে মুসলমানদের সংখ্যা দু’কোটি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৪ ঘন্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।