ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ইসলাম

ইউক্রেনের প্রথম নারী হাফেজ

মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় সম্পাদক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৫
ইউক্রেনের প্রথম নারী হাফেজ ছবি: প্রতীকী

ইউক্রেন আয়তনের দিক থেকে ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। জনসংখ্যা ৪৫ মিলিয়ন।

দেশটির একদিকে রাশিয়া এবং অন্যদিকে ইউরোপ। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ১৯৯১ সালে দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার পর থেকে ইউক্রেন ইউরোপের সাথে সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করে আসলেও তারা পুরোপুরি রাশিয়ার প্রভাবমুক্ত হতে পারেনি। ইউক্রেনের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিও খুব একটা শান্ত নয়। ফলে সঙ্গত কারণেই ইউক্রেন সংবাদের শিরোনাম হয় প্রায়ই। তবে এবার রাজনৈতিক কোনো কারণে ই‌উক্রেন খবরের শিরোনাম হয়নি। হয়েছে ইউক্রেনের প্রথম একজন নারীর পূর্ণ কোরআনের হাফেজ হওয়ার খবরের কারণে।

১৭ বছর পূর্বে ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী ইউক্রেনীয় নারী ‘ওরা ফাতেমাভ’ পবিত্র কোরআনে কারিম হেফজ করতে সক্ষম হয়েছেন। সিঙ্গাপুরের জনপ্রিয় নারী বিষয়ক ওয়েবসাইট www.aquila-style.com সম্প্রতি এমনই একটি খবর প্রকাশ করেছে। খবরে বলা হয়, ৩৫ বছর বয়সী ওরা ফাতেমাভ হলেন ইউক্রেনের প্রথম নারী, যিনি সম্পূর্ণ কোরআনে কারিম মুখস্থ করতে সক্ষম হয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে ওরা বলেন, ‘ইউক্রেনের ভাষা এবং আরবি ভাষার মাঝে পার্থক্য অনেক বেশি, তাছাড়া সময়ের স্বল্পতাসহ অন্যান্য সমস্যার কারণে কখনই ভাবিনি যে, পূর্ণ কোরআন শরীফ আমি মুখস্থ করতে সক্ষম হব। তার পরও এটা সম্ভব হয়েছে, আল্লাহতায়ালার অশেষ কৃপায়। এ জন্য অামি আল্লাহতায়ালার দরবারে অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। ’

ওরা ফাতেমাভ দুই সন্তানের জননী। তিনি অন্য নও মুসলিমদেরকেও কোরআন শিক্ষার ব্যাপারে সহযোগিতা ও উৎসাহ প্রদান করে থাকেন।

উল্লেখ্য যে, হাজার বছর পূর্বে ইউক্রেনে ইসলামের প্রবশে ঘটেছে এবং ইউক্রেনের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫ লাখ মুসলমান। এদের অধিকাংশই ক্রিমিয়াতে বসবাস করেন।

গত বছর থেকে ইউক্রেনে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হলেও ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের বেশ কয়েকটি সড়কে ইসলামের পরিচয় তুলে ধরার জন্য মুসলমানরা বিভিন্ন সাইনবোর্ড স্থাপন করেছে। সেদেশে ইসলাম বিরোধী কার্যক্রম বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে মুসলমানরা এ উদ্যোগ গ্রহণ করে।

রাজধানীর প্রধান সড়কসমূহে স্থাপিত ১৭টি সাইনবোর্ডে পবিত্র কোরআনে কারিমের আয়াত ও হাদিস লেখা রয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপটির উদ্দেশ্য হচ্ছে ইউক্রেনের জনগণের কাছে ইসলামকে পরিচয় করানো ও ইসলাম সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা দিতে।  

ইউক্রেনের মুসলমানরা ইসলামের প্রচারের জন্য সেদেশে নানাবিধ কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। ‘আসসালামু আলাইকুম’ নামে মুসলমানদের স্বতন্ত্র একটি রেডিও স্টেশন রয়েছে। অনুরূপভাবে তাদের রুশ এবং আরবি ভাষায় ‘আর রায়েদ’ নামে সাপ্তাহিক এবং পাক্ষিক পত্রিকাও রয়েছে। রয়েছে ‘আনসার’ নামে একটি আলাদা সাংস্কৃতিক সংস্থা। এছাড়া ইউক্রেনে তাবলিগ জামাতের কাজও চালু রয়েছে।

২০১১ সালে ইউক্রেনের ‘কিয়েভ’ শহরে মুসলমানদের জন্য প্রথম মসজিদ উদ্বোধন হয়। ৩২০০ বর্গমিটার জমির ওপর নির্মিত এই মসজিদে তিন হাজারেরও বেশি মুসল্লি একসাথে নামাজ পড়তে পারবেন। এই মসজিদের একটি মিনারের উচ্চতা ২৭ মিটার। ১৯৯৪ সালে জনগণের সাহায্যে এই মসজিদ তৈরির কাজ শুরু হয়; কিন্তু বিভিন্ন সমস্যার কারণে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০১১ সালে এবং ওই বছরের ২ ডিসেম্বর প্রায় চল্লিশ দেশের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে মুসলমানদের প্রথম মসজিদ ‘আর রাহমান’ সরকারীভাবে উদ্বোধন করা হয়।

এর আগে কিয়েভের মুসলমানরা নামাজসহ বিভিন্ন ইসলামিক অনুষ্ঠান ইউক্রেনের ইসলামী সেন্টারে পালন করত। কিন্তু ইসলামী সেন্টারের নামাজখানাটি ছোট হওয়ার কারণে অনেকে বাধ্য হয়ে ইসলামী সেন্টারের বাইরেও নামাজ আদায় করত। সেই থেকে পরিকল্পনা শুরু হয় এই মসজিদটি নির্মাণ করার।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৪ ঘন্টা, মার্চ ২৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।