ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ইসলাম

হাতে লেখা প্রাচীন ও দুর্লভ কিছু কোরআন শরিফ

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১১ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০১৫
হাতে লেখা প্রাচীন ও দুর্লভ কিছু কোরআন শরিফ

আল্লাহতায়ালা মানুষের হেদায়েতের জন্য হজরত জিবরাইল (আ.)-এর মাধ্যমে শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর পর্যায়ক্রমে ২৩ বছর ধরে নাজিল করেছেন পবিত্র কোরআনে কারিম। কোরআনের বিধি-বিধান পালন করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর ফরজ।

কোরআন একটি নিখুঁত, নির্ভুল ও পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার নাম। এটা বিশ্ব মানবতার মুক্তির এক মহাস্মারকও বটে।

৬১০ খ্রিস্টাব্দের ২৭ রমজান ক্বদরের রাতে হেরা পর্বতের গুহায় কোরআন নাজিল হওয়া শুরু হয়। কোরআন নাজিল হকে সময় লাগে ২২ বছর ৫ মাস ১৪ দিন।

বর্তমানে আমর যেভাবে গ্রন্থাকারে কোরআন দেখি শুরুতে এমন ছিল না- এটা পাঠকমাত্র সবাই অবগত। ‍এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন বর্ণমালার লক্ষাধিক কোরআন শরিফের সন্ধান পাওয়া গেছে। সে সব প্রাচীনতম কোরআন শরিফের পাণ্ডুলিপির সন্ধান পাওয়া গেছে। সেগুলো থেকে প্রমাণিত হয় যে, উদ্ধারকৃত প্রাচীনতম এসব কোরআনের পাণ্ডুলিপি সমকালীন প্রাকৃতিক আকৃতিকে ধারণ করে সংরক্ষণ করা হত। তেমন কিছু ঐতিহাসিক ও দুর্লভ কোরআনের পান্ডুলিপির ছবি উপস্থাপন করা হলো—

১. এই ছবিটি প্রাচীনতম একটি কোরআন শরিফের। যা ৬৪৯ থেকে ৬৭৫ খ্রিস্টাব্দের কোনো এক সময় লেখা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে জার্মানের টুবিনাগিন বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে এ কোরআন শরিফটির সন্ধান পাওয়া যায়।

২. এ কোরআন শরিফটি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর হিজরতের ২০০ থেকে ৩০০ বছর পর লেখা হয়েছে। ৫৩৬ পাতা বিশিষ্ট এই কোরআন শরিফটি চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ‘চুং চং’ নামক অঞ্চলে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

৩. এ কোরআন শরিফটি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর হিজরতের ২০০ থেকে ৬০০ বছর পর লেখা হয়েছে। এ কোরআনটিও চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আবিষ্কার করা হয়েছে। বর্তমানে প্রাচীনতম এই কোরআন শরিফটি চীনের সবচেয়ে প্রাচীন ‘জিয়ান মসজিদে’ সংরক্ষিত আছে।

৪. এ কোরআন শরিফটি ১২০০ বছর পূর্বেকার। ২০১৩ সালে ইস্তাম্বুলের ‘বোড্রম মসজিদের’ ইমাম এ কোরআনটির সন্ধান দেন। বর্তমানে এ কোরআন শরিফটি ইস্তাম্বুলের জাতীয় গ্রন্থাগারে রক্ষিত আছে।

৫. এ কোরআন শরিফটি ‘মাসহাফে উসমান’ নামে বেশি প্রসিদ্ধ। ইসলামের তৃতীয় খলিফা হজরত উসমান (রা.)-এর শাসনামলে এটি লেখা হয়েছে এবং বর্তমানে এ কোরআন শরিফটি তুরস্কের ন্যাশনাল যাদুঘরে রক্ষিত আছে। এ কোরআন শরিফটি কোনো নুকত্বা এবং এরাব (জের, জবর, পেশ) ছাড়া লিখিত। ১০৮৭ পাতা বিশিষ্ট এ কোরআন শরিফটির ওজন ৮০ কিলোগ্রাম।

৬. কতক ঐতিহাসিকের অভিমত হলো- এ কোরআন শরিফটি অষ্টম শতাব্দীতে মক্কা অথবা মদিনায় লেখা হয়েছে। এটি ‘মায়িল কোরআন’ নামে প্রসিদ্ধ। এ কোরআন শরিফটি ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে লন্ডনের ব্রিটেন যাদুঘরে রক্ষিত আছে। এ হস্তলিখিত কোরআন শরিফেও কোনো প্রকার জের, জবর ও পেশ ব্যবহার করা হয়নি। বর্তমানে এ কপিটির ভঙ্গুরতার জন্য অতি যত্ন সহকারে রাখা হয়েছে।

৭. এ কোরআন শরিফটি ৬৫০ থেকে ৬৭৫ সালের অন্তর্গত কোনো এক সময় লেখা হয়েছে বলে গবেষকরা মনে করছেন। কোরআন শরিফটি মেষচর্মের ওপর লিখিত। এ কোরআন শরিফটি কায়রোর ফাসতাত নামক অঞ্চলের আমরু মসজিদ থেকে আবিষ্কার করা হয়েছে। বর্তমানে এ কোরআন শরিফটির একাংশ ফ্রান্সের জাতীয় গ্রন্থাগারে রক্ষিত রয়েছে।

৮. এ কোরআন শরিফটি হিজরতের আনুমানিক ২০০ বছর পর লেখা হয়েছে। কোরআন শরিফটি ইয়েমেনের এক যুবক ২০১২ সালে ‘আল ডালি’ শহরের একটি গুহা থেকে আবিষ্কার করেছেন।

৯. এ কোরআন শরিফটি ইয়েমেনের সাফা শহরের বড় মসজিদ থেকে কর্মচারীরা ১৯৭২ সালে আবিষ্কার করেন। এ কুরআন শরিফটি অষ্টম শতাব্দীর শেষভাগে লেখা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এ কোরআন শরিফের প্রাচীন পাণ্ডুলিপিটি নিয়ে এখনও বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা গভীর গবেষণা করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘন্টা, মার্চ ০৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।