ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

সিরিয়ায় তুরস্কের অভিযানকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলছে রাশিয়া 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৯
সিরিয়ায় তুরস্কের অভিযানকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলছে রাশিয়া 

সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে তুরস্কের চলমান অভিযানের নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। তুরস্ককে রুখতে কুর্দিদের সহায়তায় এরই মাঝে সীমান্তবর্তী এলাকায় সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিরীয় সরকার। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তুর্কি ও সিরীয় বাহিনীর মধ্যে কোনো ধরনের সংঘর্ষ মেনে নেবে না বলেও জানিয়েছে বাশার আল আসাদ সরকারের মিত্র রাশিয়া। 

সিরিয়ায় নিযুক্ত মস্কোর বিশেষ দূত আলেকসান্দর লেভরেন্তেভ’র বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।  

খবরে বলা হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরকালে এক বিবৃতিতে লেভরেন্তেভ সিরিয়ায় তুর্কি অভিযানের সমালোচনা করে বলেন, তুরস্কের এ সামরিক অভিযান ‘অগ্রহণযোগ্য’।

তাই আমরা এটা চলতে দিতে পারি না। তুর্কি ও সিরিয়ান কর্মকর্তাদের ‘লাইন অব কন্ট্যাক্ট’ অনুযায়ী সংঘর্ষ এড়ানোর কথা ছিল।  

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অভিমত, অভিযানের মাধ্যমে তুরস্ক ওই ‘লাইন অব কন্ট্যাক্ট’ ভঙ্গ করেছে। এ ‘লাইন অব কন্ট্যাক্ট’ মেনেই ২০১৫ সাল থেকে রুশ সেনাবাহিনী তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে টহল দিয়ে আসছে।

সিরিয়ায় আংকারার এ অভিযানে রাশিয়া-তুরস্ক আগাম মতৈক্য ছিল কিনা জানতে চাওয়া হলে লেভরেন্তেভ বলেন, আমরা সবসময় তুরস্ককে সংযত থাকতে বলে এসেছি। এবং সিরীয় সীমান্তে যে কোনো ধরনের সামরিক অভিযান ‘অগ্রহণযোগ্য’। সীমান্ত অঞ্চল রক্ষার দায়িত্ব সিরীয় সরকারের। তাই আমরা কখনোই ওই অঞ্চলে তুরস্কের সামরিক অভিযানের চিন্তাকে সমর্থন দেইনি। তুরস্কের এ অভিযানে দেশটির উত্তরাঞ্চলে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা বিপন্ন ও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠার আশংকা রয়েছে বলেও জানান রুশ দূত।  

এদিকে তুর্কি অভিযান নিয়ে রাশিয়ার এমন বিরোধী মন্তব্যে আংকারা-ক্রেমলিন সম্পর্কে উত্তেজনা দেখা দিতে পারে বলেও আশংকা করা হচ্ছে।  

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সিরিয়ায় তুরস্কের চলমান অভিযানের নিন্দা জানিয়েছে। এরই মাঝে এর জেরে সোমবার (১৪ অক্টোবর) তুরস্কের দুই মন্ত্রণালয় ও তিন মন্ত্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন সরকার।  

গত ৯ অক্টোবর থেকে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে সেনা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে আঙ্কারা। এ অভিযানে এখন পর্যন্ত ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত ও প্রায় ৩ লাখের মতো মানুষ বাস্তুহারা হয়েছে বলে খবরে বলা হচ্ছে। জাতিসংঘের মতে, এ অবস্থা চলতে থাকলে প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষ ঘরহারা হতে পারে।

এদিকে, তুরস্কের এই অভিযানের মধ্যেই উত্তরাঞ্চলের আইন ইসা বন্দিশিবিরে থাকা জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সদস্যদের আত্মীয়দের মধ্য থেকে অন্তত ৮০০ জন পালিয়ে গেছে। শনিবার (১২ অক্টোবর) কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্স (এসডিএফ) জানায়, তুরস্কের হামলা অব্যাহত থাকলে  কুর্দিদের পক্ষে বন্দিশিবির পাহারায় থাকা সম্ভব নয়।

কুর্দি মিলিশিয়ামুক্ত করে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলকে ‘নিরাপদ ভূমি’ ঘোষণা করতে চায় তুরস্ক। এ অঞ্চলটিকে তুরস্কে অবস্থানরত ৩৬ লাখ সিরীয় শরণার্থীর জন্য বাসযোগ্য করে তোলার পরিকল্পনা তুর্কি সেনাবাহিনীর।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১৩২, ২০১৯ 
এফএম/এইচজে 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ