ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

১৮ বছরে প্রথম ছুটি: ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ডে মোদী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৯
১৮ বছরে প্রথম ছুটি: ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ডে মোদী বেয়ার গ্রিলসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: দুর্ধর্ষ অভিযাত্রিক হিসেবে বেয়ার গ্রিলসের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। বন-জঙ্গল, পাহাড়ের প্রতিকূল পরিবেশে তার বিপজ্জনক সব অভিযান দেখতে টেলিভিশনের সামনে বসে থাকেন অনেকেই। সম্প্রতি এমনই এক অভিযানে বেয়ারের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত সোমবার (১২ আগস্ট) রাতে প্রচারিত হয়েছে ‘ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড’-এর এ পর্বটি।

এদিন হিমশীতল পরিবেশে বাঘ-হাতিতে ভরা জঙ্গলের মধ্য দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে খোলামেলা কথা বলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। জানালেন তার গরিব পরিবারে জন্ম, কষ্টের সঙ্গে বেড়ে ওঠা, দেশের জন্য বিরতিহীন সংগ্রামের কথা।

   

উত্তরাখণ্ডের জিম করবেট ন্যাশনাল পার্কের মধ্যে নদীর পাড় দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বেয়ার গ্রিলস জানান, নদীটিতে অসংখ্য কুমিরের বাস। এসময় মোদী জানান, তার দারিদ্র্যপীড়িত ছোটবেলার কথা। তাদের বাড়িতে কোনো বাথরুম ছিল না, প্রতিদিন পুকুরে গোসল করতে হতো। একদিন একটি কুমিরের বাচ্চা খুঁজে পেয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি। এর জন্য মায়ের হাতে মারও খেতে হয়েছিল তাকে।

নদীর পাড়ে বিশ্রাম নিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী ও বেয়ার গ্রিলস।  ছবি: সংগৃহীত

ছোটবেলার কথা বলতে গিয়ে বিজেপি নেতা জানান, তার বাবা মৌসুমের প্রথম বৃষ্টি আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করতেন। প্রতি বছর ২৫-৩০টি পোস্ট কার্ড কিনে ‘আমাদের গ্রামে বৃষ্টি হয়েছে’ লিখে স্বজনদের কাছে পাঠাতেন তিনি।  

টানা দ্বিতীয়বার নির্বাচিত ভারতের প্রধানমন্ত্রী জানান, একবার তার চাচা পরামর্শ দিলেন, দারিদ্র্য দূর করতে তারা কাঠ কেটে লাকড়ি বানিয়ে বিক্রি করতে পারে। কিন্তু, এতে বাধ সাধলেন তার দাদী। তিনি বললেন, গাছের প্রাণ আছে। এটা পরিবেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  

অভিযানে বেয়ার গ্রিলস ও নরেন্দ্র মোদীর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল নদী পার হওয়া। পাড় দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে একসময় কাঁদার মধ্যে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পেয়ে মোদীকে সাবধান হতে বলেন বেয়ার। পরে, গাছের ডাল দিয়ে বর্শা বানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাতে দেন তিনি।   

নদী পার হচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী ও বেয়ার গ্রিলস।  ছবি: সংগৃহীত

পরে, বিশেষ ধরনের ভেলায় ওঠেন দু’জন। এসময় বৃষ্টি শুরু হলেও তাতে খুব একটা বিচলিত মনে হয়নি নরেন্দ্র মোদীকে। বেয়ার জানতে চান, তার কখনো ভয় লেগেছে কি-না। লাগলে তা কীভাবে মোকাবিলা করেছেন? জবাবে মোদী জানান, ভয় কখনো তাকে স্পর্শ করেনি। একারণে এর কোনো উত্তর তার কাছে নেই। তিনি সবকিছুই ইতিবাচক ভাবে দেখেন, একারণে তিনি কোনো কিছুতেই অসন্তুষ্ট হন না।

বিজেপি নেতা জানান, তরুণ বয়সে যখন তিনি বাড়ি ছেড়েছেন, তখন থেকেই প্রকৃতির সঙ্গে তার ভালোবাসা শুরু। এর টানে হিমালয় পর্যন্ত ছুটে গিয়েছেন। সেখানে বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে অনেকদিন কাটিয়েছেন, শিখেছেন অনেক কিছু।

নরেন্দ্র মোদী ও বেয়ার গ্রিলস।  ছবি: সংগৃহীত

একবার বেয়ার গ্রিলস জানতে চান, তিনি কখনো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন কি-না। মোদী জানান, প্রথমে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর ছিলেন ১৩ বছর। এরপর, গত পাঁচ বছর ধরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু, সবসময় লক্ষ্য ছিল একটাই- দেশের উন্নয়ন।

তিনি জানান, এ অভিযানকে যদি ছুটি হিসেবে ধরা হয়, তাহলে এটি হবে গত ১৮ বছরের মধ্যে তার প্রথম ছুটি।  

বেয়ার গ্রিলসের সঙ্গে এ ধরনের দুর্ধর্ষ অভিযানে এর আগে অংশ নিয়েছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, টেনিস খেলোয়াড় রজার ফেদেরার, অভিনেতা জেক গিলেনহলের মতো তারকারা।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।