ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

ইরানের পারমাণবিক চুক্তিভঙ্গে গুরুত্ব দিচ্ছে না ইইউ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৯
ইরানের পারমাণবিক চুক্তিভঙ্গে গুরুত্ব দিচ্ছে না ইইউ ফেদেরিকা মোগারিনি। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ক্ষমতাধর ছয় দেশের সঙ্গে হওয়া পারমাণবিক চুক্তি ভেঙে ইরান নির্ধারিত সীমার ওপর ইউরেনিয়াম মজুদ করায় খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইউ)। এমনকি, তেহরানের নেওয়া সব কার্যক্রম বন্ধ করে পরিস্থিতি আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলেও বিশ্বাস তাদের।  

গত সোমবার (১৫ জুলাই) বেলজিয়ামের ব্রাসেলস শহরে ইরান ইস্যুতে জরুরি বৈঠকে বসেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।  

বৈঠক শেষে ইউ’র ফরেন পলিসি চিফ ফেদেরিকা মোগারিনি বলেন, কার্যত (ইরান) যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, সবই প্রতিবর্তনযোগ্য।

আমরা তাদের সেসব ফিরিয়ে নিয়ে পরিপূর্ণভাবে চুক্তিতে ফিরে আসার আহ্বান জানাই।  

তিনি বলেন, চুক্তিকারী কোনো দেশই (ইরানের) বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে না। তারা এমন কোনো বিতর্কিত পদক্ষেপ নেবে না, যা নিষেধাজ্ঞা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

এর আগে, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট বলেন, চুক্তিটি বাঁচানোর এখনো ছোট একটি সুযোগ আছে। পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে ইরান এখনো অন্তত এক বছর দূরে আছে।  

ব্রাসেলসের এ বৈঠকে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি পারমাণবিক চুক্তিটি পুনর্বহাল করতে সব ধরনের সহযোগিতায় সম্মত হয়েছে।

২০১৫ সালে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের শর্তে ‘পাওয়ার সিক্স’ বলে খ্যাত ছয়টি (যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি) দেশের সঙ্গে পরমাণু কর্মসূচি সীমিতকরণের চুক্তি করে ইরান। চলতি বছর একতরফাভাবে ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্র। পরে, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ট্রাম্প প্রশাসন। পাশাপাশি, বেশ কয়েকটি বিষয়ে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও পুনর্বহাল করে হোয়াইট হাউজ।

যদিও, যুক্তরাষ্ট্রের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইরান। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জবাবে ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়ানোর ঘোষণা দেয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।  

এছাড়া, ওমান উপসাগরে তেলবাহী জাহাজে হামলার ঘটনাতেও ইরানকে দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যে থাকা তার মিত্র দেশগুলো। হামলায় তেহরানকে অভিযুক্ত করে বিভিন্ন ‘তথ্য-প্রমাণ’ উপস্থাপন করেছিল ওয়াশিংটন। যদিও সব অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছে ইরান।

এর মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে আরও এক হাজার সৈন্য মোতায়েনের ঘোষণা দেয় পেন্টাগন। এরপর ‘নিজেদের’ আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা ড্রোন ভূপাতিত করে ইরান। এতে, উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র বলে পরিচিত যুক্তরাজ্যের সঙ্গেও ইরানের সম্পর্ক খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। সম্প্রতি, জিব্রাল্টার প্রণালিতে ইরানের একটি ট্যাংকার আটক করে ব্রিটিশ র‌য়্যাল মেরিন। জাহাজটি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা ভেঙে সিরিয়া যাচ্ছিল বলে অভিযোগ করা হয়।

এর জবাবে ইরান বলেছিল, তাদের জাহাজটি দ্রুত ছেড়ে না দিলে ব্রিটিশ ট্যাংকার আটকানো হবে। এ ঘটনাকে ‘এক ধরনের ডাকাতি’ আখ্যা দিয়ে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া বার্তা দেয় তেহরান।

এর সপ্তাহখানেক পরই পারস্য উপসাগরে কয়েকটি ইরানি নৌকা একটি ব্রিটিশ ট্যাংকারের (তেলবাহী জাহাজ) গতিরোধ করার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ তোলে যুক্তরাজ্য। যদিও, বরাবরে মতো এ অভিযোগও অস্বীকার করেছে ইরান।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।