ঢাকা, শনিবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৭ জুলাই ২০২৪, ২০ মহররম ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ইইউর ‘কালো টাকার’ তালিকায় সৌদি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯
ইইউর ‘কালো টাকার’ তালিকায় সৌদি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: সন্ত্রাসী অর্থায়ন ও অর্থপাচারের ওপর নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণে কালো টাকায় হুমকি সৃষ্টি করছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। আর এসব দেশের শীর্ষ পর্যায়ের একটি তালিকা তৈরি করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ তালিকায় ঢুকে গেছে সৌদি আরব। রয়েছে পানামা এবং নাইজেরিয়াসহ নতুন করে মোট সাতটি দেশ।

ইউরোপীয় কমিশনের এই তালিকাতে এর আগে ১৬টি দেশের নাম ছিল। বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সে তালিকায় আরও সাতটি দেশের নাম যোগ হয়ে ২৩টিতে পৌঁছাল।

কমিশনটি বলছে, এসব দেশের এমন ‘নগণ্য কর্মকাণ্ডকে’ বিচারের আওতায় আনা হবে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনার পর অর্থপাচারের বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এই তালিকাটি করা হয়েছে।

এতে ইইউর দেশগুলো তাদের সঙ্গে সৌদি আরবসহ তালিকায় থাকা অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যকার অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

ইউরোপের কমিশনার ফর জাস্টিস ভেরা জোরোভা বিবৃতিতে বলেছেন, আমরাই অর্থপাচারের বিরুদ্ধে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কঠোর নীতি নির্ধারণ করেছি। তারপরও অন্য কোনো দেশ থেকে কালো টাকা যাতে আমাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় না আসে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

দেশগুলোকে এসব ঘাটতি দ্রুত গতিতে প্রতিকারের আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, সংঘটিত অপরাধ ও সন্ত্রাসবাদের মূলে রয়েছে এসব কালো টাকা।

স্ট্রাসবার্গের একটি সংবাদ সম্মেলনকে তালিকাটির প্রস্তাব করা জারোভা বলেন, রাজ্য এটিতে বাধা দেবে না বলেই তিনি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন।

তালিকাটি তৈরির ফলে অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর বিভিন্ন অর্থনৈতিক অনুমোদন পেতে কোনো ঝামেলা হবে না। তবে ইউরোপীয় ব্যাংকগুলোকে সেসব দেশগুলোর গ্রাহক এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে লেনদেনের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োগ করতে বাধ্য করবে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সৌদি প্রেস এজেন্সি থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে তালিকাটিতে তাদের অন্তর্ভুক্ত করে কমিশনের নেওয়া সিদ্ধান্তের ওপর দুঃখ প্রকাশ করেছে তারা।

সৌদি অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জাদানের উদ্ধৃতি দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অর্থ পাচার এবং সন্ত্রাসের অর্থায়নের মোকাবিলা করতে সৌদি আরব প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং সেই লক্ষ্য অর্জনে তারা কাজ করে যাচ্ছে।

ব্রাসেলসের এই তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের চারটি অঙ্গরাজ্যসহ লিবিয়া, বোতসওয়ানা, ঘানা, সামোয়া ও বাহামাও ছিল।

অন্যান্য তালিকায় রয়েছে আফগানিস্তান, উত্তর কোরিয়া, ইথিওপিয়া, ইরান, ইরাক, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, সিরিয়া, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, তিউনিশিয়া ও ইয়েমেন।

তবে বসনিয়া হার্জেগোভিনা, গায়ানা, লাওস, উগান্ডা এবং ভানুয়াতুকে তালিকা থেকে সরানো হয়েছে।

সম্প্রতি পানামাতে অর্থপাচারের বিরুদ্ধে কঠিন নীতিমালা নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে এই তালিকা থেকে তাদের নাম সরাতে অনুরোধ করেছে দেশটি।

তালিকা থেকে সৌদি বাদ দেওয়ার জন্যে চাপ থাকা সত্ত্বেও কমিশন রাষ্ট্রটিকে তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানুয়ারিতে সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছিল।

২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খশোগিকে হত্যা করার পর থেকেই রিয়াদ ও ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। তবে এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি সৌদি।

অন্যদিকে, সমালোচকরা বলছেন, ইউরোপের অর্থ পাচার কেলেঙ্কারিতে জড়িত এমন কয়েকটি দেশ এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে।

ইইউর আইনপ্রণেতা সিভেন গিগোল্ড বলেছেন, তালিকাটি থেকে রাশিয়া ও যুক্তরাজ্যের মতো অর্থ পাচার কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকা দেশগুলোর নাম বাদ পড়ে গেছে।

এ ব্যাপারে জোরোভা বলেছেন, তালিকাভুক্ত করা হয়নি এমন অনেক দেশের ওপর নজর রাখা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯
এসএ/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।