ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনি মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭
ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনি মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮ ফিলিস্তিনের এক যুবককে ধরে নিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলের বাহিনী (ছবিটি সংগৃহীত)

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভে ফের গুলি চালানো হয়েছে।

এতে চারজন সাধারণ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী ফিলিস্তিনিদের ওপর পৃথক পৃথক হামলার ঘটনা ঘটেছে।

তাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে-সমাবেশে ইসরায়েলের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাধা দেয় এবং হামলা চালায়। আটক করা হয় বহু মানুষকে।

প্রতিবাদকারীরা পশ্চিম তীরে জড়ো হয়েছিলেন। সেখানেই এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে বলে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৮২ জন; যাদের পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর।

জেরুজালেম ইস্যুতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় এখন পর্যন্ত অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। অনেকে হাসপাতালে ভর্তি।

পবিত্র জেরুজালেম নগরীকে গত ০৬ ডিসেম্বর (বুধবার) ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একতরফা এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার ক্ষেত্রে তিনি জাতিসংঘ, আরব ও মুসলমান-অধ্যুষিত দেশ, এমনকি মার্কিন মিত্রদের আপত্তিও মানেননি। যা তার একগুঁয়েমি সিদ্ধান্ত। ইসরায়েলের তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নেওয়া হবে বলেও ট্রাম্প জানান।

এরপর পুরো মুসলিম বিশ্বে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। প্রতিবাদ জানানো হয় অন্য দেশ থেকেও।

ট্রাম্পের ঘোষণায় উদ্বেগ জানায় মিত্রদেশ যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। উত্তেজনা বাড়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করে চীন। মধ্যপ্রাচ্যের শান্তিপ্রক্রিয়া-বিষয়ক জাতিসংঘের দূত নিকোলে ম্লাদেনোভ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এ বিষয়টির সুরাহা করতে হবে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে। ঘোষণা দিয়ে নয়।

গত ১৩ ডিসেম্বর (বুধবার) তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে ইসলামী দেশগুলোর জোটের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের ওআইসি (ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা) বিশেষ সম্মেলনে যৌথ ঘোষণায় পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানীর ঘোষণা আসে। যা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিপরীতে নেওয়া।

পৃথিবীর অন্যতম পবিত্র নগরীর মর্যাদা রয়েছে জেরুজালেমের। ছোট্ট একটি শহরকে ঘিরে তিন ধর্মের মানুষের আবেগ, স্মৃতি এবং ঐতিহ্য জড়িত। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর শহরও জেরুজালেম। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় থাকা, ‘ওল্ড সিটি’ খ্যাত শহরটি বিভক্ত মুসলিম, ইহুদি, খ্রিস্টান ও আর্মেনীয় বসতিতে। এখানে রয়েছে এসব ধর্মের অনেক পবিত্র স্থাপনা। তাই এই নগরীর পবিত্রতা নিয়ে মতভেদ না থাকলেও নিয়ন্ত্রণের অধিকার নিয়ে আছে নানা বিতর্ক। আছে দফায় দফায় দখল, পুনর্দখল, ধ্বংস আর পুনর্নির্মাণের রক্তক্ষয়ী ইতিহাস। সবচেয়ে বেশি টানাপোড়েন পবিত্র ভূমিকে ঘিরে। চলমান ইসরাইল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের কেন্দ্র এ এলাকায় অবস্থিত ইসলামের তৃতীয় পবিত্র মসজিদ আল আকসা বা বায়তুল মোকাদ্দাসসহ মুসলিমদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

একই জায়গায় অবস্থিত ইহুদিদের পবিত্র ভূমিখ্যাত ‘টেম্পল মাউন্ট’ বা ‘ঈশ্বরের ঘর’। যা ‘কুব্বাত আস সাখরা’ নামে হিসেবে পরিচিত। টেম্পল মাউন্টকে ঘিরে থাকা ‘ওয়েস্টার্ন ওয়াল’ ইহুদিদের কাছে ‘পৃথিবীর ভিত্তিপ্রস্তর’ হিসেবে স্বীকৃত। এখানে নিয়মিত প্রার্থনায় অংশ নেন লাখো ইহুদি।  

যিশু খ্রিস্টের স্মৃতিবিজড়িত গির্জার কারণে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের কাছেও পবিত্রতার দিক থেকে সমান গুরুত্বপূর্ণ জেরুজালেম। খ্রিস্টানদের বিশ্বাস, এখানেই ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল যিশুকে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।