ঢাকা, রবিবার, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের 

আন্তজার্তিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:২৭, জুলাই ১২, ২০২৫
ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের 

দ্রুত বড় হচ্ছে অর্থনৈতিক জোট ব্রিকস। আর ভয় বাড়ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের।

তাই তো তিনি ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার নেতৃত্বে চলা জোটটির পিছে লেগেছেন। মার্কিন ডলারের আধিপত্য ধসিয়ে দেওয়ার জন্য ব্রিকসের চেষ্টা তার চোখে হুমকি।

ব্রিকস নেতারা যখন রিও ডি জেনিরোতে তাদের বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন করছিলেন, তখনই তেতে উঠেছেন ট্রাম্প। জোটটির মার্কিনবিরোধী নীতি সমর্থন করা যেকোনো দেশের ওপর তিনি অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। এর মধ্যেই বেশকিছু দেশকে তাদের নতুন মার্কিন আমদানি শুল্ক সম্পর্কে জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আসলে, বিশ্বের রিজার্ভ মুদ্রা ডলারকে রক্ষা করতে অনড় ট্রাম্প।

ব্রিকসের সদস্য সংখ্যা বেড়ে এখন ১০। ইন্দোনেশিয়া জানুয়ারিতে যোগ দিয়েছে। সৌদি আরবকে সদস্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এ জোটের নয়টি অংশীদার দেশও রয়েছে, এবং আরও কয়েক ডজন দেশ যোগ দিতে চাইছে। জি-সেভেনের বিকল্প হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এ জোট এখন বিশ্ব অর্থনীতির চারভাগের একভাগ এবং বিশ্বের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যার প্রতিনিধিত্ব করে।

ট্রাম্পের এমন চিন্তিত হওয়ার কারণ, ব্রিকস খুব স্পষ্টতই পশ্চিমা-বিরোধী। এ জোটের মূলমন্ত্রে আছে বৈশ্বিক ব্যবস্থা পরিবর্তন করা। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ও শুল্কের কারণে রাশিয়া এবং চীন ডিডলারাইজেশনের নেতৃত্ব দিচ্ছে। দেশদুটো রুবল আর ইউয়ানে জ্বালানি চুক্তির ফয়সালা করছে।

এছাড়া ভারত ২০২৩ সাল থেকে সস্তা রুশ তেলের দাম ইউয়ান, রুবল এমনকি আমিরাত দিরহামেও শোধ করেছে। এভাবে ডলারনির্ভরতা কমাতে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে স্থানীয় মুদ্রায় বাণিজ্যকে উৎসাহিত করতে চাইছে ব্রিকস। তবে অভিন্ন মুদ্রা চালুর ব্যাপারে জোটের দেশগুলোর মধ্যে এখনো ঐক্য হয়নি। চীনের ইউয়ানের আধিপত্য নিয়ে ভারতের উদ্বেগ আছে। ব্রাজিলও ব্রিকস মুদ্রার চেয়ে স্থানীয় মুদ্রা বাণিজ্যকে অগ্রাধিকার দিতে চায়।

বিশ্বের প্রায় ৯০শতাংশ লেনদেনে এবং ৫৯ শতাংশ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ব্যবহৃত হয় ডলার। বিশ্ব বাণিজ্যের বেশিরভাগই এখনো মুদ্রাটি এবং অন্যান্য প্রচলিত মুদ্রা ব্যবহার করে চলে। মুদ্রাটি হটাতে অনেক আয়োজন লাগবে বলে অনেক অর্থনীতিবিদদের ধারণা।

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় অতিষ্ঠ ইরান ও রাশিয়ার মতো দেশগুলো ব্রিকসের ওপর নির্ভর করছে। তারা ব্রিকস পে এবং ব্রিকস ব্রিজ-এর মাধ্যমে তাদের অর্থনীতিকে রক্ষা করতে চায়। পশ্চিমা পেমেন্ট মেসেজিং সিস্টেম সুইফটের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে ব্রিকস পে এবং ব্রিকস ব্রিজ।

সম্প্রতি মিশর, ইথিওপিয়া, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইন্দোনেশিয়া ব্রিকসে যোগ দিয়েছে। এছাড়া আলজেরিয়া ও মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোও এ জোটে যুক্ত হওয়ায় ব্রিকস দ্রুত বড় হচ্ছে। এসব দেশ এমন একটি বহুমুখী বিশ্ব ব্যবস্থা চায় যেখানে পশ্চিমাদের আধিপত্য কম থাকবে। তারা বিশ্বাস করে, বিশ্বমঞ্চে গ্লোবাল সাউথের কণ্ঠস্বরকে আরও জোরালো করবে ব্রিকস।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে

এমএইচডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।