ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০৫ জুন ২০২৫, ০৮ জিলহজ ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ত্রাণের ‘প্রলোভন দেখিয়ে’ ১০২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:১৩, জুন ৩, ২০২৫
ত্রাণের ‘প্রলোভন দেখিয়ে’ ১০২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল

দখলদার ইসরায়েল গত আট দিনে অন্তত ১০২ জন ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে গাজা সরকার। অভিযোগ উঠেছে, ‘ত্রাণের প্রলোভন দেখিয়ে’ তাদের নির্দিষ্ট কেন্দ্রগুলোয় ডেকে নিয়ে সেখানেই নির্বিচারে গুলি চালানো হয়েছে।

এসব হামলায় আহত হয়েছেন আরও শত শত মানুষ।

গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত তথাকথিত ত্রাণ সহায়তা কেন্দ্রগুলোয় বাঁচার আশায় ভিড় করছেন হাজারো ফিলিস্তিনি। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর পর তাদেরই গুলিতে ঝরে পড়ছে প্রাণ। মিডিয়া অফিস একে 'ইচ্ছাকৃত ও পরিকল্পিত গণহত্যা' হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

সর্বশেষ মঙ্গলবার (৩ জুন) দক্ষিণ গাজার রাফায় একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে গুলি চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে অন্তত ২৭ জন নিহত হন এবং আহত হন ৯০ জনের বেশি। এর আগে গত রোববার (১ জুন) দক্ষিণ ও মধ্য গাজার কয়েকটি ত্রাণকেন্দ্রে একই ধরনের হামলায় প্রাণ হারান অন্তত ৩১ জন। আহত হন প্রায় ২০০ জন।

আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৭ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত এক সপ্তাহে গাজার বিভিন্ন ত্রাণকেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১০২ জন নিহত এবং ৪৯০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।

গাজার মিডিয়া অফিস টেলিগ্রামে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানায়, ইসরায়েলি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন রেড জোনে অবস্থিত এই সহায়তা কেন্দ্রগুলো এখন রক্তাক্ত মৃত্যুকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। অবরোধ ও দুর্ভিক্ষের মুখে বেসামরিক মানুষ এসব কেন্দ্রে যাওয়ার চেষ্টা করছে। অথচ সেখানে ঠান্ডা মাথায় গুলি চালানো হচ্ছে। এই কর্মকাণ্ডই এসব তথাকথিত সহায়তা প্রকল্পের আসল উদ্দেশ্য প্রকাশ করে।

এ ঘটনায় জাতিসংঘ, নিরাপত্তা পরিষদ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নীরবতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে গাজার মিডিয়া অফিস। তারা অবিলম্বে ‘দখলদারদের হস্তক্ষেপ ও শর্ত ছাড়াই’ অফিসিয়াল ক্রসিং খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি আগ্রাসনে অন্তত ৫৪ হাজার ৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় সোয়া লাখ মানুষ। মন্ত্রণালয় বলছে, এসব তথাকথিত ত্রাণকেন্দ্র এখন ‘মৃত্যুফাঁদে’ রূপ নিয়েছে। ইসরায়েল নতুন কৌশলে গণহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ডা. মুনির আল-বারশ এক বিবৃতিতে বলেন, গাজার ক্ষুধার্ত ও অসহায় মানুষের ওপর ধারাবাহিক এই হত্যাযজ্ঞে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা গভীর উদ্বেগের।

এদিকে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস নিহতের সর্বশেষ সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ জনের বেশি বলে জানিয়েছে। তারা বলছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা হাজার হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ। অনেককে মৃত বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

এমইউএম/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।