ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

একের পর এক মামলাতেও কমছে না ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০২৩
একের পর এক মামলাতেও কমছে না ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা

আইনি ঝামেলা বাড়লেও, ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য রিপাবলিকান প্রার্থীদের মধ্যে জনপ্রিয়তা কমেনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের। অন্যান্য মনোনয়নপ্রত্যাশীদের চেয়ে তিনি অনেক এগিয়ে।

বরং বলা যায়, ফৌজদারি মামলাগুলোতে অভিযুক্ত হওয়ার পরও যেন তার অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়েছে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত চার মাসে তিনটি মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন।

একবার নিউইয়র্কে একটি অর্থ সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগে, একবার ফেডারেল আদালতে গোপনীয় দলিলপত্র নিজের কাছে রাখা এবং এর তদন্তে বাধা সৃষ্টির অভিযোগে, আর এবার ফেডারেল কোর্টে অভিযুক্ত হয়েছেন আরেকটি মামলায়। যাতে অভিযোগ করা হয়েছে যে, তিনি ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছিলেন।

এছাড়া ট্রাম্প চতুর্থ আরেকটি মামলায় অভিযুক্ত হতে পারেন- সেটি হলো জর্জিয়ায়। এখানে অভিযোগ: ২০২০ সালের নির্বাচনে তার পরাজয়কে উল্টে দিতে তিনি রাজ্য কর্মকর্তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করেছিলেন।

এত কিছুর পরও কিন্তু ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারাভিযান থামেনি। বরং আরও গতি বেড়েছে।

গত ৩১ জুলাই একাধিক জনমত জরিপের এক গড় থেকে দেখা যায়, ডোনাল্ড ট্রাম্প এসব জরিপে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিসান্টিসের চাইতে ৩৭ পয়েন্টের বড় ব্যবধানে এগিয়ে আছেন।

রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে ১৪ জন লড়াই করছেন। কিন্তু তাদের কারোর পক্ষেই, এমনকি ৬ শতাংশ জনসমর্থনও নেই। এদের অর্ধেকেরও বেশি প্রার্থী এমনকি ১ শতাংশ সমর্থনও পাননি।

কিন্তু এ বছর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিও চিত্রটা ছিল ভিন্ন। তখন ট্রাম্প ও ডেসান্টিসের মধ্যে জনসমর্থনের পার্থক্য ছিল মাত্র দুই শতাংশ (যথাক্রমে ৪১ ও ৩৯)।

তারপর থেকে ফ্লোরিডার গভর্নরের সমর্থন ক্রমাগত নিচের দিকে নেমেছে। কিন্তু ট্রাম্পের পক্ষে সমর্থন এখনো পাথরের মতো শক্ত।

এপ্রিলের প্রথম দিকে ট্রাম্প যখন প্রথমবারের মতো অভিযুক্ত হলেন- তারপর থেকে বস্তুত তার পক্ষে সমর্থন বেড়েছে। যদিও ট্রাম্পই হলেন ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হওয়া প্রথম সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

প্রথমবার গ্রেপ্তার হওয়া ও আদালতে হাজিরা দেওয়ার পর থেকে ট্রাম্পই পরিণত হয়েছেন রিপাবলিকান ভোটারদের প্রথম পছন্দে।

ইপসসের শীর্ষস্থানীয় এক কর্মকর্তা ক্লিফোর্ড ইয়ং মনে করেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার সমর্থকদের মধ্যে যে একাত্মতাবোধ- তা ভাঙা কঠিন হবে। রিপাবলিকান ভোটারদের ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশই ট্রাম্পের সমর্থক। তারা ট্রাম্পের চোখ দিয়েই দুনিয়া দেখে।

‘তারা বিশ্বাস করেন ট্রাম্পের প্রতি অন্যায় করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ’

গোপন দলিলপত্র নিজের কাছে রাখার অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যে মামলা- তা নিয়ে বিবিসি কিছু রিপাবলিকান ভোটারের সঙ্গে কথা বলেছে, এবং একই রকম মতামত পেয়েছে।

আরিজোনার ৬১-বছর বয়স্ক ট্রাম্প সমর্থক রন সোলেন বলেন, ‘এটা হচ্ছে ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে না দেওয়ার এক নির্লজ্জ চেষ্টা’।

‘বাইডেনসহ অন্যরাও তাদের কাছে গোপন দলিলপত্র রেখেছেন বলে ধরা পড়েছে। সেদিক থেকে দেখলে এটা আমাদের দেশের জন্য একটা দুঃখের দিন। ’

এমনকি লুক গর্ডনের মতো ট্রাম্প সমর্থক নন এমন রিপাবলিকানও এসব অভিযোগকে সন্দেহের চোখে দেখছেন।

তিনি বলেন, তিনি দাবির বৈধতা নিয়ে সন্দেহ করছেন না বা ট্রাম্পকে সমর্থন করছেন না, কিন্তু এসব মামলা-তদন্তের পেছনের উদ্দেশ্য নিয়ে গভীর উদ্বেগ রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিবিসির অংশীদার হচ্ছে সিবিএস নিউজ। তাদের জুন মাসের এক জনমত জরিপে দেখা যায়-

* রিপাবলিকানদের মধ্যে ভোট দিতে পারেন এমন ৭৬ শতাংশ ভোটার বলেছেন, গোপন দলিলপত্র মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

* এই ভোটারদের ৩৮ শতাংশ মনে করেন ট্রাম্প মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পারমাণবিক বা সামরিক দলিলপত্র রেখে দিলে তা জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ হতে পারে। আর দলীয় বৃত্তের বাইরে মার্কিন জনগণের মধ্যে এমন ধারণা পোষণ করেন ৮০ শতাংশ লোক।

* রিপাবলিকান ভোটারদের ৬১ শতাংশ বলেছেন, ট্রাম্প অভিযুক্ত হওয়ার পরও তার বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়নি। ১৪ শতাংশ বলেছেন তারা এখন ট্রাম্পকে আরও বেশি ইতিবাচকভাবে দেখছেন।

সূত্র- বিবিসি

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০২৩
এমএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।