ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

চীনে ব্লিঙ্কেনের ‘অকপট’ ও ‘গঠনমূলক’ আলোচনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৭ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৩
চীনে ব্লিঙ্কেনের ‘অকপট’ ও ‘গঠনমূলক’ আলোচনা

বেইজিংইয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুই দিনের বৈঠকের শুরুর দিনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ‘অকপট’ ও ‘গঠনমূলক’ আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর।  

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, কূটনীতির প্রয়োজনীয়তা এবং যোগাযোগের গতিপথ খোলা রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন ব্লিঙ্কেন।

  খবর বিবিসি।  

গেল প্রায় পাঁচ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কোনো কূটনীতিক প্রথমবারের মতো চীন সফর করলেন। বছরের শুরুর দিকেই এই সফর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে চীনা বেলুনকাণ্ডে তা স্থগিত হয়ে যায়।

মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, আলোচনার মূল লক্ষ্য হলো চরম উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক স্থিতিশীল করা।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং ব্লিঙ্কেনকে বলেন, বেইজিং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি স্থিতিশীল, অনুমানযোগ্য এবং গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ কথা জানায়।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেন, আলোচনায় তিনি ওয়াশিংটন সফরে সম্মত হয়েছেন।

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরও জানায়, কিন বলেন, তাইওয়ান হলো চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি এবং তিনি তাইওয়ান ইস্যুকে চীনের প্রধান স্বার্থ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

চীন স্ব-শাসিত তাইওয়ানকে একটি বিচ্ছিন্ন প্রদেশ হিসাবে দেখে, যা শেষ পর্যন্ত বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তবে তাইওয়ান নিজস্ব সংবিধান এবং নেতাদের সঙ্গে চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে নিজেকে আলাদা বলে মনে করে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গেল বছর বলেছিলেন, চীনের আক্রমণ থেকে যুক্তরাষ্ট্র চীনকে রক্ষা করবে। এর নিন্দা জানিয়েছিল বেইজিং।

রোববার দিয়াওইউতাই স্টেট গেস্ট হাউজে ব্লিঙ্কেনকে অভ্যর্থনা জানান কিন গ্যাং। এটি একটি বিলাসবহুল ভবন যেখানে সাধারণত সফরকারী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের থাকতে দেওয়া হয়।

এই দুজন তাদের নিজ নিজ পতাকার সামনে দাঁড়িয়ে করমর্দন করেন। পরে লম্বা একটি টেবিলে বসে দুদেশের প্রতিনিধিরা আলোচনা শুরু করেন।

বিবিসির একজন সংবাদদাতা, যিনি আমেরিকান প্রতিনিধি দলের সাথে সফর করছেন, তিনি তাদের এই করমর্দনকে “ব্যবসায়ীদের মতো” বলে বর্ণনা করেছেন।

এই অভিবাদনটি ব্যবসায়ীদের মতো ছিল, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই পরাশক্তির মধ্যে গড়ে ওঠা শীতল সম্পর্কের নির্দেশ করে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই সফর ঘিরে প্রত্যাশা কমিয়েছে এবং উভয় পক্ষই স্পষ্ট করেছে যে, তারা কোনো বড় অগ্রগতির আশা করছে না।
 
ইউক্রেন যুদ্ধ, অত্যাধুনিক কম্পিউটার প্রযুক্তি নিয়ে বাণিজ্য দ্বন্দ্ব, যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিল মাদকের মহামারি এবং মানবাধিকার প্রশ্নের চীনের আচরণ নিয়ে দুই দেশের বৈঠকে আলোচনা হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

চীনা কর্মকর্তারা ব্লিঙ্কেনের সফর নিয়ে শান্তভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এবং প্রশ্ন তুলেছেন, সম্পর্ক মেরামতের  প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্র আসলেই আন্তরিক কি না।

এটি এখনো জানা যায়নি যে, ব্লিঙ্কেন শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন কি না।

২০২১ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে বাইডেন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ব্লিঙ্কেনই সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ নেতা যিনি চীন সফর করলেন।

গেল শুক্রবার ব্লিঙ্কেন সাংবাদিকদের বলেন, যদি আমরা আমাদের মতো করে নিশ্চিত করতে চাই যে, চীনের সঙ্গে আমাদের যে প্রতিযোগিতা যেন সংঘাতের দিকে না যায়, সেক্ষেত্রে যে জায়গাটি থেকে কাজ শুরু করতে হবে, তা হলো যোগাযোগ চালু করা।

পরে তিনি বলেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তিনি প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সঙ্গে দেখা করবেন বলে আশা করছেন।

গত বছরের নভেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং শি জিনপিংয়ের মধ্যে এক সংক্ষিপ্ত বৈঠক হয়। এতে নতুন একটি স্নায়ুযুদ্ধের শঙ্কা কমে যায়। তবে বেলুনকাণ্ডের পর থেকে তাদের মধ্যে যোগাযোগ কমে আসে।

বাংলাদেশ সময়: ০১০০ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৩
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।