ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

ফাইভজি বিকাশে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২১
ফাইভজি বিকাশে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান

ঢাকা: হুয়াওয়ের রোটেটিং চেয়ারম্যান কেন হু’র মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের মাধ্যমে দুবাইয়ে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী হুয়াওয়ের ১২তম বার্ষিক বৈশ্বিক মোবাইল ব্রডব্যান্ড ফোরাম (এমবিবিএফ)।

এই ফোরামের প্রথম দিনে ফাইভজি বিকাশের বর্তমান পর্যায় ও ভবিষ্যতের নতুন সম্ভাবনা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।

হু তার মূল প্রবন্ধে পরবর্তী পর্যায়ের ফাইভজি প্রবৃদ্ধির সুযোগের ক্ষেত্রে তিনটি মূল বিষয়ের উল্লেখ করেন, যার মধ্যে রয়েছে এক্সটেন্ডেড রিয়ালিটি (এক্সআর) সেবা, বিজনেজ টু বিজনেজ (বিটুবি) মার্কেট এবং কার্বন নিঃসরণ হ্রাস।

বর্তমানে, বিশ্বজুড়ে ১৭৬টি বাণিজ্যিক ফাইভজি নেটওয়ার্ক রয়েছে, যার মাধ্যমে ৫০ কোটির বেশি গ্রাহককে সেবাদান করা হচ্ছে। গ্রাহকদের ব্যবহারের ক্ষেত্রে ফাইভজির ডাউনলোড গতি ফোরজির চেয়ে আনুমানিক ১০ গুণ বেশি। এর ফলে ভিআর ও ৩৬০ ডিগ্রি ব্রডকাস্টিং-এর ক্ষেত্রে অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।  

এন্টারপ্রাইজগুলোর ব্যবহারের ক্ষেত্রে, বিশ্বজুড়ে ইতোমধ্যে ১০ হাজার প্রকল্প ফাইভজির বিটুবি অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে কাজ করছে। উৎপাদন, মাইনিং ও বন্দরের মতো শিল্পখাতে ফাইভজি অ্যাপ্লিকেশনের পরীক্ষামূলক ব্যবহার সম্পন্ন হয়েছে এবং বড় পরিসরে ফাইভজি ব্যবহার নিয়ে কাজ চলছে।

ফাইভজির সম্প্রসারণ ধারাবাহিক হলেও এ ক্ষেত্রে উন্নতির এখনও অনেক সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে হু বলেন, এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ফাইভজি টুবি প্রকল্পের অর্ধেকের বেশি চীনেই রয়েছে। আমাদের ইতোমধ্যেই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ‘ইউজ কেস’ রয়েছে। কিন্তু আমাদের আরও বেশি টেকসই বিজনেস কেস তৈরি করা প্রয়োজন।

বৈশ্বিক মহামারির কারণে রূপান্তরিত এই ডিজিটাল নির্ভর বিশ্বে কীভাবে ক্লাউড ও এআই সব প্রতিষ্ঠানের জন্য আবশ্যিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং কীভাবে বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনকে আরও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে, এসব বিষয়সহ ভবিষ্যতে আইসিটি খাতে দীর্ঘমেয়াদে বিস্তৃত পরিবর্তন নিয়ে হু আলোচনা করেন। এ ক্ষেত্রে প্রস্তুত হতে আমরা কিছু বিষয় নিয়ে কাজ করতে পারি।

প্রথমত, এক্সটেন্ডেড প্রবৃদ্ধির জন্য শিল্পখাতকে নেটওয়ার্ক, ডিভাইস ও কনটেন্ট নিয়ে প্রস্তুত হতে হবে। স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক ক্লাউড-ভিত্তিক অভিজ্ঞতার জন্য নেটওয়ার্কের ডাউনলোড স্পিড ৪.৬ গিগাবাইট প্রতি সেকেন্ডের চেয়ে বেশি হওয়া প্রয়োজন, যার ল্যাটেন্সি ১০ মিলিসেকেন্ডের চেয়ে বেশি হবে না।  

হু বলেন, গত বছর হুয়াওয়ে ৫.৫জির জন্য এর লক্ষ্য নির্ধারণ করে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের বিশ্বাস, এ চ্যালেঞ্জগুলো তাতে সমাধান হয়ে যাবে।

ডিভাইসের ক্ষেত্রে, ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি’তে এআর, ভিআর ও এমআর-সহ এক্সটেন্ডেড রিয়েলিটি’র সর্বোচ্চ সেবা পেতে হ্যান্ডসেট ব্যবহারের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে।  

হু বলেন, এ পর্যায়ে পৌঁছাতে হ্যান্ডসেট ও কনটেন্টের উন্নতি করতে হবে। ছোট, হালকা ও সাশ্রয়ী ডিভাইস গ্রাহকরা ব্যবহার করতে চান।

দ্বিতীয়ত, ফাইভজিটুবি’র জন্য প্রস্তুত হতে টেলিকম অপারেটরদের নেটওয়ার্কের মানোন্নয়ন ঘটাতে হবে এবং নতুন সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। শিল্পখাতে ফাইভজি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। তাই অপারেটরদের আপলিংক, পজিশনিং ও সেনসিং-এর মতো নেটওয়ার্ক সমক্ষমতায় উন্নয়ন করতে হবে। শিল্পখাতে সামগ্রিক কাজের ধরণ যেহেতু গ্রাহক পর্যায়ের চেয়ে জটিল, তাই অপারেশন ও ম্যানেজমেন্ট (ওঅ্যান্ডএম) সত্যিকারের চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে।  

এ ক্ষেত্রে হুয়াওয়ে পরিকল্পনা ও নির্মাণ থেকে রক্ষণাবেক্ষণ ও অপ্টিমাইজেশন পর্যন্ত ফাইভজি নেটওয়ার্কের সব ক্ষেত্রে ইন্টেলিজেন্স নিয়ে আসতে অটোনোমাস নেটওয়ার্কের উন্নয়নে কাজ করছে।

কানেক্টিভিটি সেবা প্রদান ছাড়াও অপারেটররা ক্লাউড সেবাদাতা, সিস্টেম ইন্টিগ্রেটর হিসেবে কাজ করতে পারে এবং প্রয়োজনীয় সক্ষমতার উন্নয়ন ঘটাতে পারে। শিল্পখাতে বিস্তৃত পরিসরে ফাইভজি ব্যবহার ত্বরান্বিত করতে খাতসংশ্লিষ্ট টেলিকম স্ট্যান্ডার্ড তৈরি করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, কয়লা খনি, স্টিল ও বৈদ্যুতিক শক্তির মতো খাতে ফাইভজি ব্যবহারে চীনে অপারেটরা শিল্পখাত সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করা শুরু করেছে এবং এ অংশীদারিত্ব এসব খাতে ফাইভজি ব্যবহার বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে।

তৃতীয়ত, এ শিল্পখাতকে সবুজবান্ধব হতে হবে। ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তি বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ অন্তত ১৫ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করতে পারে।  

হু বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে নিঃসরণ কমাতে এবং জ্বালানির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সব শিল্পখাতকে সহায়তা করার সুযোগ আমাদের রয়েছে। অন্যদিকে, আমাদের মেনে নিতে হবে আমাদের খাতের কার্বন ফুটপ্রিন্ট বাড়ছে এবং আমাদের এ অবস্থায় উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ জন্য সক্ষমতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে আমরা সাইটগুলো রিমডেলিং করছি এবং আমাদের ডেটা সেন্টারগুলোতে জ্বালানি ব্যবস্থাপনা উপযোগিতা বৃদ্ধি করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২১ 
এমআইএইচ/জেএইচটি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।