ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

এবার আসছে ‘হাইব্রিড স্যাটেলাইট’

ইসমাইল হোসেন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৯
এবার আসছে ‘হাইব্রিড স্যাটেলাইট’

ঢাকা: বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর সফল উৎক্ষেপণ এবং যোগাযোগকাজে ব্যবহার হওয়ার মধ্যে দ্বিতীয় স্যাটেলাইট কী কী কাজে ব্যবহার করা হবে তা জানতে শিগগরিই পরামর্শক নিয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। 

বহুমুখী ব্যবহারের জন্য দ্বিতীয় এই স্যাটেলাইট হাইব্রিড স্যাটেলাইট হবে বলেই ধারণা বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএসসিএল)।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর বাংলামোটরে সংস্থার কার্যালয়ে টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি)-এর সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানানো হয়।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ যোগাযোগের কাজে ব্যবহার হয় জানিয়ে বিসিএসসিএল’র চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, আমরা দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। আমাদের ধারণা, স্টেক হোল্ডারদের চাহিদা অনুযায়ী এই স্যাটেলাইট হবে হাইব্রিড স্যাটেলাইট।

দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের জন্য স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে সেমিনার করা হয়েছিল জানিয়ে ড. শাহজাহান জানান, আমরা উইস লিস্ট তৈরি করেছি। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে মাত্র ৩০-৪০ শতাংশ ব্যবহার করেছি, আরও বাকি আছে। সুতরাং পরবর্তী স্যাটেলাইট হবে হাউব্রিড স্যাটেলাইট। যেন যোগাযোগ ছাড়াও আবহাওয়ার তথ্য পাওয়াসহ অন্য সেবায় ব্যবহার করতে পারি।

ড. শাহজাহান বলেন, দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের জন্য দ্রুতই কনসালটেন্ট নিয়োগ দেবো। কোন কোন ক্ষেত্রে চাহিদা আছে সেগুলো তারা জরিপ করে জানাবে। আর কোন দেশ থেকে স্যাটেলাইট কেনা হবে সেটা সরকারি সিদ্ধান্ত। অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে কনসালটেন্ট নিয়োগ করা হবে। আশা করি ৩/৪ মাসের মধ্যে মতামত পাবো। আর নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী এই সরকারের আমলেই উৎক্ষেপণ করা হবে।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে অনেক কম খরচে দ্বিতীয় স্যাটেলাইট হবে জানিয়ে ড. শাহজাহান বলেন, আগের স্যাটেলাইটের চেয়ে নতুনটির খরচ কম হবে।

স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মহাকাশে চারটি স্লটের আবেদন করা আছে, তবে ১০২ ও ৭৪ স্লট ভালো হতে পারে। বিটিআরসি থেকে স্লটের ব্যাপারে আইটিইউ’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।  

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের বিভিন্ন দিক নিয়ে শাহজাহান মাহমুদ বলেন, অন্য দেশ এক-দেড় বছরের মধ্যে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করতে পারে না। কিন্তু আমরা এক বছরের মধ্যে কাজে লাগাতে শুরু করেছি। এই স্যাটেলাইট ১৫টি দেশে সেবা দিতে সক্ষম।
 

মতবিনিময় সভা।  ছবি: বাংলানিউজ

তিনি বলেন, আমরা প্রথমত তিন মাস টেলিভিশনগুলোকে ফ্রি সেবা দিয়েছি, ২ অক্টোবর থেকে বিল ধরা শুরু করছি। টেলিভিশনগুলোর জন্য তিনটি রিডানডেন্সি চালু করেছি যাতে কোনো কারণে একটি সংযোগ কাটা পড়লেও বিকল্প পথ থাকে। আরও একটা রিডানডেন্সি তৈরির কাজ করছি।  

একবছরে সবচেয়ে বড় অর্জন ৩৫টি টিভি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সেবায় চলে এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, টিভি চ্যানেলগুলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোসহ পৃথিবীর সব জায়গায় যাতে কাভার করতে পারে সে ব্যাপারে কাজ করছি।

এছাড়াও প্রত্যন্ত অঞ্চলে টেলিমেডিসিন ও টেলি এডুকেশনে কাজ করছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। আজকে টেলি মেডিসিনের মাধ্যমে ভোলার চর নিউরির একজন প্রসূতি মা ঢাকার বঙ্গবন্ধু হাসপাতালের ডাক্তারকে দেখাতে পারছে। এটা নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেক খুশি। ভি-স্যাট সুবিধার মাধ্যমে একটি ব্যাংকেও সেবার আওতায় আনা হচ্ছে।

স্যাটেলাইট সেবার জন্য ভারত বড় বাজার জানিয়ে চেয়ার‌ম্যান বলেন, বিটিআরসি এ বিষয়ে যোগাযোগ করবে। আমরা অভ্যন্তরীণ বাজারকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করছি, যে পরিমাণ ধারণা করছিলাম তার থেকে চাহিদা বেশি।

যোগাযোগ এই স্যাটেলাইটের প্রেক্ষিত তুলে ধরে বিসিএসসিএল চেয়ারম্যান বলেন, ভূমিকম্পে দুর্যোগের সময় নেপালে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বাংলাদেশে যদি এরকম যোকোনো দুর্যোগ হয় তাহলে সব জায়গায় যোগাযোগ করা সম্ভব হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ব্যান্ডউইথ ফাইবার অপটিকের চেয়ে দাম অনেকে বেশি। যদি আমরা কম দামে দিতে পারতাম তাহলে বেশ ভালো হতো।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিটিএইচ সেবার জন্য সামিট কমিউনিকেশনকে ফ্রি সেবা দেওয়ার কথা অপপ্রচার, তারা আমাদের সবচেয়ে বড় গ্রাহক। সমস্ত টেলিভিশন থেকে যত টাকা পাই তার প্রায় কাছাকাছি পাই তাদের কাছে।

মতবিনিময়ের সময় উপস্থিত ছিলেন- বিসিএসসিএল’র জেনারেল ম্যানেজার শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী, সহকারী জেনারেল ম্যানেজার বখতিয়ার আহমেদ, টিআরএনবি সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল আনোয়ার শিপু প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৯
এমআইএইচ/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।