ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

ডিজিটাল নিরাপত্তায় সচেতনতাই প্রথম রক্ষাকবচ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৮ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৯
ডিজিটাল নিরাপত্তায় সচেতনতাই প্রথম রক্ষাকবচ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, ফাইল ফটো

ঢাকা: ‘সাইবার জগতসহ পুরো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের নিরাপত্তায় সচেতনতাই হচ্ছে প্রথম এবং সর্বোচ্চ রক্ষাকবচ। ডিজিটাল প্রযুক্তির সচেতন এবং দায়িত্বশীল ব্যবহার করা গেলে সাইবার ক্রাইম মোকাবিলা করা যাবে অন্য যেকোন মাধ্যমের থেকে বেশি। আর ইন্টারনেটসহ সাইবার ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার এবং সেবা গ্রহণ হবে নিরাপদ।’

শনিবার (২৫ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা এবং করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় এমন মতামত দেন সাইবার বিশেষজ্ঞ এবং দেশীয় তথ্যপ্রযুক্তি খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সি এই কর্মশালার আয়োজন করে।

কর্মশালায় দেশের সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা ও অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ গণমাধ্যমকর্মীরা অংশ নেন।

কর্মশালায় মূল্য প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য ড. মুহম্মদ মাহফুজুল ইসলাম। উপস্থাপনায় তিনি বলেন, একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, কোনো কম্পিউটার সিস্টেমে যে সাইবার হামলা হয়, তার মাত্র ৪০ শতাংশ এক্সটার্নালভাবে (বাহ্যিকভাবে) হয়। আর বাকি ৬০ শতাংশই হয় ইন্টার্নাল (অভ্যন্তরীণ) কারণে। দেখা যায়, একজন ব্যবহারকারী নিজের অজান্তেই এমন কিছু কাজ করেন, যার জন্য পুরো নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ে। তাই আমাদের সাবধানতা এবং সচেতনতার সঙ্গে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম বিশেষ করে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হবে।

স্মার্টফোনের কারণে আমাদের সাইবার নিরাপত্তা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে উল্লেখ করে ড. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, আমাদের নানাবিধ সংবেদনশীল তথ্য স্মার্টফোনে থাকে। কিন্তু এই স্মার্টফোনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাই খুব নাজুক। আমরা স্মার্টফোন লক করতে সাধারণত যেসব পদক্ষেপ নেই, যেমন প্যাটার্ন লক, পাস কোড বা ফিঙারপ্রিন্ট লক; এগুলো খুব সহজেই হ্যাক করা যায়। তাই এ বিষয়ে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে এবং নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ভাবতে হবে। এখন বায়োমেট্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে গবেষণা চলছে। শুধু চলতি ২০১৯ সালেই বায়োমেট্রিক নিরাপত্তা গবেষণার জন্য সারা বিশ্বে বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় ২০ দশমিক ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

অন্যদিকে, ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য আইপিভি-৪ এর বদলে আইপিভি-৬ (ইন্টারনেট প্রটোকল-৬) সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে ব্যবহার নিশ্চিতে উদ্যোগ নেওয়া এবং ‘প্যারেন্টাল স্কিম’ চালুর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি আমিনুল হাকিম।

কর্মশালায় উঠে আসা বিভিন্ন প্রস্তাবনা ও সুপারিশ বিবেচনার আশ্বাস দেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ইন্টারনেট নিরাপদ রাখা আমাদের দায়িত্ব। যদি না পারি তাহলে এটা আমাদের জন্য অপরাধ হবে যে, আমরা আমাদের তরুণ প্রজন্মকে ঝুকিপূর্ণ একটি জায়গায় যেতে দিচ্ছি। এর মানে এই না যে, তাদের ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন রাখবো। বরং তাদের ইন্টারনেটের সঙ্গে রেখেই এটা নিরাপদ রাখতে হবে। এ লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এনএম জিয়াউল আলমের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সদস্য অপরাজিতা হক, বিভাগের যুগ্ম সচিব খায়রুল আমীন, ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর, আইন ও সংসদ বিষয়ক সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হকসহ অন্যান্যরা।

কর্মশালার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক রাশেদুল ইসলাম।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৪ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৯
এসএইচএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।