ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

দেশে প্রথমবারের মতো ডেটাথনের আয়োজনে রবি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৯
দেশে প্রথমবারের মতো ডেটাথনের আয়োজনে রবি ডেটাথন প্রতিযোগিতার বিজয়ীরা

ঢাকা: ডেটা সায়েন্স ও মেশিন লার্নিংয়ে দক্ষতা ও প্রতিভা বিকাশের লক্ষ্যে আয়োজিত দেশের প্রথম ডেটাথন প্রতিযোগিতা সফলভাবে শেষ হয়েছে। ২৪ ঘণ্টাব্যাপী এই ডেটাথন প্রতিযোগিতায় ডেটা বিজ্ঞানী ও ডেটা প্রকৌশলী মিলে মোট ৮৪ জন প্রতিযোগী ২১টি দলে বিভক্ত হয়ে অংশ নেন। দেশের শীর্ষ ডিজিটাল সেবাপ্রদানকারী কোম্পানি রবি এ আয়োজন করে।

ডেটাথনের আয়োজনে রবির পার্টনার হিসেবে ছিলো গুগল এবং কারিগরি সহায়তায় আজিয়াটা অ্যানালিটিকস।

গত ১৯ ও ২০ এপ্রিল দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতাটি শনিবার (২০ এপ্রিল) পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

রাজধানীর একটি হোটেলে এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন রবি’র হেড অব কর্পোরেট স্ট্র্যাটেজি রুহুল আমিন। এ সময় রবি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত বিচারকরা ইন্সটিঙ্কট দলকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করেন। এ দলের সদস্য হিসেবে ছিলেন আবু মোহাম্মদ সাব্বির খান, ইশফাক জামান, নুরেন শামস ও শরিফুল ইসলাম ফয়সাল। ডেটাথনে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে বেস্ট ফিটেড এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে আউটলায়ারস দল।

অন্যদিকে, দেশে আয়োজিত প্রথম ডেটাথনে সেরা ডেটা বিজ্ঞানী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ইশফাক জামান ও নুরেন শামস এবং সেরা ডেটা প্রকৌশলী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মো. কাইফ হোসেন ও পরিমল চন্দ্র।

বিজয়ী দল পুরস্কার হিসেবে পেয়েছে দুই লাখ টাকা, দ্বিতীয় স্থান অধিকারী দল পেয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় স্থান অধিকারী দল পেয়েছে এক লাখ টাকা। দুই জন সেরা ডেটা বিজ্ঞানী ও দুইজন সেরা ডেটা প্রকৌশলী প্রত্যেকে পেয়েছেন এক লাখ করে টাকা। প্রতিযোগিতায় মোট ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার হিসেবে বিতরণ করা হয়।

চূড়ান্ত পর্বের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন টিএম ফোরাম’র অ্যাম্বাসেডর ফর বিগ ডেটা এনালিটিকস অ্যান্ড কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স অধ্যাপক পল মরিসন, রবি’র হেড অব আইটি আসিফ নাইমুর রশিদ, বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের অধ্যাপক ড. এম. সোহেল রহমান এবং হেড অব আজিয়াটা এনালিটিকস পেড্রো উরিয়া রেসিও।

সেমি-ফাইনাল পর্বের বিচারক হিসেবে ছিলেন বুয়েটের সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আতিফ হাসান রহমান ও মো. শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া, আজিয়াটা’র চিফ ডেটা সায়েন্টিস্ট ড. কিরাতপাল সিং, এশিয়া স্কুল অব বিজনেস’র অধ্যাপক উইলেম স্মিত, রবি’র এন্টাপ্রাইজ বিজনেস ইন্টেলিজেন্স’র ভাইস প্রেসিডেন্ট হাসিব মুসতাবসির এবং রিসোর্সিংয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট জাভেদ পারভেজ।

ডেটাথন প্রতিযোগিতায় অংশগহণের জন্য নিবন্ধন শুরু হয় গত ২৫ মার্চ। এরপর আজিয়াটা এনালিটিকস’র দেয়া নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করে মূল্যায়নের জন্য নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন আগ্রহী প্রার্থীরা। মূল্যায়ন প্রশ্নোত্তরের ওপর ভিত্তি করে চূড়ান্তপর্বে অংশগ্রহণের জন্য ৮৪ জন প্রতিযোগীকে নির্বাচন করা হয়।

এরপর আয়োজকরা বাছাইকৃত প্রার্থীদের তালিকা থেকে চারজন করে এক একটি দল গঠন করেন। চূড়ান্তপর্বে মোট ২১টি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের ডেটা সায়েন্স সম্পর্কিত নানা সমস্যার সমাধান করতে বলা হয়। এরপর নির্ধারিত কয়েকটি মাপকাঠির ওপর ভিত্তি করে প্রতিটি দলের যোগ্যতা যাচাই করেন বিচারকরা।

অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন প্রতি মুহূর্তে যে পরিমাণ ডেটা তৈরি হচ্ছে তাতে আমাদের সামনে দুটি পথ খোলা আছে; হয় আমরা অন্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবো অথবা ডেটার শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করবো। আমাদের জন্য ইতিবাচক দিক হচ্ছে দ্বিতীয় পথ বেছে নেয়ার জন্য আমাদের যথেষ্ট জনশক্তি আছে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দেশে ১ হাজার ডেটা সায়েন্টিস্ট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের। এসময় রবি ডেটাথনের মতো উদ্যোগ হাতে নিয়ে আমাদের কাজকে আরো সহজ করে দিয়েছে।

রবি’র সিইও বলেন, ডিজিটাল অর্থনীতির চালিকা শক্তি হচ্ছেন ডেটা বিজ্ঞানী ও ডেটা প্রকৌশলীরা। তারা সেই ব্যক্তি যারা কোন প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নেয়ার জন্য ডেটাকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যে রূপান্তর করেন। সরকারি নীতিনির্ধারণেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে সহায়তা করেন তারা। তাই দেশে প্রথমবারের মতো ডেটাথন আয়োজন করতে পেরে আমরা গর্বিত। আমি বিশ্বাস করি, এই আয়োজনের মাধ্যমে দেশে ডেটা বিজ্ঞানী ও ডেটা প্রকৌশলীদের একটি কমিউনিটি গড়ে উঠবে যারা ডিজিটাল বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে নিতে সহায়তা এবং তাদের মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে বিশ্ব দরবারে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করবেন।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৯
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।