ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

বিটিআরসি’র গাফিলতিতে মূসক ছাড়াই এক হলো রবি-এয়ারটেল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৭
বিটিআরসি’র গাফিলতিতে মূসক ছাড়াই এক হলো রবি-এয়ারটেল

ঢাকা: বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) গাফিলতিতে মূসক পরিশোধ ছাড়াই এক হয়েছে রবি আজিয়াটা লিমিটেড ও এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেড। একীভূতকরণ ফি’র ওপর ১৫ শতাংশ মূসক (মূল্য সংযোজন কর) বিটিআরসি’কে পরিশোধ না করেই প্রতিষ্ঠান দু’টি সংযুক্ত হয়েছে।
 
 

অন্যদিকে, রবি-এয়ারটেল একীভূতকরণ বাবদ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) মূসক পরিশোধ না করায় সম্প্রতি বিটিআরসি’র বিরুদ্ধে মামলা করেছে এনবিআর’র বৃহৎ করদাতা ইউনিট।
 
এনবিআর’র বৃহৎ করদাতা ইউনিট বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।


 
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, এয়ারটেল’র অনুকূলে বরাদ্দকৃত টু-জি স্পেকট্রামের ক্ষেত্রে ২০১১ সালে সর্বশেষ টু-জি লাইসেন্স ও তরঙ্গ নবায়ন বাবদ ৫০৭ কোটি টাকা একীভূতকরণ ফি বিটিআরসি’তে জমা দেয়ার কথা কোম্পানির। এছাড়া রবি ও এয়ারটেল এক হতে ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য ফি বাবদ এক হওয়া কোম্পানিকে আরো একশ’ কোটি টাকা জমা দিতে হবে।
 
সবমিলিয়ে রবি-এয়ারটেল এক হতে ৬০৭ কোটি টাকার সঙ্গে মূসক ফি বাবদ আরো প্রায় একশ’ কোটি টাকা (১৫ শতাংশ মূসক হিসেবে ৯১ কোটি পাঁচ লাখ টাকা) পরিশোধ করে বিটিআরসি থেকে একীভূতকরণ লাইসেন্স নিতে হতো। কিন্তু মূসক আদায় না করেই বিটিআরসি তাদের (রবি-এয়ারটেল) এক হওয়ার লাইসেন্স দিয়েছে। এতে বিটিআরসি’র কাছে রবি-এয়ারটেল একীভূতকরণ ফি বাবদ ৯১ কোটি ৫ লাখ টাকা পায় এনবিআর। ফি পরিশোধ করতে এনবিআর’র পক্ষ থেকে কয়েকবার বার্তা পাঠালেও সাড়া দেয়নি বিটিআরসি। শেষে বাধ্য হয়ে বিটিআরসি’র বিরুদ্ধে মামলা করেছে বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ)।
 
এ বিষয়ে এলটিইউ সূত্র জানায়, বিটিআরসি’র গাফিলতিতে ফি না দিয়েই রবি-এয়ারটেল এক হয়েছে। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, আইনে বলা আছে, যদি কোনো প্রতিষ্ঠান একীভূত হতে চায়, সেক্ষেত্রে একীভূতকরণ ফি এবং ফি’র ওপর প্রযোজ্য মূসক পরিশোধ করলেই শুধুমাত্র একীভূতকরণ লাইসেন্স মিলবে। কিন্তু রবি-এয়ারটেল মূসক পরিশোধ না করলেও বিটিআরসি তাদের লাইসেন্স দেয়ায় বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ জন্মেছে। আর এতে বিটিআরসি’র গাফিলতিই প্রতীয়মান হচ্ছে।
  
আরো জানা গেছে, রবি-এয়ারটেল একীভূতকরণ মূসক বাবদ ৯১ কোটি পাঁচ লাখ টাকা বিটিআরসি’কে পরিশোধ না করায় বিটিআরসিও এই মূসক এনবিআরকে পরিশোধ করেনি। এজন্য বিটিআরসি’র নামে মামলাটি করা হয়েছে। দ্রুত বিটিআরসি ওই রাজস্ব একীভূতকরণ কোম্পানি থেকে আদায় করে সরকারের কোষাগারে জমা না দিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।  
 
মূসক পরিশোধের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সচিব মো. সরওয়ার আলম বাংলানিউজকে বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এনবিআর’র মামলার কাগজও আমরা পাইনি। কাগজপত্র পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।
 
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, রবি-এয়ারটেল এক হওয়া বাবদ বিটিআরসি’র কাছে এনবিআর’র যে মূসক পাওনা আছে তা তারা এখনো পরিশোধ করেনি। এ নিয়ে চিঠি দিয়েও কোনো সাড়া মেলেনি। যা একেবারেই আইনসম্মত নয়। বিটিআরসি’র গাফিলতিতে মূসক পরিশোধ না করেই এক হয়েছে রবি-এয়ারটেল। নির্ধারিত মূসক পরিশোধ না করায় বিটিআরসি’র নামে মামলা করা হয়েছে।
 
বিটিআরসি অবিলম্বে বকেয়া পরিশোধ না করলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭,২০১৭
এসজে/জেডএস/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।